ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা প্রচলিত রীতির উপন্যাসের মতোই প্লটের বিস্তার নেই।নেই চরিত্রের ঘনঘটাও । কাঠামোটাও বলতে গেলে একদমই আনকোরা। বিদ্যমান ছকের সঙ্গে মোটেও খাপ থায় না এই কাহিনী সব দিক দিয়েই ব্যতিক্রম। বলা যায় বাংলা সাহিত্যে এমনটি দূর্লভই। আধুনিক প্রযুক্তিকে ঘিরে গড়ে ওঠে দুজন মানব-মানবী, দোলন ও শ্রাবনীর অম্ল-মধুর সম্পর্ক। পরস্পর বিরুধ সম্পর্কের মধ্যে আছে গভীর ভালোবাসা ও তীব্র ঘৃণা। অনুরাগ ও বিরাগ। ।আলো আর অন্ধকার। আছে পরস্পরকে একান্তভাবে পাবার ইচ্ছা ও অনীহা। সমাজকে উপেক্ষা করে প্রচলন ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্তহীনতা । আছে স্থিরতা ও অস্থিরতা । বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচল। আছে নানা মুখী টানাপড়েন। কখনও কখনও মনে হয় , এই ভালোবাসা চিরায়ত। আবার মূহুর্তের মধ্যে তা হয়ে পড়ে ভঙ্গুর। চোখের পলকেই সম্পর্ক বদলে যেতে সময় নেয় না। একই মানুষের মধ্যে বসবাস করে একাধিক মানুষ। আধুনিক জীবনের অনুপম ও অনুপুঙ্খ এক নিবিড় আলেখ্য। প্রকৃত অর্থেই জীবন থেকে নেওয়া। হালের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম মোবাইল ফোন,ফেসবুক ,ইয়হু,জিমেইল ইত্যাদি গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা রাখলেও একই সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া চিঠিকেও উপস্থান করা হয়েছে আশ্চর্য কুশলতায়। ভালোবাসার দুই মানুষ প্রায় প্রতিদিনই একে অপরকে অন্তর্জালে ,কখনো চ্যাটিংয়ে, কখনো দুরালোপনীতে , কখনো চিঠিতে অকপটে ব্যক্ত করেছেন মনের একান্তই না বলা কথা। আবার কখনো কখনো একই ভাবে প্রকাশ করেছেন অপরিমেয় ক্ষোভ,জ্বালা ও যন্ত্রনা। তাদেরকে কেন্দ্র করে আছে ছোট-খাট নানান চরিত্র ও পারিপার্শ্বিকতার ছোঁয়া। সব মিলিয়ে ‘ভালোবাসার দিনলিপি’তে প্রতিফলিত হয়েছে এই সময়ের জীবনালেখ্য। যে জীবনালেখ্য কখনো চেনা, আবার কখনো অচেনা মনে হতে পারে। পড়তে পড়তে দেখা দিতে পারে দ্বিধা ও দ্বন্দ। অব্শ্যই নতুন করে ভাবাবে। সাহিত্যের নন্দকাননে দুলাল মাহমুদের আনাগোনা আগে থেকেই। আপন খেয়ালে নানা বিষয় নিয়ে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। মূল গদ্য লিখে থাকেন। তাব তাঁর গদ্যে পাওয়া যায় পদ্যের সৌরভ্। লেখা পড়লে আলাদা ভাবে তাকে চিনি নিতে কষ্ট হয় না। রেখার প্রধান গুন, পাঠকে তিনি শুরু শেষ পর্যন্ত অনায়াসে টেনে নিতে পারেন। সহজ-সরল ভাষায় সাবলীলভাবে লিখতে পারাটা তাঁর মুন্সিয়ানা। তাতে থাকে একধরনের নান্দনিক সৌন্দর্য। কিন্তু নিজের সৃজনী ক্ষমতা খুব কমই ঘটিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে বোধকরি কাজ করেছে তার অপরিসীম আলস্য ও অমনোযোগিতা। যে কারণে তার গ্রন্থ সংখ্যা খুব একটা বাড়েনি। পরিচিতির বলয়টা হয়ে আছে সীমিত। এবারই প্রথম বড় পরিসরে কোনো কাজে হাত দিলেন তিনি। পাঠকরা তাকে নতুনভাবে চিনতে পারবেন ‘ভালোবাসার দিনলিপি’র মাধ্যমে। কাজটি নিঃসন্দেহে নতুন ধারার। যথেষ্ট সাহসিক ও ঝুঁকি পুর্ন। তাতে তিনি মোটেও দমে যাননি। লেখালেখির প্রয়োজনে তিনি ঝুঁকি নিতে একটুকুও দ্বিধা করেন না। একারনে তার লেখায় পাওয়া যায় বৈচিত্র্র্য। যা পাঠককে সহজেই আকৃষ্ট করে। প্রকাশক