ফ্ল্যাপে লিখা কথা জেল থেকে লেখা বাংলাদেশ একজন সাহসী ব্যাক্তির স্মৃতিকথা। এই ব্যাক্তি তার সামনে দাঁড়ানো ও ছুঁড়ে দেওয়া সকল ব্যত্যয়, সীমাবদ্ধতা ও শত্রুতা যা তাকে ধ্বংস করার জন্য বা তার এসবের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার দৃঢ় সংকল্পকে বিনষ্ট করার লক্ষ্যে প্রযুক্ত করা হয়েছিল, সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করেছেন। মহীউদ্দিন খান আলমগীরকে প্রথমে ৭ মাসের জন্যে জেলে অন্তরীন করা হয় ২০০২ সালে। অন্তরীন অবস্তায় তাকে উপবাসে রেখে নির্যাতন করেছিল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। পরে ২০০৭ এর ২ ফেব্রুয়ারী মাঝরাতের অন্ধকারে তাকে গ্রেফতার পরোয়ানা ছাড়া অভিযোগবিহীনভাবে তৎকালীন সামরিক বাহিনী সমর্থিত অনির্বাচিত সরকারের র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ঘর থেকে তুলে নেয়। সরকার তাকে জেলে অন্তরীন করে, এমনকি তাকে নির্জন কারাবাসে রেখে নির্যাতন করে। আলমগীর বলেছেন, তার সাথে অনুরূপ ব্যবহার করা হয় একজন্য যে, তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোন বিবৃতি বা সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করেছিলেন। পরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে এক বশংবদ ক্যাঙ্গারু আদালতের মাধ্যমে তার উপর ১৩ বছর সশ্রম কারাদন্ড আরোপ করা হয়। ২০০৭-২০০৮ এ বিচারের মোড়কে এই অন্যায় শাস্তি একজন সৎ ও সাহসী ব্যা্ক্তির উপর আরোপ করে তৎকালীন সরকার প্রতিভাত করেন যে প্রকৃত পর্যায়ে দুর্নীতিবাজ এবং অন্যায় শক্তির বাহক ও ধারকরা তাদের গোষ্ঠীগত স্বার্থ ও লোভ চরিত্রার্থ করার জন্য যে কোন নিম্ন পর্যায়ে নামতে পারেন। এই পরি্প্রেক্ষিতে এই বইয়ে বিবৃত ঘটনাবলী পাঠকের বিবেককে স্পর্শ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এই বইয়ে সন্নিবেশিতি হয়েছে মানব চরিত্রের ভীরুতা ও নির্ভীকতাকে কেন্দ্র করে গভীর ভাবনা ও চেতনাবোধ; এর বিভিন্ন অংশে সতেজভাবে স্থান পেয়েছে জীবন সাহিত্যের উপর হৃদয়স্পশী অনুভূতি। যারা সকল নাগরিকের সম্মান ও অধিকার রক্ষণে উম্মুখ একটি ন্যায় ও সাম্য ভিক্তিক সমাজ অর্জন ও রক্ষণে সংকল্পবদ্ধ তাদের সবার জন্য এই বই অবশ্য পঠনীয়।
সূচিপত্র পটভূীম কাশিমপুর কারাগার তদন্ত ও দোষারোপণ অভিযোগ সমূহ রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী আমার বিবৃতি প্রতিরক্ষণের সাক্ষী বাদীপক্ষের যু্ক্তি প্রতিরক্ষণের যুক্তি জেলে : রায়ের পর বিচারিক রায় : তারপর আপীল এবং অত:পর কাশিমপুর জেলে জী্বন হাসপাতালে আবার কাশিমপুরে নির্জনে অন্তরীণায়ন আবার হাসপাতাল জামিন ও মুক্তি
মহীউদ্দীন খান আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করার পর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তারপর সরকারের সিভিল সার্ভিসে যােগ দিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক অর্থনীতি ও উন্নয়ন অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিয়ে পরে ১৯৮০ তে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি ভারতের সাথে বাংলাদেশের গঙ্গা নদীর পানি বিভাজন সম্পর্কিত চুক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে সম্পাদন করেন। একই বছর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক শান্তি চুক্তি প্রণয়ন ও সম্পাদনে তিনি তাৎপর্যমূলক ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৭-২০০১ সময়ে তিনি বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রীপরিষদে অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে তিনি গ্রেফতার হন। এর আগে খালেদা জিয়ার সরকারও তাকে গ্রেফতার করেছিল। ২০০৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং সংসদের সরকারী হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সমূহের আঞ্চলিক সমিতির নির্বাচিত সভাপতি তিনি। সর্বশেষ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। অর্থনীতি সম্পর্কিত বিষয়ে লিখিত ২০টি এরও অধিক বইয়ের লেখক তিনি।