“ঘুমিয়েছো,ঝাউপাতা” বইয়ের শেষ ফ্ল্যাপের কথা: জয় গোস্বামী খুব বেশিদিন যে লিখছেন, তা নয়। কিন্তু শুরু থেকেই আদায় করে নিয়েছেন স্বতন্ত্র একটি স্থান, কাব্যপাঠকের আলাদা রকমের সমীহ । তার কবিতার সঙ্গে অন্য কারোর লেখারই তুলনা চলে না। সম্পূর্ণ নিজস্ব একটি ভাষায় লেখেন জয় গোস্বামী । ছন্দ জানেন, ছন্দ ভাঙতে জানেন, জানেন ছন্দ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার খেলাও । শব্দ ব্যবহারেও তিনি বেপরোয়া ও দুঃসাহসী | যে-সব শব্দ নিতান্ত আটপৌরে কিংবা অতিরিক্ত গদ্যবাদী বলে কবিতায় সভয়ে বর্জিত, নিজের কবিতার মধ্যে অবলীলাক্রমে সে-ধরনের শব্দ ব্যবহার করেন। তিনি । ব্যবহার করেন। সেইসব শব্দও যা পদ্য-অনুষঙ্গী | এর অন্যতম কারণ হয়তো এই যে, কবিতা যে শেষ পর্যন্ত ছন্দ-শব্দ পাের হয়ে উত্তীর্ণ হয় এক অলৌকিক রসের জগতে ; বয়সে তরুণ তবু অভিজ্ঞতায় পরিণত এই কবি প্রথম থেকেই সে-কথা জেনে গেছেন । সম্ভ্রান্ত ও সংকেতময়, গুঢ় ও গভীর, প্রেমের ও শোকের একগুচ্ছ কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হল জয় গোস্বামীর নতুন এই কাব্যগ্রন্থ।
“ঘুমিয়েছো,ঝাউপাতা” বইয়ের সূচীপত্র * স্নান * আমার মৃত্যুর আগে * কোজাগর * ভোর,১০ই জানুয়ারী * গুটিপোকা * হোটেলের ঘরে একজন * মহৎ * সখা * একটি প্রেমের দৃশ্য * বাৎসরিক * তিল * ব্যোমভোলা * ২০ নভেম্বর, সকাল * ২০ নভেম্বর, সন্ধা * ১৭ই অক্টোবর * ৭ই ডিসেম্বর * আলোহাওয়া * আলোহাওয়া * ঘুম * দেবী * প্রীতিভোজ * ফল * জড়(শংকরাচার্যের প্রতি) * তোমার মৃত্যুর মুখ * অপচয় * স্বৈরিণী * সূর্য ও বাতাস * রাখী * একটি বৃষ্টির সন্ধা * বিধি * ছাত্র * জানা অজানা * বর্ষা * পলাশ ও পলাশ * বসন্ত সেনানী * মালিকা * লীলাচ্ছল * ডানা * আলো * ঝাউপাতাকে রুগ্ণ কবির চিঠি * বরষাবন্দনা * এই মালঞ্চে * গান * বসন্ত উৎসব * জন্মদিনের কবিতা
জয় গোস্বামী ১৯৫৪ সালের ১০ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাটে জন্ম গ্রহণ করেন।তিনি হচ্ছেন একজন ভারতীয় কবি। তিনি বাংলা ভাষার এক আধুনিক কবি এবং উত্তর-জীবনানন্দ পর্বের অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কবি হিসাবে পরিগণিত। জয় গোস্বামীর জন্ম কলকাতা শহরে। ছোটবেলায় তাঁর পরিবার রানাঘাটে চলে আসে। তখন থেকেই তাঁর স্থায়ী নিবাস সেখানে। তাঁর পিতা রাজনীতি করতেন, তাঁর হাতেই জয় গোস্বামীর কবিতা লেখার হাতে খড়ি। ছয় বছর বয়সে তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। তাঁর মা শিক্ষকতা করে তাঁকে লালন পালন করেন। জয় গোস্বামীর প্রথাগত লেখা পড়ার পরিসমাপ্তি ঘটে একাদশ শ্রেণীতে থাকার সময়। সাময়িকী ও সাহিত্য পত্রিকায় তিনি কবিতা লিখতেন। এভাবে অনেক দিন কাটার পর দেশ পত্রিকায় তাঁর কবিতা ছাপা হয়। এর পরপরই তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কিছুদিন পরে তাঁর প্রথম কাব্য সংকলন ক্রিসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ সালে তিনি ঘুমিয়েছ, ঝাউপাতা কাব্যগ্রন্থের জন্য আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ২০০০ সালের আগস্ট মাসে তিনি পাগলী তোমার সঙ্গে কাব্য সংকলনের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।