আধিপত্য ও লোকপ্রজ্ঞা

আধিপত্য ও লোকপ্রজ্ঞা (হার্ডকভার)

TK. 450

বইটি বিদেশি প্রকাশনী বা সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে সংগ্রহ করে আনতে আমাদের ৩০ থেকে ৪০ কর্মদিবস সময় লেগে যেতে পারে।

book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Frequently Bought Together

Similar Category eBooks

Customers Also Bought

Product Specification & Summary

অমর্ত্য সেন যে বই-এর ভূমিকা লেখেন, সে বই যে দৃষ্টি আকর্ষণ করবেই, এটা স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে এ বই যদি হয় শিক্ষা ও আধিপত্য বিষয়ে, তা হলে আগ্রহ বাড়ে। শিক্ষার অভাব মানুষের জীবনে নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সামাজিক প্রতিকূলতা, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং অনৈক্যের প্রাচুর্য তাকে আরও জটিল করে তোলে। সমাজে দুটি শ্রেণি সৃষ্টি হয়, এক দল, যারা এই বিদ্যমান অনৈক্যের সহায়তায় ফুলেফেঁপে উঠতে থাকেন এবং প্রকৃত বিদ্যা প্রসারে ব্যাঘাত আনতে থাকেন। আর এক দল কোনও সুবিধাই না-পেয়ে বঞ্চিত থেকে বঞ্চিততর হতে থাকেন। কুমার রাণার বইটিতে এই দুই শ্রেণির বৈশিষ্ট্য ও সমস্যাগুলি স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সমাজে আধিপত্য কায়েম রাখার একটি অন্যতম উপায় হল শিক্ষার ওপর অধিকার সুনিশ্চিত করা। এই আধিপত্যের প্রভাব শিক্ষার গণ্ডি ছাড়িয়ে ধীরে ধীরে আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবধারিত প্রভাব ফেলে, এই বিষয়টা প্রতিদিনের অভিজ্ঞতায় উঠে এসেছে আলোচ্য বইটিতে।
অক্ষর-অধিকারী মানুষের উৎপাদনশীলতা যে অক্ষর-বঞ্চিত মানুষের উৎপাদনশীলতার তুলনায় বেশি, এবং মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটাতে গেলে এই বিশাল সংখ্যক অক্ষর-বঞ্চিতদের কথা ভুলে গেলে চলবে না, তা এখানে নানা উদাহরণ দিয়ে দেখানো হয়েছে। শিক্ষাকে সর্বজনীন করে তোলার ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিকূলতার পাশাপাশি আছে নানা রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গেই রয়েছে মহুলা বা বামনীগ্রাম-এর ন্যায় এলাকার কথা, যেখানে অনেক বাধা সত্ত্বেও অনেক কিছু বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়েছে। তা যদি হয়, তবে সর্বস্তরে কেন নয়! এর একটা প্রধান কারণ, সামাজিক বা শ্রেণিগত বিভাজন, যে বিভাজনে সাধারণ মানুষকে ভগবান বা ক্ষমতাবান শ্রেণির ওপর নির্ভর করে থাকতে হয়।
‘পশ্চিমবঙ্গে যে কিছু হচ্ছে না’ এ কথা শুনতে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু বইটি আর এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বিশ্লেষণ করেছে আরও কিছু বিষয়। যে রাজ্যে পুলিশ প্রশাসনকে ত্রাতা অপেক্ষা নিপীড়কের ভূমিকাতেই বেশি দেখা যায়, সে রাজ্যে কী-ই বা আশা রাখতে পারি! কিন্তু একই সঙ্গে দেখানো হয়েছে বিরাট বৈষম্য নিয়েই কৈখালি বা বনগাঁর ন্যায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের বেঁচে থাকার উদ্যোগ। সুতরাং হচ্ছে না বা হবে না থেকে বেরিয়ে এসে সমস্যাগুলিকে অনুভব করে কী কী করা যেতে পারে, তার বিশ্লেষণ করাটা জরুরি।
শিক্ষায় অনেক উন্নতি হয়েছে, সে বিজ্ঞাপন আমরা হামেশাই দেখতে পাই। কিন্তু কুমার রাণা দাবি করেছেন যে, সৎ অন্তঃসমীক্ষা করলে দেখা যাবে, আমরা আসলে বৈদিক কল্পযুগের সেই ধারাতেই পড়ে রয়েছি, যেখানে সিলেবাসের সঙ্গে বাচ্চার মানসিকতা বা তার পারিপার্শ্বিক জীবনের কোনও সামঞ্জস্য নেই, উপরন্তু উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে বিদ্যালয়গুলির বেহাল দশা। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন: শিক্ষায় জরুরি বিকেন্দ্রীকরণের কাজ একেবারে হয়নি। সরকারি অকর্মণ্যতায় গজিয়ে উঠেছে প্রাইভেট টিউশন আর বেসরকারি বিদ্যালয়। যদি জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান সহ বহু দেশে সরকারি ব্যবস্থার মাধ্যমে মৌলিক শিক্ষাকে সর্বজনীন করা সম্ভব হয়, তবে ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গে কেন নয়?
চিরকালীন নিয়ম অনুসারে সমাজে যা-কিছু উৎকৃষ্ট, তা-ই তোলা থাকে ব্রাহ্মণ বা উচ্চবর্ণীয় লোকেদের জন্য, তাঁরাই দেশনেতা, সাংবাদিক, লেখক, নাট্যকার, আবার তাঁরাই স্বপক্ষ ও বিরোধিপক্ষ। শাসকের অযুক্তিই এখানে স্বাভাবিক এবং শাসিতের যুক্তি ভীষণরকম অস্বাভাবিকতায় স্থান পায় পিছনের সারিতে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও যে কারণে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, লালগড় সর্বত্র দেখা যায়, কোনও বিশেষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তা সে ডান হোক কি বাম, চলে আসেন শীর্ষস্থানে, শিকড়ের সঙ্গে যাঁর যোগাযোগ ক্ষীণ। কুমার রাণা তুলে ধরেছেন, এ আধিপত্য মুষ্টিমেয় মানুষের দখলে, দলিত, আদিবাসী বা মুসলমানদের প্রতি তাঁদের চরম অবজ্ঞা। অধিকার-ভিত্তিক প্রতিনিধিত্বের ওপর সমাজ স্থাপিত না হলে সাম্প্রদায়িকতা বা অন্যান্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা থেকে এ রাজ্যকে কোনও ভাবেই যে বাঁচানো যাবে না, সে আশঙ্কারও রেশ পাওয়া যায় লেখাগুলিতে। লেখক আক্ষেপ করছেন, যে রাজ্য পঞ্চায়েতিরাজ-এর পথপ্রদর্শক, সে-ও কালক্রমে তার মানুষকে আত্মবিকাশের সহজাত প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত রাখাটাই সহজ ও প্রয়োজনীয় বোধ করল। অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বইটিতে জায়গা করে নিয়েছে, যে সংকটকালে পশ্চিমবঙ্গ পৌঁছেছে, যেখানে পুঁজি তার উগ্রতম রূপ ধারণ করে সব কিছুকে গ্রাস করে নিতে চাইছে, সেখানেও কিন্তু অবদমিত মানুষ তাদের জীবনকে বাজি রেখে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। তাই নন্দীগ্রামের লড়াই আর দলীয় ক্ষমতা দখলের লড়াই মাত্র নয় তার পরিসর আরও বৃহৎ, যা সমাজকাঠামোকে প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করায়।
বইটির শেষে খরাক্লিষ্ট এই ভূপৃষ্ঠে একবিন্দু শীতল জলের ফোঁটার মতোই আমাদের সকলের মনের কথাটাও সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, যত দিন এই আধিপত্য ও আগ্রাসন থাকবে, তত দিন মানুষ তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। সে সংগ্রাম যতই নগণ্য হোক না কেন, তা মানুষের অস্তিত্ব বজায় রাখার লড়াই। জীবনের নানা অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে অমর্ত্য-র যোগ্য শিষ্যত্ব অর্জন করা কুমার রাণার বইটি বাংলা সমাজচর্চায় একটি সংযোজন।
Title আধিপত্য ও লোকপ্রজ্ঞা
Author
Publisher
ISBN 9789350401903
Number of Pages 258
Country ভারত
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)
loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off
Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

আধিপত্য ও লোকপ্রজ্ঞা

কুমার রাণা

৳ 450 ৳450.0

Please rate this product