ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা অণু-পরমাণুর ক্ষুদ্র জগতকে ব্যাখ্যা করার জন্য ‘কোয়ান্টাম মেকানিক্স’ নামে পদার্থবিদ্যার একটি শাখা গড়ে উঠেছে। মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইনসহ অনেক বিজ্ঞানীই ‘কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে’ সুনজরে দেখেননি।(যদিও আইনস্টাইন নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ‘ফটো ইলেকট্রিক এফেক্ট’ ব্যাখ্যা করে , যেটি ছিল আলোর ফোটন হিসেবে পরিচিতির ব্যাখ্যা)। কোয়ান্টাম মেকানিক্স -এর মতে জটিল বিজ্ঞনকে কোমলমতি স্কুল-কলেজের ছাত্রদের উপযোগি করে সহজ সরল ভাষায় জনপ্রিয় বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এই গ্রন্থটিতে উপস্থাপন করেছেন। লেখকের আশাবাদ এই যে , বিজ্ঞানমনষ্কতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিজ্ঞানের যে কোন শাথা/বিভাগ যতই দুরূহ হোক না কেন, আমাদের কে তা জানতে ও বুঝতে হবে। তাহলেই পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে ব্যাখ্যা করার জন্য‘ বোস-আইনস্টাইন’তত্ত্ব এর মতো এদেশের ছেলেমেয়েরাও নতুন কোন তথ্য/তত্ত্ব আবিষ্কার করতে পারবে।
ভূমিকা পদার্থবিজ্ঞানের রহস্যময় জগৎ হচ্ছে কোয়ান্টাম মেকানিক্স। আমাদের পরিচিত জগতে আমরা যা দেখে অভ্যস্থ, কোয়ান্টাম মেকানিক্স এ তার কিছুই মেলে না!অণূ-পরমাণূ সেই ক্ষুদ্র জগৎকে ব্যাখ্যা করার জন্য এক সময় কোয়ান্টাম মেকানিক্স নাম দিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা বিজ্ঞান গড়ে উঠেছিল। যারা স্কুল কলেজে পড়ে তাদেরকে সত্যি সত্যি কোয়ান্টাম মেকানিক্স শেখানো সম্ভব কি না সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা কোয়ান্টাম মেকাসিক্সের জগতে সদর্পে পদচারণা শুরু না করুক অন্তত যেন সেউ জগতে উঁকি দিতে পারে সেটি মাথায় রেখে এই বইটি লেখা হয়েছে। এটি পড়ে একজন ছেলে বা মেয়েও যদি পদার্থবিজ্ঞানে আগ্রহী হয়,আমি মনে করবে আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।
মুহম্মদ জাফর ইকাবাল ঢাকা ১০ জানুয়ারি ২০০৯
সূচিপত্র * ১ ‘হবে’ না ‘হতে পারে’? * ২ আলো দিয়ে শুরু * ৩ তরঙ্গের গণিত * ৪ তরঙ্গের প্রতিফলন * ৫ তরঙ্গের যোগবিয়োগ * ৬ নিউটনের রিং * ৭ সাবানের ফেনা * ৮ ফোটা থেকে ফোটন * ৯ আইনস্টাইনের নোবেল পুরস্কার * ১০ একটুখানি ইলেকট্রন * ১১ কণা নাকি তরঙ্গ * ১২ কোয়ান্টাম মেকানিক্সের শুরু * ১৩ একটা উদাহরণ * ১৪ সবকিছুর সাথে তরঙ্গ * ১৫ অনিশ্চয়তার সূত্র * ১৬ পর্যবেক্ষণ * ১৭ কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ব্যবহার * ১৮ কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বিচিত্র ব্যবহার * ১৯ এনটেঙ্গলমেন্ট * ২০ শেষ কথা * পরিশিষ্ট
বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী পাঠকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি মূলত এ দেশের একজন বিখ্যাত লেখক, পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ। কিশোর সাহিত্য, শিশুতোষ গ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, গণিত বিষয়ক বই এর জন্য খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফয়জুর রহমানের চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলাতেই তিনি পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে পিএইচডি ডিগ্রী অজর্নের উদ্দেশ্যে স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি সম্পন্ন করে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ ল্যাবেও গবেষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সবসময়ই এ দেশের কিশোর-কিশোরীদের কাছে বিশেষ আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছে। কিশোর সাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক অজস্র গ্রন্থ দিয়ে তিনি আলোকিত করে তুলেছেন এদেশের অগণিত কিশোর-কিশোরীর মনোজগত। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমূহ, যেমন- দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ, আমি তপু, শান্তা পরিবার, দস্যি ক’জন ইত্যাদি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। তার বেশ কিছু গল্প পরবর্তীতে নাটক ও চলচ্চিত্র হিসেবে টিভি পর্দায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট কলামিস্টও। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডও তাঁর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমগ্র সকল বইপড়ুয়াকেই আকৃষ্ট করে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহুবার পুরষ্কৃত হয়েছেন। বাংলা একাডেমি পুরষ্কার (২০০৪) এবং শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার (২০০৫) সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, কাজী মাহবুবুল্লা জেবুন্নেছা পদক (২০০২), শেলটেক সাহিত্য পদক (২০০৩), ইউরো শিশুসাহিত্য পদকসহ (২০০৪) অগণিত পুরষ্কার অর্জন করেছেন গুণী এই সাহিত্যিক।