মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী কখনো মানুষকে ছেড়ে যাননি। উপমহাদেশের কৃষক আন্দোলন, জমিদারী উচ্ছেদ আন্দোলন, লাইন প্রথা ও বাঙাল খেদা বিরোধী আন্দোলন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তান আন্দোলন, পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ তথা আওয়ামী লীগ’ প্রতিষ্ঠা, ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন, স্বাধীন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ফারাক্কা লং মার্চসহ সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ-আধিপত্যবাদবিরোধী এদেশের গণমানুষের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। মজলুমের মুখে প্রতিবাদের নতুন ভাষা সৃষ্টি করেছেন। তাঁকে জীবনের বড় একটা অংশ জেলে কাটাতে হয়েছে। ১৯৭২ সালের ২৯ এপ্রিল শিবপুর কৃষক সম্মেলনে মওলানা ভাসানী বলেন তিনি ৩০ বছর ১০ মাস জেল খেটেছেন।
তিনি তাঁর সুদীর্ঘ জীবনে কত বছর জেল খেটেছেন তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো বই নেই। প্রাথমিকভাবে আমার সংগ্রহে থাকা প্রায় শ’খানেক ভাসানী সম্পর্কিত বই থেকে তথ্যানুসন্ধান শুরু করি। দেশে-বিদেশে ভাসানী অনুসারী, গবেষক, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারপরও মওলানা ভাসানীর জেলজীবন নিয়ে পরিপূর্ণ তথ্যের অভাব থেকেই গেলো। আশা করি ভবিষ্যতে তাঁর জেলজীবন নিয়ে পরিপূর্ণ গবেষণা হবে। -- আজাদ খান ভাসানী
লেখক পরিচিতি
আজাদ খান ভাসানী ১৯৮১ সালের ২৪ অক্টোবর টাঙ্গাইল জেলার ছোটবাসালিয়া গ্রামের মাতুতালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আবুবকর খান ভাসানী ও মাতা মঞ্জুমআরা খানম ভাসানীর কণিষ্ঠ সন্তান। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কণিষ্ঠ পৌত্র। তিনি কারমাইকেল কলেজ, রংপুর থেকে ২০০৫ সালে ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও ২০০৭ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১২ সালে টাঙ্গাইল ল কলেজ থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। ২০১৯ সালে প্রকাশিত তার ‘ভাসানীর কথা’ গ্রন্থটি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। টাঙ্গাইলে প্রতিষ্ঠা করেছেন মওলানা ভাসানী কৃষক সমিতি, তিনি এর সভাপতি। এছাড়া তিনি ভাসানী পরিষদের সদস্য সচিব। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও সাহিত্য সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের।