ইতিহাস কথা বলে—বিজয়ীদের কথা । ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—অতীত গৌরবের সাক্ষ্য। কিন্তু কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ঘটনাবলির কতটুকু তাতে অটুট থাকে?
অসামাজিক কিন্তু তুখোড় পুলিশ অফিসার কায়েস হায়দারের কাঁধে চাপল অদ্ভুত এক কেস সমাধানের ভার। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়াল যেখানে যুক্তি কাজ করে না। অনেকটা বাধ্য হয়েই রহস্যময় অবলালের কাছে সাহায্য চাইল কায়েস। দু’জনে মিলে নেমে পড়ল তদন্তে। কিন্তু কেঁচো খুড়তে গিয়ে এ যে সাপের বাসা!
একের পর এক অতিপ্রাকৃতিক প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে শুরু করল কায়েস আর অবলাল। আধুনিক ঢাকা শহরে এসব কী ঘটছে? বেশ বোঝা যাচ্ছে যে শুধু পিশাচ, স্কন্ধকাটা, চুড়েল আর শক্তিশেলধারী যাদুকরই নয়, এর পেছনে রয়েছে আরও গুঢ় কোন রহস্য।
জড়িয়ে পড়ল আরও অনেকে-সুদর্শনা মীরানা মোরেস, যে কিনা প্রতি রাতে একই স্বপ্ন দেখে। শখের অকালটিস্ট নাজিম আর ক্যাপ্টেন অ্যান্ড্রিয়াস–-কারা এরা?
ধীরে ধীরে উন্মোচিত হলো ভয়াবহ এক চক্রান্তের জাল। সামনে রয়েছে শৈলেন ভট্টাচার্যের ভয়ঙ্কর দলবল, কিন্তু নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে রহস্যের আচ্ছাদনে ঢাকা অসীম শক্তিধর কেউ, কী তার পরিচয়? কী চায় সে?
বর্তমান প্রেক্ষাপট বুঝতে অতীত-এর শরণাপন্ন হতে হবে। জানতে হবে মহাকালের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া সেই সব ঘটনাবলি যার ফলশ্রুতিতে ঢাকার বুকে আজ এই রহস্যময়, নিষ্ঠুর, অতিপ্রাকৃত নাটক জমে উঠেছে।
অ্যালেক্সান্ডার দ্য গ্রেট, আটিলা দ্য হান, চেঙ্গিস খান আর মোঘল সম্রাট বাবরের দরবার পেরিয়ে; বীরযোদ্ধা বাঘাতুর আর পুরোহিত অবলোহিত-এর ইতিহাস জেনে; ঘুরে আসতে হবে পিশাচের গ্রাম থেকে। জানতে হবে রয়াল ভ্যাম্পায়ার রাতিবর আর ভ্যাম্পায়ার হান্টার বিয়র্ণ ভিঙ্গারের ভূমিকা। কীসের ধারাবাহিকতায় তরন্দীদেব বা যংকসুর-এর মতো অতিপ্রাকৃতেরা আজ সমবেত?
সাদা হাত? বেসেলি ধারা? যক্ষ, বেষ্টনী, কৃষ্ণ গ্রহণ? অতঃপর কী ঘটবে? নিষ্ফল বসে ভয়াল পরিণতির অপেক্ষায় প্রহর গোণা ছাড়া কি কিছুই করার নেই? নাকি কেউ বাড়িয়ে দেবে অযাচিত সাহায্যের হাত?
সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে রক্তের মাঝে। শোণিত উপাখ্যান-এ।
সৈয়দ অনির্বাণের লেখায় খুঁজে পাওয়া যায় কল্পনা আর বাস্তবতার এক অভুতপূর্ব মিশেল। তিনি কাজ করেন সাহিত্যের নানামুখী দিক নিয়ে, নতুনত্ব আর চিরায়তকে একই কাতারে টেনে এনে জন্ম দেন বিভিন্ন কাল্পনিক আখ্যানের। কখনও হয়ত তা বাস্তবতার প্রতিবিম্ব, আবার কখনও বা সম্পূর্ণ অলীক, তবে সদাই উপভোগ্য। বাংলায় আরবান ফ্যান্টাসি ধারার অগ্রদূত এই লেখক তার পাঠকপ্রিয় শোণিত উপাখ্যান ত্রয়ী ছাড়াও রচনা করেছেন নানা ঘরানার আরো কয়েকটি মৌলিক উপন্যাস এবং বিভন্ন আঙ্গিকের বেশ ক’টি ছোট গল্প। তার লেখার প্রধান উপজিব্য - অবাস্তবকে বাস্তব ঢঙে উপস্থাপন!