ছোটগল্প আর কবিতা, উপন্যাস আর নাটক, প্রবন্ধ আর সমালোচনা, পত্রিকা সম্পাদনা আর গ্রন্থ সম্পাদনা- একসঙ্গে অনেকরকম কাজ করে গেছেন আবদুল মান্নান সৈয়দ। তাঁর প্রধান পরিচয় কী- এ বিষয়ে নানা মুনির নানা মত। তিনি সেসব দিকে কান না- দিয়ে নিজে স্বেচ্ছাচারী শিল্পঘূর্ণিস্রোতে ভেসে চলেছেন। ছোটগল্প রচনাও বিরতি পড়েনি কখনো। ঠিক কতগুলো গল্প লিখেছেন মান্নান সৈয়দ, তার কোনো হিশেব নেই। গোটা দশেক গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এতাবৎকালে। তাঁর সাম্প্রতিকতম এই গল্পগ্রন্থে মান্নান সৈয়দ নতুনতর রূপে উপস্থিত হয়েছেন। এই গ্রন্থের কোনো কোনো গল্প পত্রিকায় প্রকাশকালেই চাঞ্চল্য জাগিয়েছিল।
আবদুল মান্নান সৈয়দ তাঁর বিচিত্র সাহিত্যশিল্পকর্মের মধ্যে গত পঞ্চাশ বছর ধরে ছোটগল্পও লিখে গেছেন। পাকিস্তান আমলে তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ- সত্যের মতো বদশাশ বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে পুনর্মুক্ত হয় বইটি-১৯৭২ সালে।
মান্নান সৈয়দের ছোটগল্প ক্রমাগত মোড় ঘুরে ঘুরে অগ্রসর হয়ে চলেছে তাঁর বিজন ও বর্ণাঢ্য জীবনযানের সঙ্গে তার মিলিয়ে, নাকি বলব পাল্লা দিয়ে।
জীবনে যেমন সাহিত্যযাত্রায়ও তেমনি তিনি কখনো এক জায়গায় থাকেননি। গত কয়েক বছর অঝোরে প্রেমের কবিতা লিখে গেছেন (যা কয়েকটি গ্রন্থে সংস্থিত হয়েছে ইতোমধ্যে), দেখা দিয়েছে অভিনব পত্রাকার প্রবন্ধাবলি-আর সেই সঙ্গে একগুচ্ছ প্রেমের গল্প। এই প্রেমের গল্পেরই নির্বাচিত চয়নিকা এই কেন আসিলে ভালোবাসিলে।
সূচিপত্র * ভূমিকম্পের পর * বিদ্যা-সুন্দর কাহিনী * পৌষের একটি গল্প * গৃহদাহ ২০০৭ * গোলকধাঁধা * বিদায়-সংবর্ধনা * কেন আসিলে ভালোবাসিলে
আবদুল মান্নান সৈয়দ (৩ আগস্ট ১৯৪৩ - ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০) বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাহিত্য-সম্পাদক। তিনি ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের "পোয়েট ইন রেসিডেন্স" ছিলেন। বিংশ শতাব্দীর ষাট দশক থেকে বাংলা সমালোচনা-সাহিত্যে তার গবেষণাধর্মী অবদান ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। কাজী নজরুল ইসলাম ও জীবনানন্দ দাশের উপর তার উল্লেখযোগ্য গবেষণা কর্ম রয়েছে। তিনি ফররুখ আহমদ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিষ্ণু দে, সমর সেন, বেগম রোকেয়া, আবদুল গনি হাজারী, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, প্রবোধচন্দ্র সেন প্রমুখ কবি-সাহিত্যিক-সম্পাদককে নিয়ে গবেষণা করেছেন। বাংলাদেশের সাহিত্যমহলে তিনি 'মান্নান সৈয়দ' নামেই পরিচিত ছিলেন।