লেখকের কথা নানা চমকপ্রদ কাহিনী নিয়ে এ গ্রিক পুরাণ লিখিত। মূলত এডিথ হ্যামিল্টনের মিথকাহিনী অবলম্বনে এটি রচিত। কাহিনীগুলো ঘটনার ঘনঘটায় পরিপূর্ণ। এ থেকে সাহিত্যের অমৃত রসের আস্বাদন লাভ করা যাবে আশা করা যায়। এ কাহিনীমালা বিশ্বাস করার প্রয়োজন নেই। এগুরো ছিলো প্রাচীন গ্রিকদের ধর্ম বিশ্বাস। বর্তমানে গ্রিস দেশে এ বিশ্বাস তিরোহিত। ইংরেজি ভাষার ব্যবহৃত প্রচুর শব্দ এ কাহিনীমালা হতে উদ্ভুত। প্রচুর সংখ্যক শব্দের শিকর সন্ধান করতে হলে এ কাহিনীমালা পড়তে হবে। এতে আছে বিশ্বজগৎ সৃষ্টির কাহিনী। বিশৃঙ্খলা, অপরিমেয়খাদ, নিষ্ঠুরতা, অন্ধকার ও বন্যতার উপস্থিতি ছিলো আগে। এগুলো থেকে জন্ম নিলো দুটি শিশু যথা- রাত ও গভীরতা। এরপর উদ্ভব হলো প্রেমের। প্রেমের সন্তান হলো শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য। প্রেমের আর এক সন্তান আলো। এরপর সৃষ্টি হলো অচলা বসুধা। এরপর সৃষ্টি হলো টাইটানদের। সৃষ্টি হলো ক্ষুদে দেবতা, জলদেবতা, পাতালরাজ্য, পার্থিব ক্ষুদে দেবতা। সৃষ্টি হলো অজস্র দেব-দেবী। আমাদের উপমহাদেশি মিথকাহিনীতে আমরা সাক্ষাৎ পাই তেত্রিশ কোটি দেব-দেবী এবং সমভাবাপন্ন তবে অপেক্ষাকৃত ম্রিয়মায় আরও প্রচুর সংখ্যক প্রাণির। এরা হচ্ছেন- বিদ্যাধর, অপ্সর, কিন্নর, গন্ধর্ব, পিশাচ, গুহ্যক, সিদ্ধ, ভূত, যক্ষ ও রক্ষ। তেমনই গ্রিক মিথকাহিনীতে আমরা সাক্ষাৎ পাই টাইটানদের, সাইক্লপদের, গর্গনদের, মিনিটরের সার্বেরাসের এবং তাদৃশ প্রচুর প্রাণির। এতে আছে, ভীতি, শংকা, রোমান্স, মৃত্যু, অদম্য সাহস, অভিযাত্রা, প্রেম, প্রীতি ভালোবাসা, যৌনতা, ফুল। আছে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ কাহিনীর মতো ট্রয় যুদ্ধকাহিনী। ব্রহ্মা, ইন্দ্র, মহাদেব, বরুন, সূর্য, গণেশ, দূর্গা, কালী, স্বরসতী প্রভৃতি দেব-দেবীর মতো আছে জিউস, পসিডন, হেডিস, হেস্টিয়া, হিরা, এরিস, এথিনা, এপোলো, আফ্রোদিতি, হার্মিস, আর্টিমিস, হেফাস্টুস, প্রমিথিউস, আইও, ইউরোপা, পলিফেমাস, কিউপিড, সাইকি, সিইক্স, এলসিয়ন, পিগমেলিয়ন, গ্যালাটিয়া, বসিস, ফিলেমন, এনডিমিয়ন, ডাফনি, আলফিয়াস, আরেথুসা, ফিটন, বেলেরোফন, ওটাস, এফিয়ালটিস, ডেডেলাস, পারসিউস, থিসিউস, হারকিউলিস, আটলান্টা প্রভৃতি অজস্র।
এ লেখায় প্রমিত বানানারীতি অনুসৃত হয়েছে। ১৯৩৫ সালের প্রমিত বানানরীতি ও তদোত্তর সংশোধনি অনুযায়ি এর বানান প্রণালী নির্দিষ্ট হয়েছে। ১৯৩৫ সালের প্রমিত বানানরীতিতে ঈ, ী, ঊ, ূ বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সংস্কৃত শব্দ গুলোর জন্য এ দুটো বর্ণ (কার সহ) সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেখানে এ শর্ত প্রযুক্ত যে, পাণিনি কর্তৃক প্রকরিত পদাংশে দীর্ঘস্বর না থাকলে সংস্কৃত শব্দেও দীর্ঘস্বর ব্যবহৃত হবে না। যথা- অনু-যা-ণিনি= অনুযায়ি (অনুযায়ী নয়), কর্ম-চর-কর্তৃ-ণিনি = কর্মচারি (কর্মচারী নয়), আগম-ণিনি = আগামি (আগামী নয়), উৎ-আস-কালচ = উদাসিন (উদাসীন নয়), উৎ-হা-ড = উর্ধ (ঊর্ধ্ব নয়), ঋণ-ইন = ঋণি (ঋণী নয়), আ-কৃ-কর্ম-ক্ত = আকির্ণ (আকীর্ণ নয়) প্রভৃতি।