"বাংলা সাহিত্যের ইতিকথা-১ম পর্যায়" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: বাংলা সাহিত্যের ইতিকথা প্রথম পর্যায়, পুরাে চারদশকেরও আগে বইটির প্রথম প্রকাশের সময়ে একটি আকাঙক্ষাই প্রচ্ছন্ন হয়েছিল। পুরাতন বাংলা সাহিত্যের বিকাশের ক্রমানুগত ধারাটির গভীর হতে বাঙালির পূর্বাপর জীবন-চরিত্রের একটি স্বচ্ছ চিত্র গড়ে তােলা। সাহিত্য কেবল জীবন-সম্ভব নয়, মানুষের আপন হাতে গড়া নিটোল জীবনচ্ছবি। শিল্প-সাহিত্যের পটে ছবির পরে ছবি এঁকে মানুষের জীবন নিজেকে উন্মােচিত করে ধাপে ধাপে। সাহিত্যের ইতিহাসের দায় সেই ধারাবাহিক জীবনকে আহরণ ও আবিষ্কার করার আনন্দ-সংবাহন। সেই দুঃসাধ্য সাধনের অপ্রতিরােধ্য আগ্রহই অপরিণত চিন্তার ভীরুতাকেও প্রত্যক্ষ উদ্যমে নিয়ােজিত করেছিল। | অন্তরায় ছিল অনেক। সেদিনের পূর্বাদর্শ, প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের অসম্পূর্ণ তথ্যসংগ্রহ ও তথ্য প্রতিষ্ঠার ঐকান্তিকতা বশে, বিতর্ককণ্টকিত ছিল। সাহিত্যের ঐতিহ্যমূল্য তাতে আচ্ছন্ন হয়ে পড়তে দেখা গেছে। কখনাে কখনাে প্রাচীন তৎসম সাহিত্য, অথবা বহমান প্রতীচ্য সাহিত্যের পরিকাঠামােয় পূর্বাপর বিতর্কজালকে গুছিয়ে তােলার প্রবণতার টানে জটিলতা আরাে বেড়েই যেত। বাংলা সাহিত্যের ইতিকথা’ এরই মাঝে সেদিননূতন পথের দিশা খুঁজেছিল। তার বিবরণ ধরা আছে বর্তমান বই-এর প্রথম অধ্যায়ে, এবং তারও পরে, নানা অংশে, এবং প্রসঙ্গে। সেদিনের দ্বিধাকম্পিত পরিকল্পনা পণ্ডিতজনের প্রয়াসে আজ ফুটতর প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা পেতে পেরেছে। একই পরিকল্পনার ক্রমিক বিন্যাস ক্রমশ পরিণতি পেতে চেয়েছে, বাংলা সাহিত্যের ইতিকথা’র দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ পর্যায় রচনা ও প্রকাশের মাধ্যমে। অক্ষম লেখকের মৌল ভাবনা, আর গােটা এক জীবনের প্রয়াস, এই উপলক্ষে সমর্পিত রইল জিজ্ঞাসু মনের সমক্ষে।