ফ্ল্যাপে লিখা কথা বাংলাদেশ বলতে কেবল ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনকারী ভূখণ্ড নির্দেশ করে এ পুস্তক রচিত হয়েছে। লিখতে গিয়ে মাত্র দু’হাজার চারশ বছরকে গুরুত্ব দেয়া হয়। সম্প্রতি সেটিকে আরও দেড় হাজার বছর পিছিয়ে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আর এ পুস্তকে উত্থাপিত হয়েছে তার চেয়েও ঢের ঢের গুন বেশি সময়ের কথা। অযথা অপ্রাসঙ্গিক পর্যায়ে ভারতীয় ইতিহাস নিয়ে টানাটানি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা হয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছে স্বাধীনতার মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে দেশের মূল চরিত্রচিত্রণ তুলে ধরার। এ পুস্তক তাই কেবলই মুক্ত বাংলার ইতিহাস।
পুস্তকটির বর্ণনায় কেবল রাজনৈতিক কালানুক্রম ভিত্তিক ঘটনাপঞ্জি নয় বরং ভূতাত্তিক ,নৃতাত্তিক, বসতি বিস্তার থেকে শুরু করে বর্তমান লোকায়ত জীবনে উত্তরণের যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তদুপরি পুরনো তথ্যগুলোকে মুক্তবাংলার মাটিতে সর্বশেষ আবিষ্কৃত ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত তথ্যদির ভিত্তিতে যাচাই বাছাই করা হয়েছে।
আশা করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ মননশীল পাঠক মাত্রই একনাগাড়ে পড়ে জাতীয়তাবাদের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করাসহ প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ার দিকনির্দেশনা লাভ করতে পারবেন। প্রত্যাশার বিন্দুমাত্র পূরণ হতে দেখলেও নিজেদের ঋণমুক্ত গণ্য করব।
বহুমাত্রিক বিষয় নিয়ে সমকালিক লেখালেখির অঙ্গনে হাতেগােণা যে ক’জন লেখিয়ে সরব তাদের মধ্যে মােহা. মােশাররফ হােসেন একজন। দীর্ঘকাল সরকারি চাকুরিতে নিয়ােজিত থাকাকালীন যে লেখালেখি শুরু করে ছিলেন তা অবসর জীবনেও ধরে রেখেছেন। শুরু করেছিলেন পুরাতত্ত্ব ও মূর্তিতত্ত্ব দিয়ে। আর বর্তমানে নিরলস কাজ করছেন ধর্মতত্ত্ব, জাতিতত্ত্ব, পর্যটন প্রভৃতি নিয়ে। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বর্তমানে তাঁর প্রকাশিত বই-এর সংখ্যা ৪২টি। নিচে তার কয়েকটি উলেখযােগ্য বই-এর তালিকা দেয়া হলাে* পুরাতত্ত্ব উদ্ভব ও বিকাশ * বেড়াই বাংলাদেশ। * সুন্দরবন : বৈচিত্র্যের অপর নাম। * হিন্দু জৈন বৌদ্ধ মূর্তিাত্ত্বিক বিবরণ * বৌদ্ধ এতিহ্য * ইতিহাসের নওগাঁ ঐতিহ্যের নওগাঁ * উৎসের সন্ধানে-চন্দ্রদ্বীপ বাকলা বরিশাল। * প্রসঙ্গ পুরাকীর্তি * এক দেশ অনেক মানুষ। * Personality of Bangladesh * Mahasthan : Anecdote to History * Paharpur : Anecdote to History * Mainamai-Lalmai : Anecdote to History সম্প্রতি (খ্রি. ২০১১ সাল) জনাব হােসেন সম্পাদনার কাজেও নিয়ােজিত রয়েছেন। তাঁর সর্বশেষ সম্পাদিত বই এশিয়াটিক সােসাইটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত The Archaeological Heritage of Bangladesh. তার কিছু লেখা ইতিমধ্যে বিদেশি ভাষায়ও অনূদিত হতে শুরু করেছে।