"জিৎভূমি" বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: গত শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ্বের প্রথম দিকে এ বাংলায় এসেছিল এক অদ্ভুত সময়। বাংলার যৌবন তখন আশ্চর্য এক স্বপ্ন দেখেছিল। জীবনকে জিতে জিতে বিশ্বলােকে এক জিৎভূমি রচনার স্বপ্ন। অথচ তখনই তাদের স্বপ্নের পতাকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল তিন টুকরাে হয়ে, সময়ের ফেরে। এক টুকরাে হাতে নিয়ে ঘর ছেড়ে একদল বেরিয়ে পড়েছিল গ্রাম, জঙ্গল আর পাহাড়ের পথে। আর এক দল নিজের শহরে থেকে, গ্রামে থেকে, ঘরে থেকে, মাটি কামড়ে পড়ে থেকে অনেক মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সে স্বপ্ন সত্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু অন্ধকারের শক্তির তাণ্ডবে ঘর ছাড়তে হয়েছিল তাদের অনেককে, প্রাণ বাঁচাতে। স্বৈরাচারী শাসনে, পুলিশের পীড়নে আর আত্মহত্যার মতাে ভ্রাতৃহত্যায় যৌবনের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল বাংলার মাটি। আশা এবং হতাশার, বিশ্বাস ও বিশ্বাসহীনতার, স্বপ্নদেখা ও স্বপ্নভঙ্গের, বিপর্যয় ও সম্ভাবনার সেই অদ্ভুত সময়ে ঠিক কী ঘটেছিল? তখন সবই কি মনে হয়েছিল অন্ধকার? নাকি সে অন্ধকারেও দেখা যাচ্ছিল আলাের ছটা? মানুষে মানুষে সম্পর্কের ওপর, বাবা-মা-সন্তান, ভাইবােন পরিজন প্রতিবেশীর সম্পর্কের ওপর, বন্ধুদের ভালােবাসা, তরুণ-তরুণীর প্রেমের ওপর কী ছায়া ফেলেছিল সে অন্ধকার ? অমন অন্ধকার দিনে কি বাঁচতে পারে বন্ধুত্ব? ভালােবাসা? জিততে পারে প্রেম? এইসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজেছেন লেখক জয়তী আর অসীমের কাহিনীতে। তাদের প্রেমে, স্বপ্নে, হতাশায়, বিশ্বাসেঅবিশ্বাসে। তাদের মনের গভীরে, তাদের শরীরের ভাষাতে, তাদের স্বপ্নের ভূবনে, যে-স্বপ্নেও ছিল এক জিৎভূমির অঙ্গীকার। তাদের ভালােবাসা কি খুঁজে পায় জিৎভূমির মাটি ? ‘জিৎভূমি’ বস্তুতঃ এক ভালবাসার উপন্যাস।