“প্রসঙ্গ : প্রাচীন পৃথিবী" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ পৃথিবী নামক এই গ্রহের জন্ম এবং এতে প্রাণীর বিকাশ; আর সেই বিকাশের ক্রমধারায় মানুষের উদ্ভবএসব নিয়ে মানুষের বিস্ময় আর ঔৎসুক্যের সীমা নেই। গত কয়েকশ’ বছরে এ-নিয়ে বিস্তর গবেষণা আর উদ্ঘাটন হয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, জীববিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব প্রভৃতি ক্ষেত্রে নব নব আবিষ্কার পৃথিবীর সৃষ্টি আর প্রাণী ও মানুষের উদ্ভবের অনেক রহস্যকেই উন্মােচিত করেছে। এসব নিয়ে সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ভাষায় রচিত হয়েছে রাশি রাশি গ্রন্থ আর গবেষণাপত্র । বাংলা ভাষায় অবশ্য এ-জাতীয় গ্রন্থ-প্রবন্ধের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে স্বল্প । প্রসঙ্গ : প্রাচীন পৃথিবীতে এ-বিষয়ের কিছু তথ্যের সন্নিবেশে আলােচনার সূত্রপাত করা হয়েছে। শুধু গবেষকরা নন, সাধারণ পাঠকও এর লক্ষ্য। নিকটপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা- সভ্যতার এ দু'টি পাদপীঠকে কেন্দ্র করে এ গ্রন্থের আলােচনা বিভিন্ন চিত্র এবং সারণির সাহায্যে চুম্বক আকারেও রয়েছে বহু তথ্য ও তত্ত্ব। প্রসঙ্গ : প্রাচীন পৃথিবী পৃথিবীর জন্ম এবং প্রাণী ও মানুষের বিকাশের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু ঔৎসুক্য নিবারণ করবে এবং তার চেয়েও বেশি নতুন ঔৎসুক্যের জাগরণ ঘটাবে।
১৯৪৭-এ যখন ভারতীয় উপমহাদেশ বিভাজনের কবলে পড়ে, আবু মােহাম্মদ মজহারুল ইসলাম তখন আঠার বছরের টগবগে তরুণ। এই তরুণরাই সেদিন রুখে দাড়িয়েছিল সাম্প্রদায়িক ও নয়া-ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের শােষণের ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে। আবু ইসলাম ১৯৪৭-য়েই বগুড়া থেকে ঢাকা এসেছিলেন। গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনে যােগ দিতে; সদ্য ম্যাট্রিক পাস যুবক সক্রিয় হলেন বগুড়ার গণতান্ত্রিক যুবলীগের নেতৃত্বে। ১৯৪৮ থেকে সারা পূর্ব বাংলায় গড়ে উঠা ভাষা আন্দোলনের ঢেউ লেগেছিল বগুড়াতেও। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তখন বগুড়ায় স্যার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ । আবু ইসলাম বগুড়ায় ভাষাআন্দোলনের মিছিলে সামনের সারিতেই ছিলেন। তারপর ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে পূর্ব বাংলার । গণতান্ত্রিক বামপন্থীদের সংগ্রামে তিনি হয়ে ওঠেন। বগুড়ার রাজপথের সাহসী সৈনিক। ১৯৪৮ থেকেই পূর্ব বাংলার গণতন্ত্রকামী মানুষের অধিকার দমনে পাকিস্তানি শাসকদের দমননীতি ক্রমশ প্রচণ্ড হয়ে ওঠে । ৫০-এর দশকের প্রথম পাদেই গ্রেফতার হন আবু ইসলাম কিছুদিন আত্মগােপন থাকার পর । অতঃপর কারাগার থেকেই পরীক্ষা দিয়ে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাস (১৯৫৬)। মুক্তি পাবার পর আজিজুল হক কলেজ থেকে বি.এ. (১৯৫৮) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.বি. (১৯৬০)। ১৯৬১ সাল থেকে বগুড়ার আদালতে আইন ব্যবসায় নিয়ােজিত। তাঁর জীবনের শেষ যুগ কেটেছে কানাডার টরটোতে সপরিবারে প্রবাসে । শুরু করেছিলেন নতুন করে অধ্যয়ন ও লেখালেখি । কিন্তু ঘাতক ক্যান্সার তার লেখালেখির পরিকল্পনা সমাপ্ত করতে দেয়নি। তবুও। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে আশা করতেন, পৃথিবী একদিন শােষণমুক্ত হবে; মানুষ হবে দীর্ঘজীবী।