"উজান-যাত্রা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: নামেই প্রকাশ এই উপন্যাসে একটা 'শিকড়-সন্ধান আছে, যাকে অন্তর্যাত্রাও বলা যায়। সুদূর উত্তর-পশ্চিমের গুর্জরকন্যা কস্তুরী কোন প্রেক্ষিতে এক সূত্রে গেঁথে যায়। জনজাতিসন্তান কাজল মুণ্ডার সঙ্গে ? উভয়েরই যাত্রারম্ভ কলকাতা থেকে বেস ক্যাম্প। একই জায়গায় গিয়ে শেষ হয়। সন্ধান এক হিসেবে আলাদা কিন্তু গন্তব্য এক। কেউই জানতেন না, এমনটা হবে। কাকতালীয়ই না অন্য কোনও গৃঢ় জীবনসংকেত ? চতুর্দিকের কপট হতাশাজনক কদর্যতা ও তার মধ্যে যা-কিছু নঞর্থক তাকেই আমরা বাস্তব নাম দিয়েছি। সেই কালাে বাস্তবের উলটো পিঠের সাদাটা দিনের আলােয় চাঁদের মতাে লুকিয়ে থাকে তাকে দেখি না। চোখে পড়ে না। আন্তরিকতা, সততা নিষ্ঠা নিয়ে প্রতিদিন পথ চলে কত মানুষ, অন্বেষণ নিয়ে বাঁচে। বিভ্রান্ত হয়, নিরাশ হয় কিন্তু লক্ষ্য ছাড়ে না। তাদের মনের গড়ন আলাদা। স্বার্থের চেহারা-চরিত্র আলাদা। লেখিকা এই সদাত্মক জীবনযাত্রার সত্যকে বারবার খোঁজেন। তার চরিত্রগুলি একরঙা নয়, সংঘাতহীন নয়, কিন্তু সে সংঘাতের প্রকৃতি আলাদা। কাহিনি এগিয়ে যায় ঘটনা ও স্মৃতির জাল বুনতে বুনতে, অলক্ষ্য নাটক জমে ওঠে, মানুষের সঙ্গে মানুষীর সম্পর্কের, অতীতের সঙ্গে বর্তমানের না পাওয়ার যন্ত্রণা দিয়ে যা শুরু তা কি কোনও পাওয়ায় পৌছােয়? না গড়পড়তা জীবনের মতাে শেষ হয়ে যায় ক্ষোভে, অভিযােগে, বিফলতায়?
বাণী বসু একজন বাঙালি ভারতীয় লেখক, লেখক, সমালোচক এবং কবি। তিনি বিখ্যাত স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষালাভ করেন। তিনি জন্মভূমি মতিঝুমির প্রকাশনার সাথে উপন্যাস লেখক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। একজন প্রফুল্ল লেখক, তাঁর উপন্যাসগুলি নিয়মিত বাংলার প্রখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা দেশে প্রকাশিত হয়। তার প্রধান কাজগুলির মধ্যে রয়েছে সোয়েথ পাঠেরার থালা (মার্বেল সালভার), একুশে পা (একুশের ধাপ), মৈত্রেয়া যাকাত (স্ট্রি দ্বারা মৈত্র্যের জন্ম হিসাবে প্রকাশিত), গান্ধারভি, পঞ্চম পুরুষ (পঞ্চম পুরুষ, বা পঞ্চম প্রজন্ম?) এবং অষ্টম গর্ভা (অষ্টম গর্ভাবস্থা)। তিনি আন্তরঘাট (ট্রেজন), এবং মৈত্র্য্য জাট্টা জন্য আনন্দ পুরষ্কারের জন্য তারশঙ্কর পুরষ্কার জিতেছিলেন। তিনি সুশিলা দেবী বিড়লা পুরস্কার এবং সাহিত্য সেতু পুরস্করের প্রাপক। তিনি ব্যাপকভাবে বাংলাতে অনুবাদ করেন এবং প্রবন্ধ, ছোট গল্প এবং কবিতা লিখেছেন। বঙ্গ বসুকে বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য, ভারতের একাডেমীর সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার, সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার ২010 প্রদান করা হয়েছে।