তীক্ষ্ণ ঠাণ্ডা আলোয় তখনো তারারা ভাস্বর, কিন্তু ইতিমধ্যেই পূর্বাকাশ সকালের ক্ষীণ আভায় উদ্ভাসিত। ঝাপসা আলোয় গাছপালা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। হঠাৎ দমকা তাজা হাওয়ায় গাছের মাথাগুলো নড়ে উঠল, সমস্ত বন ভরে গেল উচ্চকিত, প্রতিধ্বনিমুখর শব্দে। বহু প্রাচীন পাইনগাছগুলো উৎকণ্ঠিত মৃদুস্বরে ফিসফিস করে পরস্পরকে ডাকল, বিচলিত শাখা থেকে শুকনো গুঁড়ো গুঁড়ো বরফ ঝরে পড়ল ঝরঝর করে।br হঠাৎ-আসা হাওয়া হঠাৎ থেমে গেল। গাছগুলো আবার ঘনীভূত জড়তায় আচ্ছন্ন। আর তারপরেই ভোরের সূচনা করে বনের নানা শব্দ ভেঙে পড়ল; কাছের খোলা জায়গায় নেকড়ের ক্ষুধিত গর্জন, শেয়ালের সতর্ক ডাক, আর সদ্যজাগ্রত কাঠঠোকরার প্রথম অনিশ্চিত ঠকঠক, নিস্তব্ধ বনে এত সুরেলা সে শব্দ যে মনে হয় পাখিটা বেহালায় টোকা দিচ্ছে, গাছের গুঁড়িতে নয়।br আবার ভারি ভারি পাইনের মাথায় দমকা হাওয়া। ক্রমশ উজ্জ্বল হয়ে ওঠা আকাশে শেষ তারা কটি আস্তে আস্তে নিভে গেল; মনে হল আকাশ ছোট আর ঘন হয়ে এসেছে। রাতের বিষণ্ণ অন্ধকারের রেশ ঝেড়ে ফেলে সজীব সবুজ মহিমায় সমস্ত বন জাগ্রত। পাইনের কোঁকড়া মাথায়, ফারের ঋজু পাতলা শাখায় গোলাপি রঙ থেকে বোঝা যায় সূর্য উঠেছে আর দিনটি হবে উজ্জ্বল, ঝরঝরে আর হিমশীতল।