ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা বাংলায় লেখা কিছু স্মৃতিকাহিনী, আত্মজীবনীতে ঢাকার উল্লেখ আছে। কারো আত্মজীবনীর সম্পূর্ণ অংশ জুড়ে আছে ঢাকা, কারো আত্মজীবনীর ক্ষুদ্র অংশ মাত্র ঢাকা সম্পর্কে। এসব স্মৃতিকাহিনী, আত্মজীবনীর ঢাকাবিষয়ক অংশগুলিকে সংকলন করতে পারলে গত দু’শতকের ঢাকা-সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যাবে যা সহায়তা করবে ঢাকার ইতিহাস নির্মাণে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশিত হচ্ছে ঢাকার স্মৃতি সিরিজটি।ইতোমধ্যে এর চারটি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান খণ্ডটি পঞ্চম খণ্ড। এতে সংকলিত হয়েছে সজল নয়না দেবী, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, বঙ্গেশ্বর রায়, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, আবুল মনসুর আহমেদ, ভবতোষ দত্ত, খান মুহাম্মদ সালেক ও সৈয়দ মকসুদ আলীর ঢাকাবিষয়ক স্মৃতি কাহিনী। এই সংকলনে আমরা পাই বিশ শতকের প্র্রথম চার দশকের ঢাকার একটি সমৃদ্ধ বিবরণ। ঢাকা শহরের কোনো বিবরণ লিখতে গেলে এই নয়টি স্মৃতিকথা হবে অতি মূল্যবান উপাদান। ঢাকার স্মৃতি সিরিজটি সম্পাদনা করেছেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, সাহিত্যক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। সূচিপাত্র *সজলনয়না দেবী : সেকালের ঢাকা শহর *আবুল কামাল শামসুদ্দীন : ঢাকায় *বঙ্গেশ্বর রায় : ঢাকার গাড়োয়ান *বঙ্গেশ্বর রায় : ছাদ পিটানি গান *পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় : ঢাকা *আবুল মনসুর আহমেদ : উচ্চশিক্ষা-ঢাকা শহরে *ভবতোষ দত্ত : বুড়ীগঙ্গা *খান মুহাম্মদ সালেক : স্বপ্নময় আরমেনিটোলা *সৈয়দ মকসুদ আলী : ঢাকার কলেজ জীবন
মুনতাসীর মামুনের পৈতৃক বাড়ি চাঁদপুর জেলার গুলবাহার গ্রামে, কিন্তু তিনি ঢাকার ইসলামপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। সেখানেই পোর্ট ট্রাস্ট প্রাইমারি ও হাই স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা নেন। পরে ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং একই বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষাজীবনে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন, কাজ করেছেন ‘দৈনিক বাংলা বিচিত্রা’য়। এছাড়াও স্বাধীনতার পর প্রথম ডাকসু নির্বাচনের সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭৪ সালে প্রভাষক পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপরই তার বিভিন্ন অনুবাদগ্রন্থ, চিত্র সমালোচনা এবং ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ইতিহাসের প্রতি তার ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে 'মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইন্সটিটিউট' প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলার ইতিহাসকে তিনি প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চান- এই উদ্দেশ্যেই মুনতাসীর মামুনের বই লেখা। একজন শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক। ঢাকা শহর নিয়ে তার রয়েছে গবেষণাপত্র। গড়ে তুলেছেন ‘সেন্টার ফর ঢাকা স্টাডিজ’ নামের ইতিহাস চর্চার একটি প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে মুনতাসীর মামুন এর বই সমগ্র তথা ১২টি গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। মননশীল এই লেখক দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে লিখে যাচ্ছেন নানা বিষয়ে। মুনতাসীর মামুন এর বই সমূহ এর বিষয় বহুমাত্রিক। তার গ্রন্থের সংখ্যা ২২০, যাতে স্থান পেয়েছে গল্প, প্রবন্ধ, গবেষণা এবং অনুবাদ সাহিত্য। শিশু-কিশোরদের নিয়েও তার লেখা গ্রন্থ প্রশংসা কুড়িয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও তার সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। বর্তমানে এই ইতিহাসবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিষয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।