ফ্ল্যাপে লেখা কথা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদের নাম জামালপুর। ব্রহ্মপুত্র নদীর উত্তরে পাহাড়জঙ্গল বেষ্টিত উঁচু-নিচু ভূমির একাংশ কামরুপ এবং দক্ষিণে সিংহজানি ছিল পৌণ্ড্র রাজ্যের অর্ন্তভূক্ত । যমুনা ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গাগড়ায় কাদামাটি জমে এখানে চাষযোগ্য সমতল ভূমি জেগে ওঠে। কারক্রমে বিভিন্ন জনগোষ্ঠি এখানে ডবসতি স্থাপন করে। প্রাচীন কামরূপের একাংশ এবং গড় সিংহজানি এলাকা মোঘল ও পাঠান আমলে পাতিলাদহ পরগনার অন্তর্ভূক্ত ছিল। এই পাতিলাদহ পরগনার উত্তর-পূর্ব অংশই আজকের জামালপুর। ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ভৌগলিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করে ব্রিটিশ সরকার ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর মহকুমাকে জেলা ঘোষনা করা হয়। হযরত শাহ জামাল (রহ:) এর স্মৃতি বিজড়িত জামালপুর জেলার একটি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস থাকার প্রয়োজন। কারণ নিজ জেলা ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে যেমন জানা দরকার তেমনি দেশের মানুষকেও জানানোর প্রয়োজন অনুভব করি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহের জন্য জামালপুর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্রমণ করেছি। আশা করি এই গ্রন্থ আপাত পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসের মর্যাদা পাবে।
সূচিপত্র * জামালপুর জেলার মানচিত্র * ৭টি উপজেলার মানচিত্র * প্রথম অধ্যায়: উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ * দ্বিতীয় অধ্যায়: অর্থনীতি * তৃতীয় অধ্যায়: ক্রীড়া * চতুর্থ অধ্যায়: শিক্ষা ব্যবস্থা * পঞ্চম অধ্যায়: শিল্প সাহিত্য * ষষ্ঠ অধ্যায়: জামালপুর জেলার পাবলিক মেলা ও কৃষক বিদ্রোহ * সপ্তম অধ্যায়: ১৯৪৭ পূর্ব প্রতিরোধ -ঐতিহ্য * অষ্টম অধ্যায়: জামালপুরের রাজনীতি * নবম অধ্যায়: উপজেলার মানচিত্র * দশম অধ্যায়: ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান * একাদশ অধ্যায়: প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও দুর্ভিক্ষ * দ্বাদশ অধ্যায়: ইসলাম প্রচার * ত্রয়োদশ অধ্যায়: ভাষা আন্দোলন * চতুর্দশ অধ্যায়: মুক্তিযুদ্ধ * পঞ্চদশ অধ্যায়: কৃতী মানুষ * ষোড়শ অধ্যায়: লোক-সংস্কৃতি * সপ্তদশ অধ্যায়: আদিবাসী সমাজ -সংস্কৃতি * অষ্টাদশ অধ্যায়: জামালপুরের পাখি ,জলাশয় ও পরিবেশ * সহায়ক গ্রন্থ * জামালপুর জেলার বিভিন্ন আলোকচিত্র
রজব বকশীর জন্ম ১৯৬৫ সালের ১ অক্টোবর জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ। পিতা হায়দার আলী ও মাতা অজিফা খাতুন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাতেখড়ি। ১৯৮০ সালে এসএসসি বকশীগঞ্জ নুর মােহাম্মদ হাইস্কুল, ১৯৮২ সালে এইচএসসি বকশীগঞ্জ সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ। ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালে যথাক্রমে বি.কম (অনার্স) ও এম.কম ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ১৯৯২ সালে দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি এবং ১৯৯৩ সালে সাপ্তাহিক দশ কাহনীয়ার জেলা প্রতিনিধি হিসাবে। সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। ১৯৯৬ সালে বকশীগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ। সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে বকশীঞ্জ জেলা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে বকশীগঞ্জ খাতেমুন মঈন মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। রজব বকশী ছােটবেলা থেকেই লেখালেখি করেন। মূলত আশির দশক থেকে তার ছড়া, কবিতা, ছােটগল্প ও প্রবন্ধ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হতে থাকে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। জামালপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস ঐতিহ্য এবং লােক সংস্কৃতির উপর দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। ২০১০ সালে জামালপুর গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধ কালে সংঘটিত কামালপুরের সম্মুখ সমরের ইতিহাস লেখা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ৪ মার্চ ২০১১ সালে জামালপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন জামালপুরবাসীর। অভিনন্দন এবং বকশীগঞ্জ সাহিত্য পরিষদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তথ্য এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী কর্তৃক সম্মাননা পদক।