ভূমিকা রবীন্দ্রনাথের একটি গানের প্রথম পংক্তি : 'আপনাকে এই জানা আমার ফুরাবে না।' এই সূত্র ধরে নিবেদন করি, 'রবীন্দ্রকে জানা আমার ফুরাবে না'। সেই কারণে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ঢারটি বই এবং আরও পাঁচটি সমালোচনা-গ্রন্থে রবীন্দ্র-আলোচনা করার পরেও আর একটি বই—বক্ষ্যমাণ গ্রন্থ 'রবীন্দ্র-বিবেচনা' এই গ্রন্থে রবীন্দ্র-রচনাবলির তিনটি সংস্করণ ব্যবহৃত হয়েছে : বিশ্বভারতী সংস্করণ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত আর একটি সংস্করণ, যাকে উল্লেখ করেছি সরকারি সংস্করণ বলে। শেষোক্তটির আঠারোটি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে (১৯৮০-২০০৪)। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এটি সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য অদ্যতন-প্রবিষ্ট সংস্করণ। এই সংস্করণের জন্য গঠিত সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরূপে কাজ করার সুবাদে রবীন্দ্র-রচনাবলির সঙ্গে ব্যাপক পরিচয় ঘটেছে। রবীন্দ্র-প্রতিভার বহুমুখিতার প্রতি আরও মনোযোগ দেবার সুযোগ ঘটেছে। এই গ্রন্থের প্রথম প্রবন্ধ 'রবীন্দ্রনাথ, নির্জনের প্রিয়বন্ধু আমিয়েল' প্রথম প্রকাশিত হয় ‘পশ্চিমবঙ্গ' পত্রিকার ১৩৯৮ বঙ্গাব্দের রবীন্দ্র-সংখ্যায়। এই সংখ্যাটি হারিয়ে ফেলি। সাহিত্য অকাদেমির কর্মী শ্রীঅরুণকুমার দে তাঁর সংগ্রহ থেকে এটির জেরক্স কপি আমায় উপহার দেন। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে হারিয়ে যাওয়া দুটি গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি—ঢাকার নজরুল একাডেমির পরিচালক প্রফেসর মনিরুজ্জামানের অনুরোধে একটি পাঁচশ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপি 'নজরুল-অধ্যয়ন' তাঁকে দিই। রাজনৈতিক পালাবদলের ফলে তিনি তাঁর পূর্বতন কর্মস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান। পরবর্তী পরিচালকদের কাছ থেকে সেই পাণ্ডুলিপি উদ্ধার হয়নি, মুদ্রিতও হয়নি। কলকাতায় আমার অন্যতম প্রকাশক প্রাইমা পাবলিকেশন-এ জমা দিই উত্তরবঙ্গ সম্পর্কে একটি পাণ্ডুলিপি— উপেক্ষিতা বর্ষা শীতে'। সেটি হঠাৎ-মুদ্রক রূপে আবির্ভূত এক হঠকারী ব্যক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং তার ছাপাখানাও উঠে যায়। সেটিও উদ্ধার করতে পারিনি। বর্তমান গ্রন্থে ষোলটি প্রবন্ধে রবীন্দ্র-প্রতিভার বিচিত্র কর্মচর্চা ও সাহিত্যচর্চার পরিচয় দেবার প্রয়াস করেছি। এবার ঋণ স্বীকার। ‘মিত্র ও ঘোষ' প্রকাশিত নির্মলকুমারী মহলানবিশের ‘বাইশে শ্রাবণ' গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দেবার অনুমতি পেয়েছি। প্রাইমা পাবলিকেশন-প্রকাশিত মৈত্রেয়ী দেবীর মংপুতে রবীন্দ্রনাথ' ও ‘স্বর্গের কাছাকাছি' বইদুটি থেকে উদ্ধৃতি দেবার অনুমতি পেয়েছি। বিশিষ্ট কথাশিল্পী শ্রীযুক্তা প্রতিভা বসুর কাছ থেকে তাঁর ‘স্মৃতি সততই সুখের' ভ্রমণগ্রন্থ ও বুদ্ধদেব বসুর 'তিথিডোর' উপন্যাস থেকে উদ্ধৃতি ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছি। আমার প্রাক্তন ছাত্র শ্রীমান সঞ্জিৎ বসু কবি বিষ্ণু দে-র ‘বাইশে শ্রাবণ' কবিতাটি ব্যবহার করার সম্মতি দিয়েছে। আমার কন্যা ড. উমা মুখোপাধ্যায় নানাভাবে সাহায্য করেছে।
Professor Arunkumar Mukhopadhyay, formerly Professor and Chairman of the Department of Bengali language and literature in the University of Calcutta, possesses a brilliant academic career. Born in 1930, he spent a part of his boyhood days in Rangpur (now in Bangladesh). He won Surendranalini Gold Medal and Krisnakumar Dutta Silver Medal along with Asutosh Mookherjee Birthday Memorial Prize in his B.A. Honours in Bengali from Calcutta University. Alter receiving his M.A. in Bengali from Calcutta University in 1952, he took his Ph. D. in 1957 from the same University on the Nineteenth Century Bengali Lyrical Poetry. In 1984 he was awarded D. Litt by Calcutta University on Bengali short stories. After serving Presidency College, Calcutta, for a decade he joined the University of Calcutta in 1969. Author of nearly three dozen books and a large number of research papers, Professor Mukhopadhyay has a sustained interest in the fields of language, literature and social studies. Now he works as the director of Amulyadhan Mukherjee Centre for Social Studies (Maghamallar, Kolkata 19).