"আর রাহীকুল মাখতূম : হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর সীরাতগ্রন্থ"বইটির প্রথমের কিছু কথা: আরবদের ইতিহাস জাহিলি যুগের আরবদের কোন লিখিত ইতিহাস ছিল না। ইতিহাস নামে কিছু উপজাতীয় গাঁথা চালু ছিল। ওয়াহাব বিণ মুনাবৃবিহ ও উবাইদ বিণ শাহরিয়ার পরবর্তীকালে এগুলি সংগ্রহ ও সম্পাদনা করেন। তাছাড়া গুষ্ঠি পঞ্জিগুলিও আরবদের কাছে ইতিহাসের কাজ করত। কিন্তু এ সকল মালমসলা হতে তদানীন্তন আরবদের ইতিহাস জ্ঞান সম্বন্ধে এক হতাশাজনক ছবি ফুটে উঠে। নিকটতম রাজা বাদশাহ সম্বন্ধে অস্পষ্ট ধারণা, অতীত সম্বন্ধে অতিরঞ্জিত ও কল্পিত বর্ণনা- এ সকলই ছিল আরবদের ইতিহাস। আরব উপদ্বীপের ভৌগােলিক অবস্থা আরবের অবস্থান ও ইসলাম প্রচারের প্রান কেন্দ্র আরব ভূ খন্ডের তিনদিকে জলরাশি এবং একদিকে বিস্তীর্ন মরুময়, আর তিনদিকে জল এবং অন্যদিকে স্থল বলে ইহাকে উপদ্বীপ বলে। আরবের সীমা ঃ এ দ্বীপের সীমা হল; উত্তরে ও সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন ও জর্ডান। দক্ষিনে ও আরব সাগর ও ভারত মহাসাগর । পূর্বে ও পারস্য সাগর ও ওমান সাগর। পশ্চিমে ? লােহিত সাগর, সুয়েজ প্রনালী ও রােম সাগর। আরবের আয়তন ও লােকসংখ্যা ঃ আরব উপদ্বীপের আয়তন প্রায় ৯২ লাখ বর্গমাইল । যা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫শ' মাইল এবং প্রস্তে ৬শ' মাইল। এর মধ্যে সৌদ্বী আরবের আয়তন ৯ লক্ষ ২৭ হাজার বর্গমাই। লােকসংখ্যা, মরুভূমি আর পাহাড়ী অঞ্চলবলে এ বিশাল উপদ্বীপের লােক সংখ্যা কম। এখানে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ, প্রতি বর্গ মাইলে মাত্ত ৭জন লােক বাস করে । আরবের প্রাচীন আধিবাসী শয়তানের প্ররােচনায় মানব পিতা হযরত আদম ও হাওয়া (আঃ) নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষন করায় জান্নাত হতে বিতারিত হয়ে পৃথিবীতে পদাপর্ন করেন। কুরআন হাদীস ও বিভিন্ন বর্ণনা হতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে পৃথিবীতে এসে আরবের মক্কা নগরস্থ আরাফাতের ময়দানে তারা দুই জন মিলিত হন, এবং সেখানে বসবাস শুরু করেন। এরপর মহাপ্লাবনে পৃথিবীর সব জাতী নি:শেষ হবার পরে হযরত নূহ (আঃ) এর বংশধররা এই আরবেই বসবাস শুরু করে। নিন্মে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলােচনা তুলে ধরা হল। আরবের প্রাচীন অধিবাসীঃ এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, আদম (আঃ) এর বংশধররাই আরবের প্রাচীনতম অধিবাসী। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে অনেক জাতীর উত্থান এবং পতন সেখানে হয়েছে। তাই প্রাচীন অধিবাসী নির্ণয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে কিছুটা মতনৈক্য রছে । সৈয়দ আমীর আলী তার A short History of saraeens.গ্রন্থে বলেন, “আরবের প্রবীন অধিবাসী হলাে প্রাচীন কালদীয়গন, যাদেরকে কাহতানের বংশধর বলে অনুমান করা হয়। ঐতিহাসিক ওয়েল হাউসেন বলেন, সমগ্র আরবই বংশ সূত্রে ইসলামাইল (আঃ) এর সাথে
Title
আর রাহীকুল মাখতূম : হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর সীরাতগ্রন্থ - রয়েল সাদা কালার
আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি (১৯৪৩-২০০৬) পুরো নাম সফিউর রহমান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আকবর ইবনে মুহাম্মাদ আলি ইবনে আব্দুল মুমিন মুবারকপুরি আযমি। তিনি একজন স্বনামধন্য ইসলামিক লেখক এবং ভারত উপমহাদেশের বিখ্যাত মুহাদ্দিস। তার লেখা রাসূল সা.-এর জীবনীগ্রন্থ আর-রাহিকুল মাখতুম সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বহু ভাষায় অনুদিত একটি বই আধুনিক সিরাতগ্রন্থ। তিনি ১৯৪২ সালের ৪ জুন ভারতের আযমগড় জেলার হোসাইনাবাদের মোবারকপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি স্থানীয় শিক্ষকদের কাছে লেখাপড়া করেন এবং আরবী ভাষা, ব্যকরণ, সাহিত্য, ফিকাহ, উসূলে ফিকাহ, তাফসির, হাদিস ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি শরীয়াহ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন একই সাথে মাদরাসায় শিক্ষকতা এবং লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে মুবারকপুরের দারুত তালিম মাদরাসায় এবং ১৯৭৪ সালে বেনারসের জামিয়া সালাফিয়ায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৮ সাল হতে তিনি মদিনাস্থ আন্তজার্তিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাসূল সা. বিষয়ক গবেষণা ইন্সটিটিউটে কর্মরত থাকেন। সর্বশেষ রিয়াদের মাকতাবায়ে দারুস সালামে গবেষণার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া বেনারসের মাসিক মুহাদ্দিস পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছেন। আরবী ও উর্দু ভাষায় তাঁর রচিত গ্রন্থসংখ্যা ত্রিশোর্ধ্ব। ২০০৬ সালের ১ ডিসেম্বর জুমাবার বেলা দু’টায় এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে এই মহান মনীষী মাওলার সান্নিধ্যে চলে যান।