ভূমিকা বাংলার অন্যান্য স্থানের তুলনায় বয়সে নবীন হওয়া সত্ত্বেও প্রাচীনকাল থেকেই বর্তমানের বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের পরিচিতি ছিল ব্যাপক। মহাভারতের ঐতরেয় পর্বেও েএই ভূখন্ডের কথা উল্লেখিত হয়েছে। যদিও সেই পরিচিতিতে এই অঞ্চলকে পাণ্ডববর্জিত এবং বর্জনীয় বলা হয়েছে, তারপরেও সাগরঘেঁষা নিম্ন এই এলাকায় বসতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে একটা কোনো এক আদিম জনগোষ্ঠী বসতি স্থাপনে আগ্রহী হয়েছিলো। বং- লা অর্থ্যাৎ বং মানে নিম্নজলাভূমি আর লা মানে আসো এই স্লোগান তুলে পথ চলা শুরু করেছিলো। আদি পর্বের সেই জনগোষ্ঠীর তেমন কোনো চিহৃ পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে তাদের উত্তরসূরিদের সদম্ভ পদচারণা বহু নিদর্শন বংলা বা দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় অদ্যাবদি বিদ্যমান। তাদের সেই কর্মকাণ্ড এবং সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা প্রতিফলিত হয়েছে একদার বাকলা -চন্দ্রপ্রদীপ অর্থ্যাৎ বর্তমানের বৃহত্তর বরিশালের প্রাচীন নিদর্শন সমূহে। যদিও অতীতের সেই চিত্র নিখুঁতভাবে তুলে ধরা কোনো ক্রমেই সম্ভব নয়, তারপরেও মহান ঐতিহ্য ধারণ করা নিদর্শনসমূহের সাথে বর্তমান প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এই গ্রন্থটি রচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকার প্রতিকূলাতাকে অতিক্রম করে যে সকল ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পৃক্ত নিদর্শন এখন পর্যন্ত টিকে রয়েছে, শুধু মাত্র সেই সকল স্থাবর নিদর্শনগুলির পরিচ এই গ্রন্থে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া উল্লেখ্য যে , এই পরিচিতি বিন্যাসে কোনো ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়নি। প্রাচীন বাকলা -চন্দ্রপ্রদীপ অর্থ্যাৎ বৃহত্তর বরিশাল বিভিন্ন অংশ রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন নামে পরিচিতি হয়েছে, কর্তমান পরিচিতির আলোকেই এই ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহের পরিচিতি স্থাপন করা হয়েছে। এই ধরনের গ্রন্থ রচনায় কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি থাকা অসম্ভব নয়, এরূপ ক্ষেত্রে যে কোন তথ্য বিভ্রান্তি ,অসঙ্গতি কিংবা কোনো সংযোজনের প্রয়োজনে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ উপস্থাপন করা হয়ে পরবর্তীতে সংশোধন এবং সংযোজন করার নিশ্চয়তা দেয়া হলো। এই গ্রন্থে ব্যবহৃত চিত্রসমূহের নান্দনিক মূল্য উপেক্ষা করে প্রামাণিক মূল্য বিবেচনার কথা কলা হলো। বরিশালের তরুণ কবি নিজাম হাওলাদার তার ব্যক্তিগত কাজকর্ম উপেক্ষা করে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, শুকনো ধন্যবাদ প্রকাশে সেই ঋণ শোধ হওয়ার নয়, তাই শুধুমাত্র তার ঋণ স্বীকার করা হলো। কবি শামীম রসুল প্রুফ দেখার মতো ক্লান্তিকর কাজ হাসিমুখে করে দিয়ে কৃতজ্ঞা বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক ড. মুহম্মদ মুহসিন এই গ্রন্থ রচনার শুরু থেকেই ছিলেন একাত্ন, এছাড়া অধ্যাপক আলমগীর হাই এবং বন্ধুবর মুকুল দাসসহ বিভিন্ন সহায়তায় আরো যারা ছিলেন অকুন্ঠিত , সবাইকে স্মরণ করা হলো। সহধর্মিণি ডা.আরজুমান্দ আকতারের সার্বক্ষণিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করা না হলে তার প্রতি অবিচার করা হবে। সাইফুল আহসান বুলবুল ব্রাউন কম্পিউন্ড বরিশাল
বরিশালের এক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবারে ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক পরিবেশেই তাকে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে আগ্রহী করে তুলেছে। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন কারাবরণ করেন। কারামুক্তির পর রাজনীতি থেকে দূরে সরে আসেন। কর্মজীবনে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ২০০৪ সাল থেকে নিয়মিত সম্পাদনা করে আসছেন লিটল ম্যাগাজিন ‘প্রতিকাশ’। যৌথভাবে সম্পাদনা করছেন সাহিত্যের কাগজ ‘আলোকপত্র’।