কাহিনী সংক্ষেপ ‘আমার বাবা এই পৃথিবীর সবচেয়ে মজার বাবা, এর মধ্যে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।’ ড্যানি এই বাবাকে পেয়ে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করে। বাবাকে সে ভীষণ ভালোবাসে। বাবার সঙ্গে একটা পুরনো জিপসি ক্যারাভানে থাকে সে। বাবা যখন ওয়ার্কশপে গাড়ি মেরামতের কাজ করে, গাড়িতে পেট্রোল ভরে, ও তখন সেখানে নানা কিছু করে। গল্প শোনে। স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে ঘুড়ি, গ্যাস বেলুন বানায়। যখন ড্যানির চারমাস বয়স ওর মা মারা যায়, তারপর থেকে বাবা ওকে একাই বড় করছে। জীবনটা বেশ মজার ও শান্তির। কিন্তু যখন ওর নয় বছর বয়স তখন সে বাবার একটা গোপন দোষ হঠাৎ করে আবিষ্কার করে। এরপর কী হলো? বাবা ও ড্যানি মিলে ভিক্টর হেজেলকে জব্দ করবার একটা ভয়ানক ফন্দি আঁটে। লোকটা ছিল জমিদার কিন্তু ব্যবহার একবারে বাজে। ওরা কী পারবে এই ফন্দিটাকে কাজে লাগাতে? আর যদি পারে ড্যানি তো তখন এই পৃথিবীর একজন বড় চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে? বেশ একটা দুষ্ট ছেলের মতো ড্যানিকে এঁকেছেন রোয়াল্ড ডাল। বাবা ও ছেলের অনবদ্য সম্পর্ক। একটা আইন ঠিক কঠিন নয় যাকে ভাঙ্গাও যায়, যাকে ভাঙ্গতে গিয়ে যে পরিকল্পনা, উদ্দাম, উল্লাস ও আনন্দ, যে লোক আইন সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে তারও মজা লাগতে বাধ্য।
মন্তব্য ‘আজ আমি তোমাকে আমার সমস্ত জীবনের ভেতরে যে একটা গভীর-কালো গোপন সত্যের জগৎ আছে সেখানে নিয়ে যাব’। বাবাই ড্যানির জগৎ। কিন্তু একদিন বেশ আশ্চর্য হয় যখন জানতে পারে একটা আইন ভাঙ্গছে তার বাবা। বড়রাও কখনো আইনকে একটু নিজের মতো করে নিতে পারে। বাবা যাই করুক ড্যানি জানে তাঁর বাবা একজন ভালো মানুষ, তিনি দয়ালু, বুদ্ধিমান আর পৃথিবীর সবচেয়ে মজার ও নানা সব উত্তেজক ভাবনায় একক। এই লোমহর্ষক কাহিনীতে ওদের সঙ্গে যোগ দিলে জানা যাবে ওরা এই পৃথিবীর একটি সাহসী ও সাংঘাতিক পরিকল্পনা কীভাবে সফল করেছে।
লেখক পরিচিতি রোয়াল্ড ডাল ১৯৬১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ওয়েলসের ল্যাণ্ডাফে জন্মগ্রহণ করেন। ইংল্যান্ডের রেপটন বোর্ডিংস্কুলে পড়াশুনা করেন। বাবা মা ছিলেন নরওয়ের মানুষ। কাজেই ছুটিতে ওরা সকলে নরওয়েতে যেতেন। তার বই ‘বয়’ পড়লে জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা তাকে কখনো টানেনি। ১৯৩৩ সালে শেল কোম্পানিতে যোগ দেন। কাজের সূত্রে তাঁকে আফ্রিকার মোম্বাসায় যেতে হয়। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় তিনি ফাইটার পাইলট হন। ডিপ্লোম্যাটিক কাজ নিয়ে এরপর ওয়াশিংটনে যান। কাজের নাম ‘এ্যাসিস্ট্যান্ট এয়ার এ্যাটাসে’। তখনই ছোট গল্প লেখা শুরু। ১৯৬৪ সালে ছোটদের জন্য লেখা তাঁর বই পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তিনি সফল শিশুসাহিত্যিক হিসেবে বরেণ্য হয়ে উঠেন। এরপর থেকে শিশুসাহিত্যই তাঁকে বেশি জনপ্রিয় করে। ১৯৯০ সালের ২৩ নভেম্বর যখন মারা যান সারা পৃথিবীর শিশুরা সে ঘটনা নিয়ে শোক প্রকাশ করে, বিশেষত ইংল্যান্ডে, যেখানে তিনি দীর্ঘদিন বাস করেছিলেন।
অনুবাদক পরিচিতি দীর্ঘদিন থেকেই লিখছেন। প্রথম গল্পগ্রন্থ নিঃসঙ্গ প্রকাশ পায় উনিশশ সাতষট্টি সালে। সত্তর সালে প্রকাশ পায় সাহিত্য প্রসঙ্গে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে কর্মরত থাকা অবস্থায়। তারপর বিদেশে চলে যান। বিশ বছর বাদে আবার লিখতে শুরু করেন। এখন গ্রন্থ সমালোচনা, নাটক, ছড়া ও কবিতা সবকিছু নিয়েই লিখতে ভালোবাসেন। লিখেছেন দুটি ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ। ভালোবাসেন বৃহৎ মহৎ সাহিত্যের অনুবাদ। তার প্রথম অনূদিত গ্রন্থ ১৯৮২ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস এর সরলা এরেন্দিরা ও অন্যান্য গল্প। মৌলিক ও অনুবাদ বইয়ের সংখ্যা ৫২। লন্ডন ও ঢাকায় বাস করেন।
Title
ড্যানি নামের ছেলেটা এবং তার মজার বাবা : বিশ্বসেরা চিরায়ত সাহিত্য
সালেহা চৌধুরী অনেক গ্রন্থ অনুবাদ করেছেন। উপন্যাস, ছােটগল্প, শিশুতােষ, জীবনী। তাবেদার রসুল বকুলের বাংলা প্রেমের কবিতার ইংরাজি করেছেন। এখন নাজনীন রহমানের ইংরাজি কবিতাগুলাের বাংলা করছেন । তিনি লন্ডনে ছয়মাস আর ঢাকায় ছয়মাস থাকেন। ব্রিটেনের স্কুল শিক্ষকতা থেকে অবসর নেবার পর ঢাকা লন্ডনে আসা যাওয়া সহজ হয়েছে। ঘর সংসারের ফাকে ল্যাপটপের জগতে খানিকটা সময় কাটান।