"কারবালা ও মুয়াবিয়া" বইটির ভূমিকার অংশ থেকে নেয়া: কারবালার প্রান্তরে সৈয়দ্যুশশােহাদা আলী মােকাম, প্রিয় নবীজি (সা.)-এর কলিজার টুকরা ইমাম হােসাইন ইবনে আলী (আ.) সপরিবারে শাহাদাতের হৃদয়বিদারক ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে রক্তাক্ষরে লেখা থাকবে। যত দিন এ পৃথিবীতে একজন মুসলমানও বেঁচে থাকবে তত দিন ইমাম হােসাইন (আ.) ও তাঁর পরিবারবর্গের এ মহতী কোরবানি, তথা আত্মবলিদান শ্রদ্ধার সাথে, হৃদয়ের সাথে, মহব্বতের সাথে, অশ্রুর সাথে স্মরণ করে যাবে। ইয়াজিদপন্থী মুনাফেকগণ উক্ত ঘটনাকে যতই ক্ষমতার ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বলে অপপ্রচার করে, ইয়াজিদ ও তার অনুসারীদের মুসলমানি চরিত্র প্রতিষ্ঠিত করার অপপ্রয়াস চালাক না কেন-কোরআন, হাদিস ও ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায়, কারবালার এ ঘটনা ছিল মূলত সত্যের ও অসত্যের, ধর্ম ও অধর্মের, মজলুম ও জালিমের, ইসলাম ও কুফুরের মধ্যে সংগ্রাম । কারবালার ঘটনা আকস্মিক ঘটে যাওয়া কোনাে ঘটনা নয়। এর পেছনে দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্র কাজ করে এসেছে। দীর্ঘ উমাইয়া ও আব্বাসীয় শাসনের ফলে কারবালার ঘটনার পেছনে যে সমস্ত রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক কারণ ষড়যন্ত্রের আকারে কাজ করেছে তার সঠিক প্রমাণ ও দলিলাদি ইতিহাসের পাতা থেকে এমনভাবে মুছে ফেলা হয়েছে যে, আজ তার সঠিক চিত্র তুলে ধরা সত্যিই এক দুরূহ কাজ। আবুল কালাম আজাদ যথার্থই বলেছেন : কোনাে সত্যানুসন্ধিৎসু ব্যক্তি যদি ইতিহাস থেকে সঠিক প্রমাণসহ কারবালার ঘটনার মূল কারণ অনুসন্ধান করেন তবুও অধিক ক্ষেত্রে তাকে নিরাশ হতে হবে। অর্থাৎ ইয়াজিদপন্থীদের কারসাজিতে সে সত্য আজ এমনভাবে কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে আছে যে, তা উদ্ধার করা এক দুরূহ। কাজ। এ জন্য মুসলিম সমাজ সচেতনও নয়। শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে শােক পালন করেই ক্ষান্ত হয়।