একটা লোক যার সঙ্গীতশিক্ষার, সাঙ্গীতিক অভেনের ব্যাক ধরনের সঙ্গীতই পাওয়া যাবে, কিন্তু কিছুতেই, কোনওভাবেই রক মিউজিকের ত্রিসীমানায় তাকে পাওয়া যাবে না আমি হলাম সেরকমই একজন! .....কোন ম্যাজিকে, কোন সুযোগে আমার ঘাড়ে চাপল রকের এই ভূত? এর উত্তরে অনেক কথাই বলতে হয়...” সেই না বলা অনেক কথা বলবেন বলেই কলম তুলে নিলেন বাংলার একমেবাদ্বিতীয়ম রকস্টার রূপম, পাঠক বন্দিত ‘রূপম অন দ্য রক্স’-এর পর তাঁর স্বলিখিত এই দ্বিতীয় 'রক জার্নাল'-এ। রূপমের, ঘুড়ি ফসিলসের গানের নানা বিখ্যাত পংক্তির নেপথ্যে লুকিয়ে থাকা রকমারি অনুষঙ্গই নয়, ঘটনাবহুল বহু কনসার্টের ব্যাকস্টেজ ডায়েরিও প্রকাশিত এখানে। রূপমের লেখা নতুন-পুরনো প্রচুর গান তো থাকছেই, এছাড়াও রইল আন্তর্জাতিক সঙ্গীত সিন এবং তার বিবিধ খুঁটিনাটি নিয়ে গায়কের সময়ানুর বিশ্লেষণ। টানটান উপভোগ্য, পাশাপাশি রক সঙ্গীতের যে-কোনও মনোযোগী ছাত্রকে অনুপ্রাণিতও করবে, নিবেদিতপ্রাণ এক বাংলা রকারের এই “রক্যাপনের সাতকাহন। ছবিতে ছবিতে ছয়লাপ সম্পূর্ণ রঙিন ১৯২ পৃষ্ঠার নজিরবিহীন এবং 'রকিং' প্রকাশনা—রকজনতার অবশ্য সংগ্রহের এক আনন্দ-অর্ঘ্য।
"রূপম ইসলাম (জন্ম: ২৫ জানুয়ারি, ১৯৭৪) হলয় বাঙালি গায়ক, সুরকার, গীতিকার ও লেখক। তিনি বিখ্যাত বাংলা রক্ ব্যান্ড ফসিলস্-এর প্রধান কন্ঠ শিল্পী। তিনি মূলত তাঁর সোলো অ্যালবাম এবং ফসিল্স-এর অ্যালবাম দ্বারা বিপুল খ্যাতি লাভ করেছেন। এছাড়াও তিনি বহু বাংলা ছবি-তে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক এবং গীতিকার হিসেবে কাজ করেছেন। দুটো হিন্দি ছবি এবং একটি তেলুগু ছবিতে তিনি গান গেয়েছেন। বিভিন্ন বাংলা ধারাবাহিক, ওয়েব সিরিজ এবং বিজ্ঞাপনের জন্যেও তাঁকে গান গাইতে শোনা গেছে। ২০১০ সালে বাংলা ছবি মহানগর@কলকাতা-তে নেপথ্য গায়ক হিসেবে তিনি জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছেন। প্রাথমিক জীবন ১৯৭৪ সালের ২৫ জানুয়ারি, নুরুল ইসলাম এবং ছন্দিতা ইসলামের একমাত্র সন্তান রূপমের জন্ম। তিনি তাঁর বাবা-মা পরিচালিত ঝংকার শিল্পী গোষ্ঠির অনুষ্ঠানে প্রথমবার মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন; তখন তাঁর বয়স মাত্র চার। মাত্র ছয়-সাত বছর বয়সে অন্নদাশঙ্কর রায়-এর একটি ছড়ায় প্রথমবার সুর সংযোজনা করেন, এবং সে গান বিভিন্ন সঙ্গীতানুষ্ঠানে গাইতে শুরু করেন। এমনকি আট বছর বয়স থেকে আকাশবাণী এবং দূরদর্শন-এও নিয়মিত অনুষ্ঠান করতে থাকেন। কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক করেন রূপম। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধীনে বিএড শেষ করে টাকি বয়েজ স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। সঙ্গীত শিক্ষকতার পাশাপাশি সঙ্গীতচর্চা চলতে থাকে রূপমের।[৪] ফসিল্স তৈরি হবার আগেও বিভিন্ন ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন তিনি। যেমন 'রিদিম', 'রিদমিক', 'হরিদাসের ডানা' এবং 'দূরের গাংচিল। দুর্ভাগ্যবশত, সে ব্যান্ডগুলি চিরস্থায়ী হতে পারেনি। ১৯৯৮ সালে রূপমের প্রথম সোলো অ্যালবাম 'তোর ভরসাতে' এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়, তবে তা বাণিজ্যিকভাবে অসফল থেকে যায়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে সে অ্যালবামটি 'নীল রং ছিল ভীষণ প্রিয়' নামে পুনঃপ্রকাশিত হয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৯৮ সালে ফসিল্স-এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। ২০০২ সালে তাঁদের প্রথম অ্যালবাম 'ফসিল্স' আশা অডিও থেকে প্রকাশিত হয়। ব্যক্তিগত জীবন ২০০৩ সালে রূপমের সাক্ষাত হয় রূপসা দাসগুপ্তের সাথে। রূপসা তখন ফসিল্স সহ চারটে ব্যান্ডকে নিয়ে একটি বিখ্যাত ব্র্যান্ডের জন্য অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় কর্মরত ছিলেন। সেই সূত্রেই তাঁদের আলাপ হয়। পরবর্তীতে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব তৈরী হয়, এবং বন্ধুত্ব থেকেই প্রেমের সূত্রপাত। ২০০৭ সালের ২১ অক্টোবর তাঁদের বিবাহ হয়, এবং ঠিক তার তিন বছর পর, অর্থাৎ ২০১০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাঁদের সন্তান রূপ আরোহণ প্রমিথিউসের জন্ম হয়।"