"আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতি"বইটির ভূমিকা: সমকালীন বিশ্বে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। একদিকে ঔপনিবেশিকতাবাদের অবসানের ফলে যেমন তৃতীয় বিশ্বে নবজাগরণের সূত্রপাত হয়েছে, তেমনি অপর দিকে প্রযুক্তিবিদ্যা ও যােগাযােগব্যবস্থার বিস্ময়কর অগ্রগতির কারণে রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের, বিশেষত ক্ষুদ্র, অনগ্রসর রাষ্ট্রসমূহের ভাগ্য আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দ্বারা বহুলাংশে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। উক্ত পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সামাজিক বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর বিষয়টি যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বিশিষ্ট স্থান লাভ করবে, তাই স্বাভাবিক। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, স্বাধীনতা লাভের তের বছর পরেও আমরা এ-ক্ষেত্রে কোন উল্লেখযােগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হই নি। যা হােক আমি আনন্দিত যে, আমার স্নেহভাজন ছাত্র ও বর্তমান সহকর্মী মােঃ আবদুল হালিম আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতি' শীর্ষক পুস্তকটি প্রণয়ন করে আমাদের এ-দীনতা আংশিকভাবে লাঘবের চেষ্টা করেছে। আমি এ জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতি ও তত্ত্ববিষয়ক কোন পুস্তক ইংরেজি অথবা বাংলায় এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয় নি। এ-দিক দিয়ে বিবেচনা করলে বর্তমান গ্রন্থকে এ-ক্ষেত্রে পথিকৃৎ বলা যেতে পারে। গ্রন্থটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রাথমিক ধারণাগুলাের ব্যাখ্যাসহ রয়েছে বিষয়টির বিভিন্ন তত্ত্বের আলােচনা ও বিশ্লেষণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শ্রেণির উপযােগী করে এটি প্রণীত হলেও স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ পাঠকেরাও এতে উপকৃত হবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি লেখকের উত্তরােত্তর সাফল্য কামনা করি।