ঢাকার নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহকে উপমহাদেশের মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত বলা হয়। তাঁর পিতা নওয়াব স্যার খাজা আহসানুল্লাহ এবং পিতামহ নওয়াব স্যার খাজা আব্দুল গনি জনকল্যাণমূলক কাজে বিপুল অর্থ ব্যয় করে বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ জনকল্যাণমূলক কাজের পাশাপাশি রাজনীতি করে এদেশের অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হন। পূর্ব বাংলার পিছিয়ে পড়া মুসলিম ও দলিত শ্রেণির হিন্দুদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি ব্রিটিশ সরকারের বঙ্গবিভাগ পরিকল্পনা সমর্থন করেন। ফলে ১৯০৫ সালে ‘পূর্ব বাংলা ও আসাম’ নামে একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হয় এবং ঢাকা নতুন প্রদেশের রাজধানীর মর্যাদা লাভ করে। প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক প্রয়োজনে রাজধানী ঢাকায় তখন আবশ্যকীয় অফিস-আদালত, রাস্তা-ঘাট, কল-কারখানা নির্মাণের সাথে সাথে এখানে যে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যায়, সেটা ঢাকাকে আধুনিক বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে পরিচিত করেছিল।
মুসলিম সমাজের উন্নয়নে ঐসব সমস্যা চিহ্নিত করে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ তা সমাধানের পথে অগ্রসর হন। ১৯০৫ সালে পূর্ব বাংলার মুসলিম নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে তিনি প্রথম ‘মোহামেডান প্রভিন্সিয়াল ইউনিয়ন’ নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল এদেশের মুসলিমদের তৈরি প্রথম রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। এর উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলের মুসলিমদের নিজেদের অধিকার সম্পর্কে আত্মসচেতন করা।
কংগ্রেসপন্থী রাজনীতিবিদ ও কলকাতা কেন্দ্রিক ভদ্রলোকদের বিরোধিতার মুখে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ এদেশের মুসলিম ও দলিত শ্রেণির লোকদের সংঘবদ্ধ করতে থাকেন। সারা ভারতের মুসলিম নেতাদের নিজ খরচে ঢাকায় একত্রিত করে তিনি ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ‘অল—ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ’ গঠন করেন। ১৯০৭ সালে তিনি ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, বরিশাল,পাবনা, কুমিল্লা প্রভৃতি স্থানে জনসভা ও মুসলিম লীগের শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৭ সালেই তিনি কলকাতার ডালহৌসী ইনস্টিটিউট হলে উভয় বঙ্গের নেতাদের নিয়ে এক সভা করে ‘নিখিল বঙ্গ মুসলিম লীগ’ গঠন করেন এবং এর সভাপতি হন। এই প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ সরকারের নিকট নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। কালক্রমে তিনি সরকারের একজন বেসরকারী উপদেষ্টার মর্যাদা পান এবং তাঁর পরামর্শ ব্যতীত পূর্ব বাংলায় উল্লেখযোগ্য কোন কাজই হত না। এর ফলে এদেশবাসীর অভাব অভিযোগ তিনি সহজেই সরকারের গোচরীভূত করে সেটা সমাধানের ব্যবস্থা করতে পারতেন।
