মাঝে,মাঝেই বাস্তবতা হারিয়ে যায় শফীউল্লার। লােকের কাছে অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে বটে, কিন্তু বাস্তবতা হারিয়ে এই ভাবনা-কল্পনার মধ্যে যাত্রা করতে সে নিজে ভালবাসে। আর, সে বাস্তবতা হারিয়ে বসবে না বললে, তার পক্ষে সম্ভব হয়। প্রতিরােধ করার। হতে পারে সে অন্যের কাছে অস্বাভাবিক, অপ্রকৃতিস্থ, কিন্তু তার ভাবনা-কল্পনার অনুভবের কাছে সে সত্য। কোনাে সত্যকেই আমরা কখনও অস্বীকার করতে পারি না, অনাদর করতে পারি না, এড়িতে চলতে পারি না, তাই অপ্রকৃতিস্থ কোনাে মানুষের ভাবনা-কল্পনা তার কাছে মিথ্যে এ কথা পৃথিবীর কোনাে মানুষ কোনােদিন বিশ্বাস না করে। সেই ভাবনার সত্য কারুর কাছেই মিথ্যে হতে নেই। শফীউল্লার ভাবনা-কল্পনার মস্তিষ্ক নানারকম ধর্মকিত্সার মধ্যে চন্দ্রাহত হয়ে পড়ে বার বার। সে বিস্তর কিতাব পড়েছে, তাই বহু কিতাবের কথাবস্তু, বিধিবিধান, মহিমান্বিত নবি রশুলদেব কিসসা কাহিনীতে তার মন খােয়া যায়। হারিয়ে যায়। সে। মধ্যচল্লিশ বয়সের অকৃতবিবাহ এই পুরুষটি এতদঞ্চলে বাস্তবতা হারিয়ে ফেলে বার বার। সে যে ঘটনার ভেতর থাকে, তাকে সরিয়ে দিয়ে থামিয়ে দিয়ে অন্য ঘটনায় নিয়ে যায়। আমরা তার ভাবনা-কল্পনার সত্যকে মান্য করি, সেজন্য তার সেই ভাবনা-কল্পনার বিবরণ আমাদের প্রয়ােজন হয়ে পড়বে। তার ভাবনা কল্পনাকে অবাস্তব আমরা বলিনি, তাই এই উপন্যাসের ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে যে সচরাচর বাস্তবতা আসবে, সেখানে শফীউল্লার পঠিত কেতাব কাহিনীর অতীত ও বাস্তবতা মনে করা হবে। উপন্যাসের অংশও হয়ে উঠবে।