জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলা নিয়ে বহুমাত্রিক কাজ হয়েছে। বেরিয়েছে অসংখ্য গ্রন্থ। কিন্তু আলোচ্য গ্রন্থে শুধু কবির ভাবনার পুষ্প-বৃক্ষ-লতা-গুল্মগুলোর একটি সচিত্র রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। শুধু এই একটি কাব্যগ্রন্থ থেকেই অনুমেয় কবি তাঁর ভাবনার ভান্ডারে কত বিচিত্র অনুষঙ্গ এনে জড়ো করেছিলেন। কত বিচিত্রতায় ভরিয়ে তুলেছিলেন তাঁর প্রিয় রূপসী বাংলাকে। আর এভাবেই রূপসী বাংলা হয়ে ওঠে জীবনানন্দ দাশের সমগ্র কবিকৃতিরই মুখচ্ছবি। আমরা সেখানে খুঁজে পাই আত্মপরিচয়ের শিকড়কাহিনী। জন্মমাটির প্রতি ভালোবাসার এক মহৎ সঙ্গীত এখানে উদ্ভাসিত। জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলার পুষ্প-বৃক্ষ অ্যালবামে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থে উল্লিখিত প্রায় ৭০টি ফুল-ফল-বৃক্ষ ও লতা-গুল্মের ছবি এবং সংশ্লিষ্ট উদ্ধৃতি স্থান পেয়েছে। একটিমাত্র কাব্যগ্রন্থে বিশাল উদ্ভিদজগতের এমন বিস্তার রীতিমতো বিস্ময়কর। অতি ক্ষুদ্র একটি বুনোফুল থেকে শুরু করে সুবিশাল বট-অশত্থও তাঁর অন্তর্দৃষ্টি এড়ায়নি। বর্তমান এবং পরবর্তী প্রজন্ম যেন পলিমাটির এসব আত্মজকে খুব সহজেই চিনতে পারে, সে লক্ষ্য থেকেই এই অ্যালবাম। আলোকচিত্রের পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতিগুলো এই গ্রন্থের একটি উল্লেখযোগ্য দিক। একই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অধিকাংশ পুষ্প-বৃক্ষের সমনাম এবং বৈজ্ঞানিক নামগুলো। এ গ্রন্থ একজন কৌতূহলী প্রকৃতিপ্রেমিক থেকে শুরু করে গবেষক-লেখকেরও মনের খোরাক জোগাবে।
জন্ম মাতুলালয়ে, ৩০ অক্টোবর। বাবা : একেএম ফজলুল করিম, মা : মনোয়ারা বেগম। গ্রাম : লক্ষণপুর, পোস্ট : ভবানীজীবনপুর, উপজেলা : বেগমগঞ্জ, জেলা : নোয়াখালী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা। একযুগেরও বেশি সময় দৈনিক প্রথম আলোয় ‘প্রকৃতি’ কলামে লিখছেন। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৮। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : বাংলাদেশের নদী, বর্ণমালায় বাংলাদেশ, বিশ্বের সেরা দর্শনীয় স্থান, বাংলাদেশের মেলা, ঘুরে আসি বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ফুল ও ফল, জীবনের জন্য বৃক্ষ, বিপন্ন প্রজাতির খেরোখাতা, প্রকৃতি ও প্রাণসম্পদ (সম্পাদনা), বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, ঋতুর রঙে ফুলের শোভা, আমাদের সবুজ বন্ধুরা, ভোরের ফুল সন্ধ্যার পাখিরা, আমাদের পার্ক ও উদ্যান, ছয় রঙের বাংলাদেশ, বাংলার শত ফুল, জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলার পুষ্প-বৃক্ষ ইত্যাদি। পরিবেশসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৩ সালে কাজী কাদের নওয়াজ স্বর্ণপদক, ১৪০৮ ও ১৪১০ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১১ সালে এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। নেশা ছবি তোলা ও ভ্রমণ।