গোড়ার কথা আদম আর ইভ জ্ঞান-বৃক্ষের ফল খেয়েছিল। সাহিত্য দৃষ্টিতে দেখতে গেলে মনে হয় কাজটা তারা ভালই করেছিল। কেন পরে বলছি। নিষেধ লঙ্ঘনের সেটাই আদি নজির। নিষেধ আবার যে সে কারো নয়। স্বয়ং বিশ্ববিধাতার। এই থেকে একটা প্রশ্ন মনে জাগে । কেন তারা এ আদেশ লঙ্ঘন করতে গেল ? কিছু না জেনে, কিছু না বুঝে সমস্ত জটিলতার বাইরে পবিত্রতার পুতুল হয়ে বেশ তো ছিল ? কেন তবু এতবড় নিষেধ ডিঙিয়ে এ কর্মটি করার লোভ কিছুতে সংবরণ করতে পারল না তারা•? বলবেন, শয়তানের প্ররোচনায়। তাহলে স্বীকার করতে হবে, ফলটির গুণাগুণ দু'জন জানত। একজন ফলের সৃষ্টিকারী স্বরং বিধাতা। আর একজন প্রায় তাঁরই প্রতিস্পর্ধী শয়তান । প্রতিস্পর্ধী কেন, কোনো কোনো বিষয়ে তাকে বরং বেশি শক্তিধর বলা যেতে পারে। কারণ, নিষ্পাপ নিষ্কলঙ্ক দু'টি নারী-পুরুষের অন্তরে লোভ নামক ক্রিয়াটি সে জাগিয়ে দিতে পারে বিধাতার নিষেধ সত্ত্বেও যে বিধাতা বই ওই দুটি নারীপুরুষ তখনো আর কিছুই জানে না, কিছুই বোঝে না। যাক সে কথা, ফলটির গুণাগুণ বিধাতা জানত আর শয়তান জানত, কিন্তু জানা সত্ত্বেও তারা এই ফলের ফলগুণাতীত। অর্থাৎ ফলটা শয়তানের জন্যও নয়, স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার জন্যও নয়। তাহলে কার জন্য ? আপনি ধরবে আপনি ঝরবে আপনি শুকোবে বলে ? এমন একটা নিষ্ফলা ফলের ওপর এতবড় গুরুত্ব আরোপ করা হাস্যকর মনে হয় । সৃষ্টিকর্তা কিছু না বললেই হয়ত আদম ইভের ও-ফল খাবার কথা মনেও হত না। তার থেকে অনেক বেশি বিশ্বাস্য, কেউ ও ফল খেয়ে ফলভোগ করবে বলেই ওটার সৃষ্টি। কেউ বলতে আদম আর ইভ ছাড়া আর কে ? তাহলে ওই ফল তাদের জন্যেই সৃষ্টি। রূপকথাকারদের রচনায় দেখা যায় বিশেষ একটা ভয়াবহ নিষেধের গণ্ডি বিশেষভাবেই প্রতিফলিত করে তোলে তারা। কিন্তু ওই নিষেধ যদি নিষেধই থেকে যায় শেষ পর্যন্ত, তাহলে আর রূপকথা হয় না। কেউ না কেউ সেই নিষেধ লঙ্ঘন করে রোমাঞ্চকর কিছুর মুখোমুখি দাঁড়াবে, তাকে জয় করবে বলেই এ-নিষেধের এত আকর্ষণ, এত মাধুর্য। বিশ্বরূপকার জ্ঞান-বৃক্ষের ফল দেখিয়ে সেই রূপকথাই হয়ত সৃষ্টি করেছিলেন বিশ্বশিশুর জন্য। তাঁর নিষেধটা ভ্রুকুটি নয় শুধু, অজানাকে জেনে নেবার, অদেখাকে দেখে নেবার, অননুভূতকে উপলব্ধি করে নেবার একটা হাতছানিও । প্রসঙ্গত কোনো এক বিশ্ব-বিশ্রুত সাহিত্যিকের উক্তি স্মরণ করা যেতে পারে। ইভকে আপেল খেতে নিয়ে যাওয়াটা আদমের এমন নতুন কিছু নয় যা সে আগে করেনি। কিন্তু জ্ঞানত এবারে ভারী অন্য ধরনের একটা কাজ করে বসল সে। ইভও তাই। দুজনেই চোখ রাখল কি করছে তারা, কি ঘটছে তাদের ! কিছু তারা জানতে চাইল । পাপের জন্ম ওইখানে। করাটা নয়, আপেল খাওয়াটা নয়, জানতে চাওয়াটা, জানাটা । আগে তারা চোখ বন্ধ করলেই মনও বন্ধ হত। কিন্তু এখন তারা...
Ashutosh Mukhopadhyay was born in 1920 in Bajrajogini, Dacca (now Dhaka). He graduated in commerce from Hooghly Mohsin College, then affiliated with the University of Calcutta. His first story was Nurse Mitra, published in the newspaper Basumati, which was later made into major movies (Deep Jwele Jai in Bengali and Khamoshi in Hindi). He has also written stories for films like, Safar (1970) and Bemisal. His first novel was Swaha, also published in Basumati and later renamed as Ruper Hate Bikikini. He joined the newspaper Jugantar in 1955 and subsequently became the head of the Sunday special of the newspaper. Ashutosh Mukhopadhyay was one of the most cinematised authors of Bengali literature. Some of the movies made from his stories and novels are listed below. Many of his novels have been translated in other Indian languages. Love and romance and the human relationship are recurring themes of his novels. He died in 1989.