বইটিতে রয়েছে মামুন ম. আজিজের নয়টি অনবদ্য ছোটগল্প। গল্পগুলো ঠিক অবাস্তব অবয়বের দর্পন নয়, বরং বাস্তবতার এক পুকুর ঘাট, সম্মুখে যার জলের হালকা তরঙ্গের ঢেউ, একটু ঝুকলেই দেখা যায় প্রতিচ্ছবি চারপাশের এবং সমসাময়িক বাস্তবতার পরিবেশ। ছন্দবদ্ধ করে প্রকাশ করলে যেন অনেকটা... ‘চারকোণা এক বাক্স ............ আধা সাদা, আধা কালো চারকোণা এক দেয়াল ............ আধা ছায়া, আধা আলো এক গুচ্ছ মেঘ আকাশে ............ কিছু কালো, কিছু সাদা এক প্রহরের বৃষ্টি পরে ............ মন মাটি মেখেছে কাদা ভাবনা মগ্ন কবির মনে ............ মিশেছে আঁধার-আলো সবখানে মিলে মিশে ঐ ............ রয়েছে মন্দ-ভালো দীর্ঘকালের পথের ধারে ............ জমেছে শ্যাওলা যত সাদা-কালো মন পর্দায় ............ রঙিন নাটক তত’ যাপিত জীবনের দৃশ্য তুলে ধরতে গিয়ে লেখকের কল্পনা বিস্তৃত হয়েছে নানান রঙে, যেমন- ‘শ্যাওলা’ গল্পটি দাম্পত্য জীবনের অতি সূক্ষ্ম ভুলবোঝাবুঝির এক নিগুঢ় দৃশ্যপট, আবার ‘অ্যাগালমেটোফিলিয়া’ গল্পটি এক জটিল মানসিক ব্যাধির রূপচিত্র। অন্যদিকে ‘প্রোদ্ভিন্ন’, ‘শৈশবের পাঠ’, ‘অসভ্য আলোক সম্পাত’ কিংবা ‘অরোবরোস’ গল্পে রয়েছে বাস্তবতার নিদারুণ ঘুণ চিত্র, অকারণ সংঘাত আর অরাজকতার ছোঁয়া। আবার ‘মৃত শহরের কান্না’ গল্পটি লেখা হয়েছে ভবিষ্যত কালে, এ গল্পে ভবিষ্যত দিনের মুক্ত সাহিত্য চিন্তা এবং একটি শহরের ভবিষ্যত দিনের করুণ পরিণতি বাস্তবতার নিরিখে কল্পনা করা হয়েছে।
জন্ম পরবর্তী অধিকাংশ সময়ই কেটেছে ঢাকায়। তিনি পেশায় একজন তড়িৎ প্রকৌশলী পেশাগত জীবনের মাঝে যৎসামান্য অবসরের পুরােটাই প্রায় ব্যয় করেন সাহিত্যচর্চা আর ভ্রমণে। ২০০৬ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় পথিকের পথে পথে স্বপ্ন’ শীর্ষক কবিতার বই । পরের বছর প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় কবিতার বই ‘ধুলাে তাে উড়বেই। ঋতান্ত, ‘তথাপি’, ‘উদ্ঘুট্টি' এবং প্রান্তিক বাঁকে বিম্বিত দৃশ্যাবলী নামে চারটি গল্প সংকলনও প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত উপন্যাস ‘প্রতীতি’ এছাড়াও সম্পাদনা করেছেন ভাষাচিত্র থেকে প্রকাশিত নৈঃশব্দ্যের শব্দযাত্রা’ এবং নৈঃশব্দ্যের উচ্চারণ’ নামে দু'টি গল্প সংকলন । সম্পাদনা সহযােগী হিসেবে কাজ করেছেন ‘আলাে ও ছায়া’ সাহিত্য পত্রিকায় । বর্তমানে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হচ্ছে ‘সংকাশ’ লেখক সংগঠনের ছােট কাগজ সংকাশ। অনলাইনে বিভিন্ন বাংলাভাষার ব্লগেও রয়েছে তার সরব পদচারণা। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় লেখার প্রয়াস খুঁজলেও মূলত তিনি ছােট গল্প এবং কবিতা লেখাতেই স্বাচ্ছন্দ্যবােধ করেন।