শবনম এতক্ষণ বেশ মজা নিয়েই এসব উপভোগ করছিল কিন্তু এখন যেই শুনতে পেল ওর বর দাঁড়িয়ে আছে বাহিরে ওর জন্য, এখন ওকে যেতে হবে তার কাছে। তখনই ভেতরে কেমন এক চাপা উত্তেজনা কাজ করতে শুরু হল এই স্বামী নামক মানুষটাকে দেখার জন্য। এখনও দেখেনি মানুষটা কেমন, জানেও না তার আচার-আচরণ সম্পর্কে। অথচ বাবা মা কীভাবে হাত পা বেঁধে উঠিয়ে দিল পালকিতে। বাড়ি থেকে বের করে দিল সারা জীবনের জন্য। ওই বাড়ি থেকে এই পর্যন্ত যতজন মেয়ে ওই পালকিতে চড়ে বের হয়েছে তারা আর কেউ কোনো দিন ফেরেনি আপনালয়ে। যে যায় সে মনে হয় সব বাঁধন ছিন্ন করেই যায়। কিন্তু শবনম তো কারো সাথে কোন বাঁধনই ছিন্ন করে আসেনি, তবে কী ও আর কখনও ফিরতে পারবে ওর নিজের আপনালয়ে? এসব আবোলতাবোলই ভাবছিল আর তখনই একজন এসে ওর হাত ধরে টেনে ঘর থেকে বের করে নিল। শবনম একবার মুখ ফোটে বলতে চেয়েছিল “আস্তে টানেন আমি তো শাড়িতে পা বাজাইয়া পইড়া যামু।” কিন্তু না, কেন জানি কিছুই বলতে পারল না। তার আগেই দুলাল এসে পাশে দাঁড়াল “ভাবি সাব আর কষ্ট করতে হইব না, অহন আমি পারমু। আহো শবনম, আহো। তুমি আমার পিছন পিছন আহো। বলেই কুপিটা এগিয়ে ধরে পথ দেখাতে লাগল।শবনম কী বলবে তা বুঝতে পারল না, শুধু চুপচাপ দুলালের পেছন পেছন হেঁটে এগিয়ে গেল নিজের ঘরে…….. এরপর কী ঘটেছিল শবনমের জীবনে? দুলাল কী ওর পুরো জীবনটাতেই আলো জ্বেলে পথ দেখাতে পেরেছিল এই কিশোরী মেয়েটিকে ? না কি……..
সায়লা সুলতানা লাকী ১৯৭৬ সালের ২৬শে আগষ্ট, ঢাকায় জন্ম গ্রহন করেন। লেখিকার গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার ধাইদা গ্রামে ছিল যা এখন নদী গহ্বরে বিলীন হয়ে গেছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনিই সবার বড়। বাবা আব্দুল লতিফ চাকলাদার সরকারি চাকরিজীবি ছিলেন। সেই সুবাদে ময়মনসিংহেও কেটেছে জীবনের কিছুটা সময়। মা মরহুমা শামসুন্নাহার নিহার ছিলেন খুবই শিল্পীমনা একজন মানুষ। তাঁর কাছ থেকেই গল্পের বই পড়ার অভ্যাস তৈরি হয় লেখিকার। পড়াশোনা তাঁর খুব ভালো লাগে। শিক্ষা জীবনে প্রানিবিদ্যায় বিএসসি (অনার্স) ও এমএসসি (ফিশারিজ) সম্পন্ন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগ হতে ফিশারিজে এম ফিল ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।