কংগ্রেসপন্থী এবং স্বদেশীদের আন্দোলন তীব্র ও সহিংস রূপ নিলে সেটা প্রশমণকল্পে ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর দিল্লীর দরবারে স¤্রাট পঞ্চম জর্জ বঙ্গবিভাগ রদের ঘোষণা দেন। এই ঘোষণায় নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ মর্মাহত হন এবং সারা ভারতের মুসলিমরা ক্ষুব্ধ হয়। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে দিল্লীতে অবস্থিত নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে মুসলিমদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য স্বহস্তে লিখে পর পর দু’টি পত্র ভাইসরয়কে দেন। (পরিশিষ্টে পত্রের কপি দ্র.) এই পরিপ্রেক্ষিতে ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৯১২ সালে ২৯ জানুয়ারি ঢাকা সফরে আসেন। ঢাকার শাহবাগ বাগান বাড়িতে জাঁকালো এক অনুষ্ঠান করে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ বড়লাটকে সবংর্ধনা দেন। ৩১ জানুয়ারি নওয়াব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে ১৯ জন মুসলিম নেতা পৃথকভাবে বড় লাটের সাথে দেখা করে বিভিন্ন দাবি দাওয়া পেশ করেন। ঐসব দাবি দাওয়া এবং বঙ্গবিভাগ রদের ক্ষতিপুরণ স্বরূপ বড়লাট সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ শিক্ষা অফিসার নিয়োগের প্রতিশ্রম্নতি দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণায় হিন্দুরা সাম্প্রদায়িক মানষিকতার কারনে এর প্রকাশ্য বিরোধিতা শুরু করে। তারা মিছিল মিটিং করে, প্রতিবাদ পত্র ও স্মারকলিপি দিয়ে, সরকারের নিকট প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তীব্র বিরোধিতা করে। কিন্তু নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ, সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী প্রমুখ মুসলিম নেতাদের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।
বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেও এদেশে তাঁর যথাযথ মূল্যায়ন আজো হয় নি। এমন কি বর্তমান প্রজন্মের কাছে তিনি প্রায় অজানা রয়েছেন। এর প্রধান কারন নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর জীবন ও কর্ম নিয়ে তেমন গবেষণামূলক প্রকাশনা হয় নি। তাঁর কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টস-এর দুষ্প্রাপ্যতাও এর অন্যতম কারন। এই পরিপ্রেক্ষিতে নওয়াব বাহাদুরের সংশ্লিষ্ট মৌলিক তথ্য-উপাত্ত সুধী সমাজের গোচরীভূত করাই এই গবেষণার মূল লক্ষ্য। নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ তাঁর ঘটনাবহুল জীবনে নিজ পরিবারের সদস্যদের নিকট থেকে শুরু করে ঢাকা নওয়াব এস্টেটের অফিসার-কর্মচারি ও রাজনৈতিক সুহৃদগণের নিকট অসংখ্য চিঠিপত্র লিখেছেন এবং দলিলপত্র সম্পাদন করেছিলেন। এছাড়াও তৎকালীন প্রশাসনিক কর্তর্ৃপক্ষ, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী, কবি-সাহিত্যিকদের কাছে তাঁর লেখা পত্র,স্মারকপত্র, পরিপত্র ও স্মারকলিপি রয়েছে। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে তিনি যেসব ভাষণ দিয়েছিলেন সেগুলো ইতিহাসের মুল্যবান দলিল। বিভিন্ন লোকেরা বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁর নিকট যেসব চিঠিপত্র ও আবেদন পত্র দিয়েছিলেন সেগুলোও ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল। সংরক্ষণের অভাবে ঐসব দলিল পত্রের বেশির ভাগই বিলীন হয়ে গেছে। তবে দেশে বিদেশের জাদুঘর, আরকাইভস, লাইব্রেরি, মহাফেজখানা প্রভৃতিতে এখনো তাঁর সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু ডকুমেন্টস-এর খেঁাজ পাওয়া যায়। সেগুলোর ফটোকপি, স্ক্যান কপি, অনুলিপি ইত্যাদি সংগ্রহপূর্বক বিষয় ও শ্রেণি অনুযায়ী সন্নিবেসিত করে “নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ বাহাদুরের লেখাজোখা ও সংশ্লিষ্ট দলিল পত্র” শিরোনামে এই লেখকের উদ্যোগে কয়েকটি খণ্ডে আকরিক গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর সংশিষ্ট