লেখক....রবীন্দ্রনাথের কাব্যধারা অনুসরণের একটি মূলসূত্র আমাদের ধরাইয়া দিয়াছেন।...এই মূলসূত্রের নির্দেশ ও ইহার সার্থক ব্যবহারিক প্রয়োগে শ্রীমান অমূল্যধন প্রশংসনীয় কৃতিত্ব ও সূক্ষ্মদৃষ্টির পরিচয় দিয়াছেন।...তিনি রবীন্দ্রনাথের কোন বিশেষ কবিতার বা কবিতাগুচ্ছের রস বিশ্লেষণ না করিয়া কেবল উহার সাধারণ লক্ষণের বিচার করিয়াছেন। ইহার মধ্যেও তাহার যুক্তির স্বচ্ছতা ও আলোচনা-পদ্ধতির জড়িমাহীন, মনীষাদীপ্ত সুস্পষ্টতা প্রতিভাত হইয়াছে।...তাঁহার অনুভূতি সূক্ষ্ম হইলেও অস্খলিত বিচারনিয়ন্ত্রিত....। তাঁহার গ্রন্থখানি পড়িলে রবীন্দ্র-সাহিত্য সম্বন্ধে আমাদের অনেক স্ববিরোধী চিন্তা, অনেক অস্পষ্ট, ভাসা-ভাসা ধারণার যে প্রতিষেধ ঘটিবে তাহাতে সন্দেহ নাই। ...সমালোচনাক্ষেত্রে এই ঋজু, বলিষ্ঠ প্রমাদশূন্য মননশীলতার অভাবের জন্যই এই বিভাগে আমাদের অগ্রগতি অনেকটা ব্যাহত হইতেছে। ..অমূল্যধনের কাব্যবিচার যদি আমাদের সমালোচনা-রীতিকে এক নুতন পথে পরিচালনা করার প্রেরণা দেয়, তবে ইহা বিশেষ শ্রেয়ঃসাধনের হেতু হইবে।...রবীন্দ্র-সাহিত্যের সমগ্র পরিকল্পনা, ইহার পরিণতির বিভিন্ন স্তরগুলি যে কবিমানসের একটি বিশেষ পরিবর্তনশীল অন্তঃপ্রেরণায় শৃঙ্খলিত হইয়া নিয়মসূত্রে গ্রথিত হইয়াছে, প্রতিটি কাব্যরচনার সময় কবির মানস-প্রতিবেশের স্বরূপধর্ম কেমন ছিল সে বিষয়ে একটা সুস্পষ্ট জ্ঞান রবীন্দ্রকাব্য-বিচারে যে বিশেষভাবে সহায়তা করিবে তাহা নিঃসন্দেহ। গ্রন্থকার এজন্য আমাদের অভিনন্দনযোগ্য । ...