সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা এক ছেলে আমি। ছাত্র জীবনে মেসে থেকে, ছাত্র পড়িয়ে, বিভিন্ন রকমের সাময়িক চাকুরি করে অনেক চড়াই উতরাই অতিক্রম করে কেটে গেছে আমার শৈশব ও কৈশোর।
ইচ্ছে ছিল অভিনয় করবো। নিজের মনের শিল্পকে তুলে ধরব জগতবাসীর কাছে। সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করার একটা ইচ্ছে মনের কোনে উঁকি ঝুকি মারতে শুরু করেছিলো কলেজের গণ্ডি পার হবার আগে থেকেই। মুক্ত স্বাধীন পাখির মত ঘুরে বেড়াবো জগত জুড়ে, জানব বিশ্ব ধরা।
কিন্তু আমার এই শিল্পমনা আড়ম্বরহীন জীবনের মোড় ঘুরে যায় এক বন্ধুর পরামর্শে। নিছক বন্ধুর প্রেষণা আর বাবার অধির আগ্রহে আবেদন করি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। পড়াশোনায় বরাবর উদাসিন থাকা আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে আবেদন করাই সার, বাদ পরে যাবো প্রথম ধাক্কাতেই।
কিন্তু স্রষ্টার লিখন কি আর খন্ডানো যায়। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় এক এক করে সবগুলো পরীক্ষাতেই উতরে গেলাম।
জানুয়ারি ২০১৪ এর কোন সকালে মস্ত বড় এক ব্যাগ কাঁধে যোগদান করলাম বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে। কত রকমের চড়াই উতরাই পার করে দেখতে দেখতে কেটে গেল দু দুটি বছর। ডিসেম্বর ২০১৫ এর কোন এক কুয়াশা ঘেরা সকালে ৭৩ বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সাথে সকল স্বপ্ন সত্যি করে এক টুকরো কম্ব্যাট কাপড়ের ভেতরে নিজেকে আবিস্কার করলাম। অতিক্রম করলাম সপ্নের পোডিয়াম।
পেছনে রয়ে গেল এই দুটো বছরে ঘটে যাওয়া হাজারো স্মৃতি, হাজারো ঘটনা, রয়ে গেল অগণিত কান্নার ফোঁটা আর রাশি রাশি দুঃখ সুখের কথা।
সেইসব স্মৃতি, কান্নার ফোঁটা আর দুঃখ সুখের কথাই ছাপার হরফে লেখা হয়েছে এই ডায়রিতে। আশা করি এই বই ভাল লাগবে আমার সকল পাঠকের। স্বপ্নপিপাসু এক বালকের স্বপ্ন সত্যি হবার পেছনের গল্প আছে এই ডায়রির প্রতিটা পাতায় পাতায়।