ফ্ল্যাপে লিখা কথা ভালোবাসাকে আমি সবচেয়ে গুরুত্ব দেই। সে ভালোবাসা কেনো নারীর প্রতি পুরুষের বা পুরুষের প্রতি নারীর নয়; নয় সকল বৈধ সম্পর্কের জড়িত চরিত্রগুলোর প্রতি কিংবা তথাকথিত ‘অবৈধ’ সম্পর্কিত নর নারীদের বরং ‘মানুষের প্রতি মানুষের নানাবিধ সম্পর্কে’র ঘূর্ণনে আমরা প্রতিনিয়তই ঘুরপাক খাচ্ছি। এই ঘুরপাক খাওয়া জীবনের এক বাস্তব চরিত্র ‘গুলবাহার’। কীরকম অসংলগ্ন একটি সম্পর্কের চড়েয় কতটা অবদমিভাবে বেঁচে আছেন, অতঃপর একের পর নদী ভাঙনের করাল গ্রাসে সর্বস্ব হারিয়ে টিকে থাকার সংগ্রাম এবং এ সবকিছু সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকে ‘মোবারক’ এর উপস্থিতি। যার প্রতি অুনরক্তি বা ভালোবাসা সমাজের চোখে পুরোটাই অসংলগ্ন বলে বিবেচিত। রঙিন জীবনের হাতছানি সত্ত্বেও কারো কারো জীবনটা সাদামাটাই থেকে যায়, কেউ বা আবার অস্বচ্ছলতার দোহাই দিয়ে বেছে নেয় কালো জীবন কারো কাছে অর্থই সব কালিমা লেপন করে জীবনকে রাখে ঝকঝকে সাদা। এমনি বৈষম্যময় জীবন নিয়ে গল্প ‘সাদা কালো রঙিন জীবন’ । ‘মা’ হয়ে নারী জাতিকে সার্থক যারা মনে করে মিলি রেহমান তাদের দলে পড়ে না। স্বচ্ছলতা এবং স্বাধীনতা পেয়ে তথাকথিত আধুনিক জীবনে অভ্যস্ত অক্ষি, যার কাছে ছেলেবন্ধু মেয়েবন্ধু বলে আলাদা কিছু নাই। তার ধারণাকে মিথ্য প্রমাণ করে বন্ধুর লোলুপদৃষ্টি পর্যবসিত হয় তারই উপর সমস্ত পুরুষের উপর বিরূপ মন নিয়ে নিজের মতো করে বেঁচে থাকার মুহূর্তে এক জীবন ভালোবাসা নিয়ে কাছে আসে সজল। যাকে অক্ষি ফেরাতে পারেনি কিছুতেই।
আলিমের কাছে শিউলি যতখানি ছিল ‘বাড়ির বৌ’ তথখানি ‘নিজের বৌ’ ছিল না। একই পরিবারে ভিন্ন চরিত্রে দেখা গেছে সম্পর্কের মধুরতা। একটি যৌথ পরিবারের নানাবিধ সম্পর্ক নিয়ে ‘সম্পর্ক’ গল্পটি লেখা। যার মধ্যে পাঠক খুঁজে পাবেন তারৈই সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিকে, কখনো বা নিজেকে। সম্পর্ক যা-ই থাকুক, তাতে ভালবাসা থাকাটা জরুরি। যে ভালোবাসা মানবতার কথা বলে। আর যেখানে ভালোবাসা থাকবে সেখানে সম্পর্কটা হবে স্বার্থহীন,শর্তহীন।
সূচিপত্র * একটি অসংলগ্ন অনুরক্ত * সাদা-কালো-রঙিন জীবন * সম্পর্ক
Meherun Necha Ruma তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। স্কুলের বার্ষিক ম্যাগাজিনে আমার লেখা প্রথম একটি ছোটগল্প ছাপা হয়েছিল। তখন থেকেই শুরু। কেউ যাতে না দেখে সেজন্য সেসব লেখা লুকিয়ে রাখতাম। এরপর ২০১১ সাালে দৈনিক সমকাল প্রত্রিকায় মুক্তমঞ্চ পাতায় একটি লেখা প্রকাশের মাধ্যমে আমি পুরোপুরি লেখার জগতে প্রবেশ করি। তখন সমকালের প্রায় প্রতিটি ফিচার পাতায় আমি লিখতাম। এবং সাথে সাথে অসংখ্য গল্প লিখি। গল্পগুলোও পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। এরপর বই প্রকাশের চিন্তা আসে মাথায় এবং ২০১২ সালে আমার প্রথম গ্রল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। বইটির নাম “যে জীবন হয়নি যাপন”। নারী লেখকের প্রতিবন্ধকতা: একজন লেখক শুধুই লেখক- সে নারী হোক,কিংবা পুরুষ। কোন নারী লেখালেখি শুরু করতে গেলেই তাকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হতে হয়। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। প্রথম প্রতিবন্ধকতাই আসে তার পরিবার থেকে। আর পরিবারের সহযোগিতা না থাকলে নারীর পক্ষে লেখক হয়ে ওঠা সত্যিই দূরহ ব্যাপার। আমি সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পরিবেশ থেকে নিজের প্রচেষ্টাতেই লেখালেখি জগতে আসি। আমার পরিবারের মধ্যে কাউকে লিখতে দেখিনি বা অনুপ্রাণিত হইনি। বরং আমার বাবার ভয়ে আমি পাঠ্যবইয়ের বাইরে কোন বই পড়লেও সেটি লুকিয়ে পড়েছি। বাবার কাছে পাঠ্যবইয়ের বাইরে গল্প-উপন্যাস পড়া, ছবি আঁকা ,লেখালেখি করা এসব ছিল পড়া ফাঁকি এবং সময় নষ্টের মতো ব্যাপার। বিয়ের পর নতুন একটি পরিবারে আসি তখন আর এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা আসে। বিশাল যৌথ পরিবারে নিজের লেখাপড়ার সময়টুকু খুব কমই পেতাম। যখন পত্রিকার কাজে বাইরে বের হতে হত তখন স্বভাবতই কিছু প্রতিবন্ধকতা আসে। কোন নারী ইচ্ছে আর প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও লেখালেখির জগতে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। ঘর সামলে তারপর তাকে লেখক হতে হয়। আমার মাথায় যখন কোন গল্পের প্লট ঘুরতে থাকে সেই সময় আমার বাচ্চার স্কুলের পড়া তৈরি করে দিতে হয়, কিংবা রান্না করতে যেতে হয়,মেহমানদারি করতে হয়। আমি কষ্ট পাই সময়মত লিখতে না পেরে। একজন লেখক আগে লেখক, পরে অন্যকিছু। আমি আগে সবকিছু সামলে নিয়ে পরে লেখক হই।আর বই প্রকাশের ক্ষেত্রেও নারীদের অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। প্রায়শই তারা প্রকাশকদের কাছে প্রতারনার শিকার হন। প্রকাশকদের অসহযোগিতার কারণেও অনেক নারীই লেখক হয়ে ওঠার আগেই ঝরে পড়েন। প্রতিবন্ধকতা কিভাবে কাটিয়েছি: এখনও লড়াই করে যাচ্ছি নিরন্তর। রোজ ভাবি থেমে গেলে চলবে না, আমাকে এগিয়ে যেতে হবে। ১২ মার্চ, ১৯৮২খ্রি. (২৮ ফাল্গন, ১৩৮৯ বঙ্গাব্দ) বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের মাস্টারবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষক পিতা মাে: আনিসুর রহমান এবং মাতা ফরিদা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে মেহেরুন নেছা রুমা কনিষ্ঠ সন্তান । গ্রামের কাদামাটি-সমৃদ্ধ মেঠো পথে পায়ে হেঁটে স্কুল, কলেজ, অতঃপর এইচএসসি’র পরে ঢাকায় পদার্পণ । জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। | ‘সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে বিএসএস (অনার্স) | এবং এমএসএস সম্পন্ন করেন ।