ফাল্গুনের লাল টুকটুকে সূর্যটা যখন গাঁওকুড়া, ভেংগুড়া, নবকুড়া ছাড়িয়ে দূর বনরেখার ওপারে টুপ করে ডুব দিল, তখনি তাড়াখাওয়া কালোমোষের মতো একটা লোকাল প্যাসেঞ্জার ট্রেন দৌড়ে এসে থামলো ধর্মকুড়া রেল ইশটিশনে। ক্লান্ত অবসন্ন কয়লার ইঞ্জিনটা বার কয়েক ঝকর ঝকর শব্দ তুলে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে নেচে নেচে গলগল করে অসম্ভব রকমের কালো ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করলো। ট্রেনের দুপাশ দিয়েই টুপটুপ করে যাত্রি খসে পড়তে লাগলো। হৈচৈ করে নামলো অগ্নিপাটের শাড়িপরা লাল টুকটুকে পরির মতো বউসহ এক বরযাত্রী দল। ইশটিশনে খাকি পোশাকপরা ৮/১০ জনের একটি ব্যান্ড পার্টি অপেক্ষা করছিল। নতুন বউ নিয়ে চেনা বর ফজলু মিয়া নেমে প্লাটফরমে দাঁড়ানো মাত্র ব্যান্ড পার্টি তাকে ঘিরে খুব জোরে বাজনা বাজাতে শুরু করলো। সাত বছরের বালক মোহন ট্রেন থেকে নেমে কাছেই দাঁড়িয়েছিল। দাদার সঙ্গেই বাড়ি ফিরবে মনে-মনে ভাবছিল সে। ট্রেনের দুপাশ দিয়েই টুপটুপ করে যাত্রি খসে পড়তে লাগলো সে ছিল কনিষ্ঠতম বরযাত্রী, দাদার সঙ্গে নাতি। গায়ে সাদা হাফশার্ট, সাদা হাফপ্যান্ট আর পায়ে খয়েরি মোজার সঙ্গে মানানসই সাদা কাপড়ের জুতো। ওর দিকে কারোর মনোযোগ নেই। ওকে সঙ্গে করে নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে কেউ আসেনি; বাবা, চাচা, কেউ না। দাদা ফজলু মিয়া ঘোমটা টানা বউয়ের হাত ধরে পালকিতে উঠলো এবং বাদ্যি-বাজনা সহকারে যখন এলাকা ঘুরবার জন্য রওনা হয়ে গেল,