প্রথম পর্যায়ে লিখিত (১৯৮০-১৯৮৩) চারটি গল্প এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে লিখিত (২০০৪-২০০৫) পাঁচটি গল্পে শোনা যাবে সত্তর ও আশির দশকের দুঃখ-দারিদ্র, অস্থিরতা, হতাশা ও বেকারত্বের করাল চিৎকার। তাদের পরিচিতি: রাঙা জোছনায় রক্তাক্ত হরিণ: অরণ্যদেবী ডায়ানা বিশ্বাস করতেন তার কুমারী শরীর খুব পবিত্র। অ্যাকটিয়ন নামের এক শিকারী আকস্মাৎ দেখে ফেলে স্নানরতা বিবসনা ডায়ানার পবিত্র শরীর। এতে রেগে গিয়ে ডায়ানা অ্যাকটিয়নকে একটি হরিণে রূপান্তরিত করে। বর্তমান গল্পে নায়িকাকে হারিয়ে নায়ক হয়ে যায় হরিণ। কলসের কাহিনী: মৎস্যপুরাণের গল্পে অনুরূপ বর্তমান গল্পের নায়িকা স্বর্গকাননে পৌঁছার আগেই পরিণত হয় অমৃতকুম্ভে। বাঘভল্লুক ও রঙের পাশা: মহাভারত মহাকাব্যে বিরাট রাজার ছোঁড়া পাশার আঘাতে যুধিষ্ঠিরের কপাল ফেটে গেলে সৌরিন্ধ্রী বেশধারী দ্রৌপদী একটি পাত্রে সে-রক্ত ধারণ করেন। এই গল্পে রঙের পাশায় বিয়ের জবান দেবার আগেই বাঘভল্লুকের লড়াইয়ের সম্মুখীন হন নায়ক। জোৎস্নাভিসার ও কলার ভেলা: জোছনার রাতে নায়ক হয়ে যায় সর্প-দংশিত লখিন্দর, কলার ভেলায় ভেসে কামনা করে সুন্দরী বেহুলার সেবা ও শুশ্রুষা। রক্ত-বিবাহ: উপজেলা পরিষদ ব্যবস্থার উত্তাপ, বিক্ষোভ, ক্ষমতার দম্ভ ধ্বংস করে দিতে যায় রক্তের সম্পর্ককে। ক্ষমতালিপ্সার কারণে হয় মোরগের লড়াই কিন্তু প্রণয়ের রক্তিম আহ্বান জয়ী হয় রাজনীতিক রক্তপাতের ওপর। বেলেহাঁড়ি ও রক্তসূর্য: চরাঞ্চলের এক তরুণ চেয়ারম্যান বালু সন্ত্রাসীদের হাত থেকে একটি জনপদকে বাঁচাতে চেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে-তার কাহিনী। বর্ষাভিসার ও নৌকাযুদ্ধ: ১৯৭১ সালে নৌকাবিহারে গিয়ে এক নিরস্ত্র দম্পতি কী করে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে সশস্ত্র শত্রুসেনাকে পরাজিত করে- তার কাহিনী। তিমিরাভিসার ও রক্তকলস: ১৯৭১ সালের ঘটনা। রাতের অন্ধকারে আজগর চোরা কলসের ভিতর গুপ্তধন লাভ করতে গিয়ে কলসের ভিতর থেকে বের করে আনে মৃত রক্তাক্ত শিশু।