জগদীশের বাড়িতে প্রায় শনিবার সন্ধেবেলায় আমাদের এক আড্ডা বসে। আমরা নাম দিয়েছি 'শনিচক্র'। তিন- চারজন বন্ধু জমায়েত হই সন্ধেবেলায়। চা, মুড়ি, তেলেভাজা খাই আর নিছক গল্প করি। সে সব গল্পের কোনও ঠিক ঠিকানা থাকে না। যেদিন যাতে মেতে উঠি তাই নিয়েই গল্প চলতে থাকে। হাসির গল্প হলে রাখহরি মাতিয়ে রাখে, খুনোখুনি ডিটেকটিভ গল্প হলে পল্লব আমাদের হাঁ করিয়ে রাখতে পারে। আর ভবিষ্যতের মানুষের চেহারা কেমন হবে, তার কোন কোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কীভাবে বদলাবে-এইসব গল্প জুড়লে অনীশ একেবারে আতঙ্ক ধরিয়ে দেয় আমাদের। তা সেদিন বিজন দত্ত হঠাৎ আত্মা আছে কি নেই-তার গল্প জুড়ে দিল। তার হাতে একট বই ছিল। ইংরেজি বই। তাতে নাকি মরণের পর কোন কোন মানুষের কী গতি হয়েছে তার সম্পর্কে কয়েকটা কাহিনী ছিল। আত্মা থেকে প্রেতাত্মার কথা উঠল। আমরা প্রচণ্ড উৎসাহ পেলাম গল্পে, নানারকম হাসি-তামাশা চলতে লাগল। এমন সময় ছদ্মবেশী বাবু এসে হাজির। ভদ্রলোকের নাম পরিতোষ। আমরা তাঁকে ছদ্মবেশি বাবু বলি। বলি, কেননা ভদ্রলোকের বয়েস ষাট হয়ে গেছে, কিন্তু চেহারাটা পঞ্চাশের তলায় ধরে রেখেছেন। চমৎকার স্বাস্থ্য, দেখতেও সুপুরুষ, মানুষটিও চমৎকার। পয়লা নম্বরের গল্পবাজ। পরিতোষবাবু আসতেই আমরা তাঁকে খাতির করে বসিয়ে বললাম, আজকের আসরে আমরা আত্মা, প্রেতাত্মা, ভূত নামিয়েছি। এ সম্পর্কে তিনি কী বলেন? একটা কথা বলে নেওয়া দরকার। পরিতোষবাবু বা আমাদের পরিতোষদা নানা ঘাটের জল খাওয়া মানুষ। জীবনে তিনি কত কী করেছেন, কত জায়গায় ঘুরেছেন তার ইয়ত্তা নেই। প্রচুর অভিজ্ঞতা।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।