ফ্ল্যাপে লিখা কথা রবীন্দ্রনাথ আমার কাছে সবুজ লতাপাতায় ঘেরা এক রহস্যময় পাহাড় যা আমি দূর থেকে দেখি আর কেবলই অভিভূত হই। এক সহাসাগরের অতলস্পর্শী ডাক বারবার কানে আসে আর সেই ডাকে বারবার নিজেকে হারিয়ে ফেলি কোন গহিন গহনে জানিনা, আর তখরই রবীন্দ্র-আলোয় পথ খোঁজার চেষ্টা করি, খুঁজতে খুঁজতে আবারো হারাই -আমার রবীন্দ্রগবেষণা এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। তাঁর ধর্মই যেম আমার ধর্ম, তাঁর গানের মধ্যে হারানোর যে সুখ তাকে ব্যাখ্যা করা যায় না।বাঙালির চিরকারের সখা এই কবি আমাদের মাথার ওপরে দাঁড়িয়ে আছেন বটবৃক্ষের মতো। নানা সংকটে তাঁর শরণ নিতেই হয় আমাদের, তিনি আমাদের নতুন করে বাঁচতে শেখান। নব নব প্রাণে তাঁর আবির্ভাব, তাঁর জীবনসঞ্জাত দার্শনিকতার বৈচিত্র্য ও নান্দনিকতায় আমরা বারবার স্নাত হই। এই গ্রন্থে রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে যে প্রবন্ধটি রয়েছে সেখানে আমার নিজের উপলব্ধির জগৎকে সানন্দে উপস্থাপিত করেছি। সংগীতের ব্যাকরণ ও তাত্ত্বিকতার বাইরেও যে তাকে আরো আরো আলোর গুঞ্জনে উদ্ভাসিত করা যায়, সেটি করতে আমি দ্বিধা করিনি, যদিও একথা ঠিক যে, তাঁর গানের লীলার সেই কিনারে ডুব দেবার অধিকার সব মানুষের থাকে না। আমার পঠন-পাঠনে ও দেখার হয়তো সীমাবন্ধতা রয়েছে, কোনো অবহেলা যে নেই, সেকথা জোর দিয়েই বলা যায়। রবীন্দ্রনাথকে লিখতে গেলে মন কাঁপে; হৃদয়ের কোনখানে যেন বাঁক খেয়ে যা বলার তা বাঁকাচোরা হয়ে যায়। কারণ, তিনি যা বলেছেন সেসবই যেন আমরা বলে যাচ্ছি নিরন্তর তাকে নতুন করে পাবার আশায়।
সূচিপত্র * রবীন্দ্রনাথ : বাঙালির সাংস্কৃতিক আশ্রম * কাদম্বরী দেবী : রবীন্দ্রনাথের নতুন বৌঠান * রবীন্দ্রনাথ ও তিরিশের কবিকুল * রবীন্দ্রনাথ : আধুনিক ভারতীয় চিত্রশিল্পের পথিকৃৎ * রবীন্দ্রসংগীত : জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে