“জিন ও ফেরেশতাদের বিস্ময়কর ইতিহাস” বইটির প্রথম অংশের কিছু কথাঃ প্রথম পর্ব জিন জাতির ইতিবৃত্ত ‘জিন' বলতে আমরা কি বুঝি? হযরত ইবনে দুরাইদ (রহ) বলেছেনঃ মানুষ যেমন স্বতন্ত্র এক সৃষ্টি তেমনি জিন জাতি মানুষের থেকে আলাদা এক সৃষ্টি। জিন শব্দের অর্থ গুপ্ত, অদৃশ্য, লুক্কায়িত, আবৃত ইত্যাদি। আল কুরআনে ব্যবহৃত জিন্নাহ, জিন ও জ্বান বলতে একই জিনিস বােঝালেও ‘জিন' হচ্ছে জিন্নাত বা জিন জাতির এক বিশেষ প্রজাতি। (তথ্যসূত্র : মুহাম্মদ বিন হাসান আদী, উমাম-উশ-শুআরা আল-লুগাত, মৃত্যু ৩২১ হিজরী) কারা জিন?আল্লামা মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহিদ বাগদাদী তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, হযরত আবূ উমার আয-যাহিদ বলেছেনঃ জিন্নাত বা জিন জাতির কুকুর ও ইতর শ্ৰেণীকে বলা হয় জিন। ‘জান' বলতে কি বুঝায়? ইবরাহীম বিন সাঈদ আবু ইসহাক মুহাদ্দিসে আজীম বাগদাদী বর্ণনা করেন, হযরত জাওহারী বলেছেন ঃ ‘জান’ হচ্ছে জিন জাতির আদিপিতা। কেন জিনকে জিন বলা হয়? হযরত ইবনে আকীল হাম্বালী (রহ) বলেছেনঃ জিনকে জিন বলা হয় কারণ তারা লুকিয়ে থাকে ও চোখের আড়ালে থাকে বলে। জিন কি শয়তান? আল্লামা ইবনে আকীল বলেছেন : শয়তানরা হচ্ছে এক ধরনের জিন যারা আল্লাহর অবাধ্য এবং এরা (অভিশপ্ত) ইবলীসের বংশােদ্ভূত ।(তথ্যসূত্র: কিতাবুল ফুনুন) বইটির সূচিপত্রঃ * জিন জাতির ইতিবৃত্ত * জিন’ বলতে আমরা কি বুঝি? * কারা জিন? * জিন’ বলতে কি বুঝায়? * কেন জিনকে জিন বলা হয়? * জিন কি শয়তান? * মারাদাহ কাদের বলে? * জিন জাতি কত শ্ৰেণী? * জিন সম্পর্কে মুসলমানদের ঈমান। * কাদরিয়াদের অভিমত * জিন জাতির উদ্ভব * মানব সৃষ্টির ২০০০বছর পূর্বে জিনদের সৃষ্টি * মানব বাসের আগে জিনেরা,পৃথিবীর যমিনে বসবাস করত আদি জিনের বাসনা * কখন থেকে ইবলীস পৃথিবীতে। বাস করছে * আদম-সৃষ্টিতে ফেরেশতাদের আপত্তির কী কারণ * জিনের প্রতি রাসূল প্রেরণ * জিন জাতির সৃষ্টির দিন * কে কার আগে * জিন এর মূল উপাদান কি ... আগুনে সৃষ্ট জিনকে কি করে আগুন দিয়ে জ্বালাবে? * জিন জাতির চেহারা সুরত * জিনদের দেখা কি সম্ভব? * জিনদের দেখতে কেমন? * আগুন দিয়ে সৃষ্টি জিন * জাহান্নামের সত্তর ভাগের এক ভাগ দিয়ে সৃষ্টি জিন * জিন ও শয়তান সূর্যের আগুন থেকে সৃষ্টি * জিন কত প্রকার * জিন তিন প্রকার * কোনাে কোনাে কুকুরও জিন * জিনদের রূপ পরিবর্তন করা * কালাে কুকুর নামাযের সামনে গেলে। * জিনরা কী ধরনের সুরত ধরতে পারে * জিন হত্যার নিয়ম * জিনদের সুরত পরিবর্তনের কারণ । জাদুকর ‘গইলান’ জিন মানুষ গইলান জিন দেখলে কি করবে? * শয়তানকে ছুরি মারার পর * খর্বকায় জিন * কুকুর ও উটের সুরতে জিন। সাপের সুরতে জিন * জাদুকর জিনদের থেকে বাঁচার উপায় * জিনদের খানাপিনা জিনরা যেসব খাবার খায় * বদর যুদ্ধে ফেরেশতাদের কমাণ্ডার * বদর যুদ্ধে ফেরেশতাদের ঘােড়ার আলামত * হুনাইন যুদ্ধে ফেরেশতা গুপ্তচরের গ্রন্থি কেটে দেন * জিব্রাঈল সকল ফেরেশতা সম্পর্কে অবগত নন * স্বপ্নের তাবীরকারী ফেরেশতা * ফেরেশতার কান থেকে হাশুলি পর্যন্ত দূরত্ব * ফেরেশতাদের শ্বাস-প্রশ্বাস ও তাসবীহ * ফেরেশতাদের সৃষ্টি করার কারণ। * যে শব্দ দ্বারা শয়তানকে ধমকানাে হয় * ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ইবাদত * ওহী নাযিলের অবস্থা * ওহী অবতরণের সময় ফেরেশতা * যমীন থেকে যাবারকালে * ফেরেশতার ওযীফা * ফেরেশতাদের নামায ও তাসবীহ * আসমানের ফেরেশতাদের তাসবীহ * সারিবদ্ধ ফেরেশতাদের তাসবীহ * সাত আসমানের ফেরেশতাদের আকৃতি * একা নামায আদায়কারী ফেরেশতা * প্রথম সারিতে ফেরেশতারা নামায পড়েন * ফজরের নামায ফেরেশতাদের * পূর্ব পশ্চিমের ফেরেশতা ও তাদের অযীফা * আনন্দ ও নিরানন্দ প্রকাশকারী ফেরেশতা * আকাশের দরজায় ফেরেশতার আহ্বান * তাছবীহর আহ্বানকারী ফেরেশতা । * জিকিরের মাহফিল অন্বেষণকারী ফেরেশতা * ডানাবিশিষ্ট ফেরেশতা * রিযিক প্রশস্ততার আহ্বানকারী ফেরেশতা * হাজীদের জন্য দোয়াকারী। * মানুষের ভাল-মন্দ প্রকাশকারী ফেরেশতা * পরকালের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিকারী ফেরেশতা * জিব্রাঈলের থেকে জন্মগ্রহণকারী ফেরেশতা • * ফেরেশতাদের ইবাদতগৃহের বর্ণনা " * হজ্জের দিন ফেরেশতারা হজ্জ করেন * আদমকে কাবাঘর তাওয়াফ করার নির্দেশ * আকাশে ফেরেশতাদের নামায ও তাওয়াফ * হেরেমের সীমা পর্যন্ত পবিত্র হওয়ার কারণ * বদর যুদ্ধের ফেরেশতাদের মর্যাদা
আল্লামা ইবনে কাছীর রহ. এর জন্ম ১৩০১ খ্রিস্টাব্দে বসরার (বর্তমান সিরিয়া) মামলুক সালতানাতে। তার পুরো নাম ইসমাঈল ইবন উমর ইবন কাসীর ইবন দূ ইবন কাসীর ইবন দিরা আল-কুরায়শী হলেও তিনি ইবনে কাছীর নামেই সমধিক পরিচিত। তিনি কুরায়েশ বংশের বনী হাসালা গোত্রের সন্তান। তার জন্মস্থান এবং জন্ম তারিখ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তার শিক্ষাজীবন এবং শৈশব নিয়েও খুব বেশি তথ্য জানা যায় না। তবে মামলুক সালতানাতেই তিনি বড় হয়েছেন, এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদগণ নিশ্চিত। কৈশোরে তিনি ফিরিঙ্গীদের যুদ্ধ, ক্রুসেড, তাতারদের আক্রমণ, শাসকদের অন্তর্কোন্দল, বিদ্রোহ করে ক্ষুদ্র রাজ্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াস, দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানির মতো যাবতীয় দুর্যোগ আর দুর্দশা দেখে দেখে বড় হয়েছেন। কর্মজীবনে ইবনে কাছীর রহ. উন্মুসসা’ ওয়াত তানাকুরিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেছেন। কুরআন, হাদিস, তাফসির, ইতিহাস, গণিত সহ জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তিনি বিচরণ করেন। শায়খ তকী উদ্দী (রহঃ), উস্তাদ হাজরী (রহঃ), ইবনুল কালানসী (রহঃ) প্রমুখ প্রবাদত্যুল্য শিক্ষকের সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। পরবর্তীতে নিজের জ্ঞানের আলোয় তিনি আলোকিত করেছিলেন মধ্যযুগীয় মুসলিম জ্ঞানপিপাসুদের। ১৩৭৩ খ্রিস্টাব্দে দামেস্কে তার মৃত্যু হয়। আল্লামা ইব্নে কাছীর রহ. এর বই সমূহ ইসলামি দর্শন, ফিকহ শাস্ত্র, তাফসির ও ইতিহাস নির্ভর। তার রচিত ‘তাফসিরে ইবনে কাছীর’-এর জন্য তিনি বিশ্বজোড়া সমাদৃত। পবিত্র কুরআনের কাছীরগুলোর মাঝে তার এই গ্রন্থটিই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য এবং প্রামাণ্য। ১১ খণ্ডে প্রকাশিত ‘তাফসিরে ইবনে কাছীর’, ‘কাসাসুল আম্বিয়া’, ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’, ‘কিতাবুল আহকাম’ সহ বেশ কিছু জ্ঞানগর্ভ বই রয়েছে আল্লামা ইবনে কাছীর রহ. এর বই সমগ্রতে।