ডকুমেন্টস ও পত্রগুলো প্রধানত উদুর্-ফার্সী এবং ইংরেজিতে লেখা। এই খণ্ডে প্রকাশিত বেশির ভাগ পত্রই নওয়াবের ব্যক্তিগত ও সাংসারিক বিষয় নিয়ে লেখা। পত্রগুলি তিনি তাঁর ছোট বেলার বন্ধু ও উজির মীর্জা ফকির মোহাম্মদকে (১৮৭৭-১৯৫৮) লিখেছিলেন। মীর্জা ফকির মোহাম্মদের পিতা ছিলেন মীর্জা ওলিজান কমর এবং ওলিজান কমরের পিতা ছিলেন মীর্জা রজব আলী যিনি দিল্লী থেকে ঢাকায় এসে নওয়াব খাজা আবদুল গনির এক চাচাতো বোনকে বিবাহ করেন। সেইজন্য মীর্জা ফকির মোহাম্মদ ছিলেন ঢাকা নওয়াব পরিবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহর বাল্যবন্ধুু।
কিশোর বেলায় একদিন মীর্জা ফকির মোহাম্মদ নওয়াবজাদা খাজা সলিমুল্লাহকে বলেন, আপনি তো ভবিষ্যৎ নওয়াব। নওয়াবী পদ পেয়ে আমাকে ভুলে যাবেন। সলিমুল্লাহ উত্তর দেন, আপনি আমার বন্ধু হিসেবে চির সাথী হয়ে থাকবেন। আমি যদি নওয়াব হই আপনি হবেন আমার উজির। এজন্যই তাঁরা একে অন্যকে নওয়াব বাহাদুর এবং উজির সাহেব বলে সম্বোধন করতেন বলে জানা যায়। উল্লেখ্য, মীর্জা ফকির মোহাম্মদ নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ ও নওয়াব হাবিবুল্লাহর প্রাইভেট সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করতেন। নওয়াব সলিমুল্লাহ দেশে বিদেশে অবস্থানকালে প্রতিদিন মীর্জা ফকির মোহাম্মদ নওয়াব পরিবার কিম্বা ঢাকার সংশ্লিষ্ট খঁটিনাটি বিষয় জানিয়ে নওয়াব সলিমুল্লাহ বাহাদুরকে পত্র লিখতেন। দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা সত্বেও নওয়াব বাহাদুর তাঁর প্রতিটি পত্রের উত্তর নিজ হাতে লিখে দিতেন। কখনো উত্তর দিতে বিলম্ব হলে নওয়াব সাহেব কৈফিয়ত দিতেন ও মার্জনা কামনা করতেন। এসব পত্রাদি থেকে নওয়াব সলিমুল্লাহ বাহাদুরের ব্যক্তিগত চরিত্র, ব্যক্তিত্ব ও মহত্ব সম্পর্কে বাস্তব তথ্যাদি পাওয়া যায়।
১৯৯০’র দশকে ঢাকার নওয়াব পরিবারের অবদান নিয়ে পি-এইচ.ডি. বিষয়ক গবেষণা করার সময় পত্রগুলির খোঁজ মীর্জা ফকির মোহাম্মদের উত্তর পুরুষ খাজা মোঃ আমজাদের নিকট পেয়ে এই লেখক সেগুলোর কপি সংগ্রহ করেন। ঐসব পত্রাদি ছাড়াও নওয়াব বাহাদুরের নিকট বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন সময় আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন পত্র দিতেন এবং নওয়াব তাদেরকে কিছু না কিছু সাহায্য দিতেন। এরূপ উর্দুতে লেখা কিছু পত্রের কপিও এই গ্রন্থে সন্নিবেসিত করা হল। পত্রগুলি বঙ্গানুবাদে সহায়তা প্রদানের জন্য এ লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মরহুম প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং ড. মোঃ রেজাউল করিম, সাবেক কীপার (ইতিহাস বিভাগ),বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর—এর নিকট বিশেষভাবে ঋণী।
এই গ্রন্থের শেষাংশে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর স্বহস্তে ইংরেজিতে লেখা দ’ুটি বিখ্যাত ও দুস্প্রাপ্য পত্রের কপিও দেয়া হল। পত্র দু’টি ১৯১১ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত দিল্লীর দরবারে অবস্থানকালে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জকে লিখেছিলেন।
