পর্দা শব্দের আভিধানিক অর্থ হল, আবরণ বা কোন কিছু ঢেকে রাখা। কোন কিছুকে দূষণমুক্ত/বিপদমুক্ত রাখা। যেমন- বলা হয় খাবারটি ঢেকে রাখো; এখানে ঢেকে রাখাটাই পর্দা। ইংরেজীতে বলা হয় Cove ring of any thing; Commit adultery same as, Inner etc আরবীতে বলা হয় حِجَابُ পর্দা, বোরকা (পর্দা করার পোশাক)। গাল্লাল্লাহু ইসলামী শরী'আতের পরিভাষায় আল্লাহ প্রদত্ত হুকুম ও রাসূল এর সুন্নত ওয়াসাল্লাম অনুযায়ী নারী পুরুষের দেখা শুনা, ওঠা-বসা ও চলাফেরার নামই হল পর্দা; পরপুরুষকে পরনারী থেকে এবং পরনারী পরপুরুষ থেকে দূরে সরে রাখার নাম পর্দা; নারী ও পুরুষের 'সতর' ঢেকে রাখার নাম পর্দা; গায়রে মাহরাম থেকে নিজেকে হেফাজত করার নাম পর্দা; পোশাক ও আবরণের মাধ্যমে পবিত্র জীবন-যাপনের নামই হল পর্দা। সুতরাং বলা যেতে পারে, নারী-পুরুষের সতীত্ব ও মর্যাদা রক্ষার্থে আবরণ বিশেষ শরঈ পদ্ধতি অবলম্বন করার নামই হল পর্দা। পরপুরুষ থেকে নারীর শরীরকে নিরাপদ রাখার জন্য নারীর শরীর ঢেকে রাখা ও দৃষ্টির হেফাজত করার নাম পর্দা। এককথায় পর পুরুষকে নারীর সৌন্দর্য না দেখানোর জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, তাই পর্দা। এ পর্দাকে এক শ্রেণীর জ্ঞান পাপীরা বন্দিত্ব বা নারীকে চার দেয়ালের ভিতর গৃহবন্দী করে রাখা ইত্যাদি অশালীন শব্দে কটাক্ষ করে। তাদের নিকট এ পর্দা চরম সমালোচনার বিষয়। তাদের মতে পর্দা প্রাচীনকালের গোঁড়ামী, প্রগতী ও উন্নতির অন্তরায়। বস্তুতঃ তারা যথেচ্ছা অবাধ যৌনাচার, বিজ্ঞাপনে নারীর মাংসল দেহ প্রদর্শন, সর্বত্র নারীকে ভোগের সামগ্রী বানিয়ে তাদের দ্বারা ফায়দা লুটতে চায়। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে পর্দা হচ্ছে বিশেষ আমল, পোশাক ও আবরণের মাধ্যমে বিশুদ্ধ ও পবিত্র জীবন পদ্ধতি। বর্তমান যুগে পর্দা একটি সামাজিক ভদ্রতার প্রতীক ও অভিজাত্যের পরিচায়ক। সামাজিক প্রেক্ষাপটে এটি একটি বহুল আলোচিত বিষয়, যা খাঁটি মুসলমানদের নিকট অত্যন্ত মর্যাদার বস্তু। তারা চান মানুষ পর্দার মাধ্যমে আল্লাহ-রাসূল প্রদত্ত বিধান মেনে পশুত্বকে বাদ দিয়ে সৃষ্টির সেরা হিসাবে বেঁচে থাকতে। আবহমান কালের এ অলঙ্ঘনীয় বিধান বজায় রেখে সমাজ জীবনের ভীতকে মজবুত করতে। পারিবারিক বন্ধনকে করতে চান আরও সুদৃঢ়।