লোকসাহিত্যের শিকড় জাতীয় জীবনের গভীরে প্রোথিত। তাই লোকসাহিত্যে যে কোনো ঐতিহ্যময় জাতির মর্মলোক যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়ে থাকে। এ সাহিত্য যেমন সমৃদ্ধ তেমনি এর শাখা-প্রশাখাও বৈচিত্র্যময়। লোকসাহিত্যের অন্যতম শাখা হলো প্রবাদ-প্রবচন।' শ্রেণিগত দিক থেকে প্রবাদ Formalised Folklore এর অন্তর্ভূক্ত। এটি লোকসাহিত্যের অন্যতম প্রাচীন শাখাও বটে। দেশে দেশে প্রবাদের প্রচলন দেখা যায়। এর সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো- সংক্ষিপ্ততা, সরলতা, অলঙ্কার, প্রাচীনত্ব ও সত্যতা। আশুতোষ ভট্টাচার্যের ভাষায়: “...প্রবাদ গোষ্ঠীজীবনের অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ততম সরস অভিব্যক্তি।" অবশ্য জীবনের প্রায় 8 সব ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক অভিজ্ঞতা প্রবাদের অবলম্বন হতে পারে। এ সম্পর্কে প্রবাদ বিশেষজ্ঞ সুশীলকুমার দে'র অভিমত: "প্রবাদ-বাক্যের যেরূপেই উৎপত্তি হউক না কেন, ইহা জাতির জীবনের প্রায় সমুদয় স্তরই ব্যাপ্ত করে।"" লোকসাহিত্যের অন্যান্য শাখার মতো প্রবাদ-প্রবচন বংশ পরম্পরায় বহমান। সুতরাং প্রবাদ কালিক যেমন তেমনি তা কালোত্তীর্ণও বটে। আবার গোষ্ঠীজীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত বলে প্রবাদে অজস্র মানুষের অভিজ্ঞতাজাত সত্য প্রতিফলিত হয়ে থাকে।