"ফাঁসি আর ফাঁসুড়ে" বইয়ের ভিতরের লেখা: ধনঞ্জয় জেলের সেলে কতক্ষণ ঘুমাচ্ছে, কতক্ষণ জেগে আছে কখন সে রেডিও শুনছে, কোন অনুষ্ঠান শুনছে, রেডিও সেটটাই বা কী ধরনের—সে কখন। কী কথা বলছে—কী সংবাদে তার কীরকম মানসিকতা—কোন ম্যাজিস্ট্রেট ফাঁসির মঞ্চের কাছে ফাঁসির কাজ পরিচালনা করবেন—তাঁর মনের অবস্থা কেমন হতে পারে—এসব নিয়ে সম্যক আলােচনাও পরিবেশিত হয়েছে। নির্দিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট যদি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন বা অসুস্থ হয়ে পড়েন তার পরিবর্ত কে হবেন এসব কি সংবাদিকতা? না, এতে চমক ছাড়া সমাজের কোনও কাজ হবে সেটা সংবাদজগতের বিজ্ঞব্যক্তিরাই সবথেকে ভালাে বলতে পারবেন। দোষ নিলে বলা যেতে পারে, বর্তমানে একটা কথা খুব শােনা যায়, সাধারণ মানুষ কোনটা খাবেন। সেদিক থেকে বলা যায়-ধনঞ্জয়ের ফাসির কাহিনী ও ফঁসুড়ে নাটা মল্লিকের নাটাবাবু হিসাবে বক্তব্য সাধারণ মানুষ ভালােই খেয়েছেন। সঙ্গে ছিল নাটার ছেলে বা নাতির চাকরির কী হবে—তার কতগুলি আবেদননিবেদন সরকার ইতিপূর্বে শুনেছেন, ভবিষ্যতে শুনবে কিনা, আই. জি. (কারাদপ্তর) তার দাবি বা আবেদন নিয়ে কী কী পদক্ষেপ নেবেন তাও সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশিত হয়েছে। কিন্তু, কেউ ভাবলেন না শিশুমনের কথা। ফাঁসি ব্যাপারটা তাে নতুন নয়—কই এমন ফলাও করে ইতিপূর্বে কখনওই কি পরিবেশিত বা প্রকাশিত হয়েছে। ফাঁসি ব্যাপারটা নিয়ে যখন এত আলােড়ন, তখনই ভাবছিলাম—ফাসি নিয়েই যদি লিখতে হয়, তবে শুরু করব মহারাজা নন্দকুমারের ফাঁসির ইতিহাস দিয়ে-অবশ্য এই ফাসি সম্বন্ধে ইতিহাস ঘেঁটে যতটুকু সংগ্রহ করা গেছে—সেটুকুকে কেন্দ্র করে। শুনেছি একদা নন্দকুমারের ফাসি নিয়ে একটি বই লেখা হয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় বইখানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ইংরেজ আমলে বিচারকের রায়ে ফাঁসি হত। মুসলিম আমলে ছিল কোতল করার আদেশ। সেই আদেশ দিতেন কাজী বা নবাব। ইংরেজ আমলে নন্দকুমারের ফাঁসির আগে ও পরে কত বিচিত্র ঘটনায় প্রাণদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে!