১৯৭১ সালে আমি ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। জুন মাসের প্রথম দিকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার সীমান্ত এলাকায় পাকসেনারা প্রবেশ করে। নরকীয় ধ্বংশষ চালায়, বহুমানুষকে হত্যা করে, ঘরবাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে। প্রান ভয়ে মা বাবা ভাই বোনের সংগে আমি ও ভারতে চলে যাই। আশ্রয় নেই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিধাই থানার এক শরণার্থী ক্যাম্পে। কিছুদিন পর সে ক্যাম্প বন্ধ করে দেয়া হয়। চলে যেতে হয় অন্য শরনার্থী ক্যাম্পে। যুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে আসি। যুদ্ধকালীন সময়ে শরণার্থী ক্যাম্পে কিশোর মনে জেগে থাকা কিছু স্মৃতি কিছু অনুভূতির কথা বলার চেষ্টা করেছি এ লেখায়। যে দিন সীমান্ত পারি দিয়ে ভারতে যাই এবং যে দিন স্বাধীন দেশে ফিরে আসি সে দু'দিনের স্মৃতি আমৃত্যু ভোলার নয়। আমি আমার বড় ছেলে শুভ ও ছোট ছেলে সুমিতকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি, ওরা খুব আগ্রহ নিয়ে শুনে। আমার বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের অনেকেই জানেনা আমার দীর্ঘ সাত-আট মাস ভারতের শরণার্থী ক্যাম্পে থাকার কথাটি।১৬ ডিসেম্বর এলেই মনের অজান্তে ভেসে উঠে মুক্তিযুদ্ধ, ভারতের শরনার্থী ক্যাম্প আর কিছু পরিচিত মানুষের স্মৃতি যারা এখন বেঁচে নেই । মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের টুকরো স্মৃতিগুলি নিয়েই আমার এ লেখা।
মোঃ মিজানুর রহমান ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার তালশার গ্রামে ১ জানুয়ারি ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মরহুম আজিজুল হক (হােমিও চিকিৎসক), মায়ের নাম- আনোয়ারা বেগম, স্ত্রী- মেরিনা পারভীন, মেয়ে-কানিজ ফাতেমা বর্ষা, ছেলে- মাহমুদুর রহমান আকাশ প্রথম শ্রেণির ছাত্র ২০১২ সালে নৃত্যে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক শিক্ষাসনদ ও পদকপ্রাপ্ত (০৯.০৩.২০১৪) | তিনি কোটচাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৭ সালে এসএসসি, কে.এম.এইচ ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচএসসি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৩ সালে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রি পাস করেন। বর্তমানে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে অবস্থিত ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। তিনি একজন প্রাবন্ধিক, ডিগ্রি নিরীক্ষাশাস্ত্র ও আয়কর এবং উচ্চ মাধ্যমিক হিসাববিজ্ঞান গ্রন্থের প্রণেতা।