‘যে শিশু রোদ ছুঁয়েছে’ তাঁকে আপনি পাঠ না করে, স্পর্শ না করে এড়িয়ে যেতে পারেন না। কেন পারেন না? তাঁকে পাঠ না করার মানে হচ্ছে নিজেকে বঞ্চিত করা। এবং যে শিশু ক্রমশ রোদ ছুঁয়ে বড় হয়েছে-এবং বড় হতে হতে আপাদমস্তক বহুমুখি শিল্পমগ্নতার পাশাপাশি রচনা করেছেন ছয়টি কাব্যগ্রন্থ-তাকে আপনি এড়িয়ে যাবেন কেমন করে! এবং বয়সী হতে হতে যে কবি কখনো শিরীষ তলায়, কখনো বৃষ্টির অনুষঙ্গে, মহাবৃক্ষের ছায়ায়, কখনো মেরুন স্মৃতি আর জোনাকির আলোয়, কখনো মুক্তিযুদ্ধে আর বিচিত্র দেখাদেখির স্বপ্নে-লাবণ্যে বিস্ময়ের ঘোরে প্রেম ও ভালোবাসায় রচনা করে ফেলেন। ‘দেশ-যেন এক ধ্রুবতারা’-মানে বাংলাদেশ : সে কবি অবশ্যই আপনার আকাক্সিক্ষত ও পাঠ্য।
কৈশোরের রোদে হাঁটতে হাঁটতে-যৌবনের স্বাদ-ঘ্রাণ পিপাসা ও সহজের কাব্যিক প্রজ্ঞা নিয়ে-একজন অনন্য কবি মোহীত উল আলম- যিনি পশ্চিমের বিকেলে অথবা বিকেলের পশ্চিমে সফেদ চুলের পরিব্রাজক ভ্রমণ করতে করতে আমাদের জন্য রচনা করেন ফেলেন পড়ন্ত বেলায় কবিতা শতক। এটি তাঁর সপ্তম কাব্যগ্রন্থ।
তিনি এমন এক শিল্পী গদ্যে-পদ্যে-লিরিকে সহজেই কথা বলতে জানেন সহজের ভাষায়-প্রজ্ঞাময় সহজে: এখানেই কবি হিসাবে তাঁর বিশিষ্টতা। আত্মসমীক্ষায় আত্মপরীক্ষায় সৃজন উত্তীর্ণতায় পারঙ্গম কবি তিনি।
প্রিয় পাঠক, আসুন পাঠ করি তীক্ষ-বোধের স্মরণ ও অনুসরণে পড়ন্ত বেলায় কবিতা শতক। পাঠ করি-প্রবীণ ও মহত্তের সাধনায় প্রীত-কবি মোহীত উল আলম।
ড. মােহীত উল আলম (জ. ১৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, চট্টগ্রাম) পেশায় ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-এর কলা অনুষদের ডীন এবং ইংরেজি ও মানববিদ্যা বিভাগের প্রধান শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি আজীবন সাহিত্য চর্চা করে যাচ্ছেন। গল্প, কবিতা ও নাটক রচনার পাশাপাশি তিনি প্রবন্ধ ও কলাম নিয়মিত লেখেন। তাঁর গবেষণার বিষয় শেক্সপিয়ার, যার বেশ কিছু নাটক তিনি ইতিমধ্যে অনুবাদ করেছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি তিনি উপন্যাস লিখতে শুরু করেছেন, এবং তিনটি উপন্যাস জাতীয় বইমেলা ২০১৩ উপলক্ষে প্রকাশ হবার অপেক্ষায়। সম্পাদনার ক্ষেত্রে তিনি একাধিক গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন, এবং ইউল্যাবের ইংরেজি বিভাগের জানাল ক্রসিংস সম্পাদনা করে যাচ্ছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চব্বিশ, এবং ঝুলবারান্দায় মেঘ তার চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ও তাঁর স্ত্রী আলিয়া সুরাইয়া খানম তাঁদের তিন পুত্র, দুই পুত্রবধূ ও এক নাতনি। সমভিব্যাহারে ঢাকায় জীবন যাপন করছেন ।।