"অন্ধকারের বস্ত্রহরণ - ১ম খণ্ড" বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: গল্পের নায়ক, বুড্ডা, জ্ঞানপুরীর সন্ধান পায়, যা আছে যুক্তির ওপারে। সেখানে যেতে হয় সম্মােহনযােগে। তার উদ্দেশ্য বৈজ্ঞানিক, উদ্ভাবনী, এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সৃজনশীলতার রহস্য জানা। সে প্লেটো পড়েছে, কিন্তু প্লেটো হতে পারেনি, রাসেল চর্চা করেছে, তবুও রাসেল হতে পারেনি। সে বুঝতে পেরেছে যে প্লেটো পড়ে প্লেটো হওয়া যায় না, রাসেল হতে গেলে রাসেল পড়াই যথেষ্ট নয়, তাঁদের মতাে হতে গেলে তারা যে-দৃষ্টি দিয়ে বাস্তবতাকে দেখেছেন সেই দৃষ্টি অর্জন করতে হবে, তাদের মতাে করে ভাবতে শিখতে হবে, তাঁদের মতাে করে প্রশ্ন করতে শিখতে হবে - প্রকৃতিকে এবং নিজেকে। সে পেয়েও গেল উপযুক্ত শিক্ষক, শিখল বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ। মাথার মধ্যে সৃজনশীল চিন্তা কিভাবে সংঘটিত হয় তা সে পুরোপুরি না জানতে পারলেও সে কার্যকরভাবে জানতে পেরেছে কিভাবে নিজের মধ্যে সৃজনশীলতাকে উস্কে দিতে হয়, চিন্তার নাড়ানিটাকে কিভাবে ফলপ্রসূভাবে নাড়াতে হয়। সে শিখেছে কিভাবে চিন্তার সুতােটার একেকটা মােড় সভ্যতাকে ধাপে ধাপে বদলে দিয়েছে। সেই সুতােটা সে ধরতে চায় - তাতে সে নিজের মতাে করে দুয়েকটি মােচড় দিতে চায়। জ্ঞানপুরী থেকে এক বন্ধুর প্ররােচনায় সে গেল জ্ঞানাগারে'- জ্ঞান চুরি করতে। সেখানেও সে শিখল চিন্তার সুতােটাকে অন্যভাবে মােচড়াতে। সে জানল নিউটন যদি ক্যালকুলাস আবিষ্কার না করতেন তাহলে সে নিজে কিভাবে তা করত, কুয়াের ব্যাঙ কেন আজীবন লাফিয়েও কুয়াে থেকে বের হতে পারে না, কিভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। এমন ঘটনাকে যে এক মাথাবিশিষ্ট এক রাক্ষস নিজের মাথা ছিড়ে নিজে খাচ্ছে, সৃষ্টিকর্তা নিজেকে ধ্বংস করতে পারেন না – তাঁর এই অক্ষমতাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করতে হয়, এবং এরূপ আরাে অনেক রহস্য। এবং তার অর্জিত দৃষ্টিকোণকে প্রয়ােগ করে সে নিজেই আবিষ্কার করল রহস্যময় অথচ বাস্তব এক সরলরেখা যার একটাই মাত্র প্রান্ত। সম্পূর্ণ যুক্তিপূর্ণ সমাধান দিল রাসেলের সেট থিওরি সম্পর্কিত ধাঁধার, যা রাসেল নিজেও সঠিকভাবে দিতে পারেননি। ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করল সক্রেটিসের শিক্ষক জিনাের প্রধান তিনটি ধাধাকে। উদ্ভাবন করল ‘প্রক্রিয়াতত্ত্ব’, যা চিন্তার ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লবের সূচনা করবে বলে তার শিক্ষক মনে করেন। | অসীম অন্ধকারের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য আলােকবিন্দু। সে তা থেকে দুহাত ভ'রে কুড়িয়ে নিতে চায়। কিন্তু অবশেষে তার জ্ঞানের সাথে সংঘর্ষ লেগে গেল তার জীবনের - বিশুদ্ধ সত্যকে জানলে যা হয়। আর তাই তার এই অবিরাম ছুটে চলা।
প্রখ্যাত লেখক এস. এম. জাকির হুসাইন এর বই সমগ্র ইংরেজি ভাষা থেকে শুরু করে সাহিত্য, ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা, ম্যানেজমেন্ট, গণিত, দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, ধর্মতত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞান, মনস্তত্ত্বসহ নানাবিধ বিষয়ের উপর লিখিত। মাত্র ২৩ বছর বয়সে লেখালেখি শুরু করা এস. এম. জাকির হুসাইন এর বই সংখ্যা এখন ৩৬০। বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষ করে ইংরেজি ভাষাশিক্ষায় তার বইগুলো বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। প্রগতিশীল আধ্যাত্মিকতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী লেখকদের একজন এস. এম. জাকির হুসাইন এর জন্ম ১৯৭১ সালের ৩১শে অক্টোবর, খুলনা জেলার এক ছোট্ট গ্রামে। বাবার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শিশু বয়সেই জ্ঞানচর্চা আর লেখালেখিতে উদ্বুব্ধ হন তিনি; অনানুষ্ঠানিকভাবে লেখালেখি শুরু করেন ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকেই। পড়ালেখায় তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সে এম.বি.এ এবং এমফিল সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তার ফলিত ভাষাবিদ্যায় মাস্টার্স ডিগ্রী আছে, এম.এস.সি করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও। এস. এম. জাকির হুসাইন এর বই সমূহ ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের জন্য পাঠোপযোগী। কর্মজীবনে শিক্ষকতা, ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্সি এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ করলেও লেখালেখিই তার মূল আকর্ষণ। ভাষার উপর দারুণ দখল থাকায় ইংরেজি ভাষা শিক্ষা, ব্যাকরণ, শ্রবণ এবং লিখিত দক্ষতার উপর তিনি অসংখ্য বই লিখেছেন। ভাষা শিক্ষার বইয়ের পাশাপাশি ‘বাংলাভাষা পরিক্রমা’, ‘ধ্যানের শক্তি ও নবজীবন’, ‘অন্ধকারের বস্ত্রাহরণ’ (দুই খণ্ড), ‘গোপন মৃত্যু ও নবজীবন’ ( দুই খণ্ড) ইত্যাদি বইও তার বই সমূহের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয়।