“অন্য কোথাও অন্য কোনোখানে" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ জীবনের কাছে পােড় খাওয়া প্রাপ্তমনস্ক দুজন মানুষ। শাহেদ আর তিথি ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়ে পরস্পরের সঙ্গে। শাহেদ নিঃসঙ্গ । ভালােবাসার সংসার টেকেনি। তার, বেদনায় ভরে আছে জীবন। পেশাগত জীবনে উচ্চপদে অধিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও এক শিল্পীমন নিয়ে সে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। উদাসীন, বিষন্ন, একা। খুঁজে বেড়ায় জীবন ও জগতের অর্থ, হাজার বছর ধরে বয়ে আসা জীবনের পরম্পরা। তারই। প্রতীকে উপন্যাসে উপস্থিত হয় বুড়িগঙ্গার এক মাঝি, যে আসলে এ-কালের নয়, বরং বয়ে নিয়ে এসেছে। পলিবাহিত এই জনপদের দীর্ঘ স্মৃতি ও ইতিহাস। একইভাবে আরাে দুটো চরিত্রের দেখা মেলে- দুই বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা- যারা গভীর মমতার সঙ্গে লালন করে। বৃক্ষজগৎকে। তিথি উচ্ছল, প্রাণবন্ত, রূপবতী। সেও ভালােবেসেই বিয়ে করেছিল তার স্বামীকে। কিন্তু সংসার জীবনে প্রেমটা আর থাকেনি। একই ঘরে। দুজন, দুই জগতের বাসিন্দা। এই দুজন পােড় খাওয়া। মানুষের প্রেম কোনাে তাৎক্ষণিক আবেগ থেকে নয় বরং পরিণত বয়সের পরিণত মনের গভীর জীবনােপলব্ধি থেকে উদ্ভূত। শাহেদের কাছেই জেনে নেয় তিথি, আদিম সমাজে যখন কোনাে বিয়েপ্রথা বা পরিবারপ্রথা ছিল না, তখনও প্রেম হতাে, সন্তানের জন্ম হতাে। প্রেমই মৌলিক, বিয়ে নয়- এ কথা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না তিথির। তারপর? বাকিটুকু জানা যাবে উপন্যাসের ক্রমপরিণতিতে।
Ahmad Mostofa kamal, জন্ম ১৪ ডিসেম্বর ১৯৬৯। পড়াশোনা করেছেন পাটগ্রাম হাইস্কুল, মানিকগঞ্জ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএসসি, এমএসসি, এমফিল এবং পিএইচ.ডি। পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ কর্মরত। কিন্তু যাবতীয় বৈষয়িক সাফল্যের সম্ভাবনাকে নাকচ করে শুধুমাত্র লেখালেখিকেই তিনি জীবনের সকল স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছেন। লেখালেখির শুরু ’৯০ দশকের গোড়া থেকেই। প্রথম গল্পগ্রন্থ দ্বিতীয় মানুষ প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর আরো সাতটি গল্পগ্রন্থ, ছ’টি উপন্যাস এবং চারটি প্রবন্ধগ্রন্থ বেরিয়েছে। এটি তাঁর প্রথম প্রবন্ধ সংকলন। তাঁর চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ্য লাভ করেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩’ পুরস্কার। দ্বিতীয় উপন্যাস অন্ধ জাদুকর ভূষিত হয়েছে ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার’ ২০০৯-এ, এবং তৃতীয় উপন্যাস কান্নাপর্ব ২০১২ সালের শ্র্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে লাভ করেছে ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ২০১৩।