"যে গল্পের শেষ নেই"বইটির প্রথমের কিছু কথা: ফরমাস পেয়েছিলাম এমন গল্প বলতে হবে যে-গল্পের শেষ নেই। এ-হেন গল্প। অবশ্য অনেক আছে, কিন্তু তার মধ্যে বেশির ভাগই ফাঁকির গল্প। অথচ যার কাছ থেকে ফরমাস তাকে কোনােমতেই ফাঁকি দেওয়া যায় না। ফাঁকিও থাকবে না, শেষও থাকবে না, এমনতরাে গল্প শুধু একটাই। সেটা হলাে মানুষের গল্প। কতাে কোটি বছর আগে শুরু হয়েছে এই গল্প তার খাঁটি হিসেব করাই দায়, আর আজো কোটি কোটি খবরের কাগজের পাতায় সরগরম এই গল্প। আরাে অনেক কোটি খবরের কাগজ ছাপিয়েও এ-গল্প শেষ করা যাবে না। গল্পটা বেড়েই চলেছে। চলবেও। তাই শুরু করতে গেলাম মানুষের গল্প। কিন্তু শুরু করতে গিয়ে দেখি বড় মুশকিলঃ মানুষের গল্প বলতে গেলে মানুষের কথা থেকে শুরু করা যায় না। কেননা, এককালে পৃথিবীতে মানুষের টিকিটি খুঁজে পাবার জো ছিল না। আবার তারও আগে-ঢের আগে-দুনিয়ার কোথাও চিহ্ন ছিল না পৃথিবী বলে কোনাে কিছুর। ভয় পাবার ভান করলাম, বললাম, “থাক থাক্। তােমাকে আর অতােখানি কষ্ট করতে হবে না। গল্প বলতে আমি রাজি হলাম। ‘বেশ, মেয়েটি আমার খাটের ওপর জাঁকিয়ে বসলাে আর বললাে, তাহলে শুরু করাে তােমার গল্প। আমি বললাম, ‘শুরু তাে যা-হােক একটা করে দেওয়া যায়। কিন্তু ভাবছি, শেষ করবাে কেমন করে? | মেয়েটি অম্লান বদনে বললাে, ‘শেষ করা নিয়েই যদি অতাে ভাবনা তাহলে শেষ না হয় না-ই করলে!
Debiprasad Chattopadhyaya (জন্ম: ১৯ নভেম্বর, ১৯১৮ - মৃত্যু: ৮ মে, ১৯৯৩) ভারতের একজন প্রখ্যাত মার্কসবাদী দার্শনিক। তিনি প্রাচীন ভারতের দর্শনের বস্তুবাদকে উদ্ঘাটন করেছেন। তার সবচেয়ে বড় কাজ হল লোকায়তের প্রাচীন দর্শনকে তিনি বিরুদ্ধপক্ষের বিকৃতি হতে রক্ষা করেন এবং তা সংগ্রহ ও প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও তিনি প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানের ইতিহাস ও বিজ্ঞানের পদ্ধতি সম্পর্কেও গবেষণা করেছেন বিশেষ করে প্রাচীন চিকিৎসক চরক ও শ্রুশ্রুত সম্পর্কে।