"প্রবোধকুমার সান্যাল শতবার্ষিকী সংকলন" বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: প্রবােধকুমারের সাহিত্যজীবন শুরু ১৯২৩ সালে। তখন তার বয়স আঠারাে। কল্লোল-কালিকলম-ধূপছায়া-উত্তরায় বেরিয়েছে তাঁর প্রথম পর্বের গল্প। প্রবােধকুমারের উপন্যাসের সঙ্গে ছােটগল্পের পার্থক্য আছে। উপন্যাসে তিনি সাধারণত বড় ক্যানভাস ব্যবহার করেন, সেখানে মানুষের সােমিও-স্পিরিচুয়াল পরিচয়। এই জিজ্ঞাসা নিয়ে প্রবােধকুমারের উপন্যাসের নায়ক নায়িকা পথে বার হয়, যাকে বলতে পারি ‘স্পিরিচুয়াল কোয়েস্ট’, যার সর্বোত্তম নিদর্শন মহাপ্রস্থানের পথে। ছােটগল্পে অভিজ্ঞতার বিস্তার যেমন আছে, তেমনি আছে প্রখর বাস্তবতাবােধ। গল্প লেখার গল্প’ বলতে গিয়ে তিনি লেখেন, ‘পথেঘাটে গল্প খুঁজে বেড়িয়েছি—স্টিমারঘাটে, চটকলের ধারে, রেলস্টেশনে, বিদেশে, ধর্মশালায়, মফস্সলে ওয়েটিং রুমে, তীর্থপথের মেলায়। আমি লিখতুম মজুর, জেলে, রাজমিস্ত্রি, গাড়ােয়ান, মুদি, ফড়ে—এইসব চরিত্র নিয়ে। কারণ তাদের জীবনযাত্রাটা চোখে দেখতুম। তাদের নিয়ে গল্পের ইন্দ্রজাল সহজেই বুনতে পারতুম। কোথাও অনাচার ঘটল, কেউ বিনা রােগে মারা গেল, কেউ অহেতুক অপমানে নুয়ে পড়ল—অমনি আমার গল্প লেখা শুরু। | প্রবােধকুমার সান্যালের ভ্রমণ-কাহিনী তাে বটেই, তাঁর উপন্যাস, ছােটগল্প সবই অভিজ্ঞতাভিত্তিক। সেই অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলেছে তার জীবনভাবনা। প্রবােধকুমারকে জানতে হলে তাঁর উপন্যাস, ছােটগল্প যেমন পড়তে হবে, তেমনি পড়তে হবে আত্মস্মৃতিমূলক রচনা।