বঙ্গবিভাগ রদের প্রেক্ষাপটে নওয়াবের দেয়া উক্ত পত্রে পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব বাংলার মুসলিমদের মনক্ষোভ প্রশমণের নিমিত্ত বড়লাট হার্ডিঞ্জ অবিলম্বে ১৯১২ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকা সফরে আসেন এবং এখানে তিন দিন আবস্থান করেন। ঐ সময় নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর উদ্যোগে প্রাদেশিক মুসলিম শিক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে ঢাকার নওয়াবের শাহবাগ বাগান বাড়িতে বড়লাটের সম্মানার্থে বিশেষ সবংর্ধনা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই উপলক্ষ্যে সেদিন শাহবাগে ঢাকার কুটির শিল্পজাত দ্রব্যাদির এক বিশেষ প্রদর্শনীও আয়োজন করা হয়। ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি নওয়াব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের এক মুসলিম প্রতিনিধি দল সেদিন শাহবাগে বড়লাটের সাথে পৃথকভাবে স্বাক্ষাৎ করে তাঁকে একটি মানপত্র দেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ শিক্ষা অফিসার নিয়োগের জন্য জোর দাবি করেন।
বঙ্গবিভাগ রদের ক্ষতিপুরণ স্বরূপ সেদিন বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ মুসলিম প্রতিনিধিদের নিকট ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং মুসলিমদের জন্য জনশিক্ষা বিভাগে একটি বিশেষ অফিসার নিয়োগে কথা ঘোষণা করেন। কংগ্রেস পন্থী হিন্দুরা এই ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করে। তারা সভা সমিতি করে ও সরকারের নিকট উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নানা কল্পিত অনিষ্টতার কথা তুলে ধরেন। অন্য দিকে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ, সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী প্রমুখ মুসলিম নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে নানা চড়াই উৎরাই পার হয়ে ১৯২১ সালে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে নওয়ার সলিমুল্লাহর উক্ত পত্র দু’টির গুরুত্ব অপরিসীম। গবেষণার প্রয়োজনে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর প্রপৌত্র, খাজা আনাস নাসরুল্লাহ লন্ডনের কেমব্রিজ ইউনির্ভসিটি আরকাইভস/লাইব্রেরি থেকে পত্র দু’টির কপি সংগহ্র করে এই লেখককে দিয়েছিলেন। এজন্য লেখক তাঁর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।
মুলত খাজা আনাস নাসরুল্লাহর গভীর আগ্রহের কারনেই নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর এই পত্রগুলো সংকলন ও গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা এই লেখকের পক্ষে সম্ভব হয়েছ। তিনি এ বিষয়ে বহুবার খেঁাজ খবর নেয়া ছাড়াও প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দিয়ে কাজটি তরান্বিত করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু ও ফাসীর্ বিভাগের মরহুম প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং ঢাকা নওয়াব পরিবারের খাজা মোঃ হালিম, খাজা মোঃ রফিক আলম, সৈয়দ নাজমুল হক একাজে লেখককে নানা পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন। আমার পরিবারের সদস্যগণ বিশেষ করে সহধর্মিণী বেগম মেহেরন নেসা যিনি তাঁর সাংসারিক কাজের জন্য আমার কর্মব্যস্ততার ফাঁকের সময়গুলো দীর্ঘদিন ধরে এসব নীরস গবেষণার কাজে ব্যয় করতে দিয়ে অতীব ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। এজন্য আমি তাঁর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। অনুসন্ধিৎসু পাঠক ও গবেষকগণ এই গ্রন্থ থেকে নওয়াব বাহাদুর সম্পর্কে কিছু জানতে পারলে লেখকের শ্রম সার্থক হবে। পরিশেষে নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ বাহাদুরের ন্যায় একজন মহান মণীষীর ঘটনাবহুল জীবনের সামান্য কিছু অকৃত্রিম তথ্য এই গ্রন্থে সন্নিবেসিত করতে পেরে লেখক হিসেবে মহান আল্লাহর নিকট লাখো শুকরিয়া আদায় করি।