রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ওবেসিটি নিজে চোখে না দেখলে এরকম ঘটনা বিশ্বাস করা বেশ কঠিন। বেশি নয়, মাত্র ঘণ্টা খানেক কাটিয়ে ছিলাম এক ডাক্তারের চেম্বারে। তার মধ্যেই দেখা হল দুজনের সঙ্গে। প্রথম জন পুষ্পিতা মিশ্র। বয়স ৪০, উচ্চতা ৫'-৪"। এই মুহূর্তে ওজন ৯৫ কেজি, রক্তচাপ ১৩০/৯০। মাস ছয়েক আগে প্রথম যখন ডাক্তার দেখাতে আসেন ওঁর ওজন ছিল ১১০ কেজি, রক্তচাপ ১৯৫/১১৫। বিটা ব্লকার এবং ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার গোত্রের দুটি ওষুধ দেন ডাক্তার। সঙ্গে কিছু বিধিনিষেধ, ওজন কমানোর নির্দেশ। ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ কমে কিন্তু দেখা দেয় মানসিক অবসাদ, ক্লান্তি, মাথাঘোরা। ফলে আবার ডাক্তার। এবং বেশ কিছু ওষুধ। এবারের দুর্বলতা আগের থেকেও বেশি। ফলে যা হয়, ওষুধ বন্ধ করে দেয় পুষ্পিতা। এবং রক্তচাপ উঠে যায় ২০০-র উপরে। আর ছেলেখেলা নয়। কড়া নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন ডাক্তার। খাওয়াদাওয়া নিক্তির মাপে, সকালে নিয়ম করে ২ কিলোমিটার হাঁটা, ওষুধ। চার মাসে ওজন কমছে ১০ কেজি। রক্তচাপ প্রায় স্বাভাবিক। ডাক্তারের মতে ওজন ৬৫-৭০ এর মধ্যে চলে এলে ওষুধপত্রের প্রয়োজন অনেক কমে যাবে। বা আর নাও লাগতে পারে। দ্বিতীয় রোগী চন্দ্রচূড় ব্যানার্জি, বেশ কিছুদিন আই সি সি ইউ-তে কাটিয়ে এখন এসেছেন রুটিন চেক আপে। ওষুধ পত্রের প্রভাবে রক্তচাপ, সুগার এবং কোলেস্টেরল আপাতত ঠিকঠাক হলেও নাড়ির গতি এখনও বেশি। ওজন তো স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৩০ কেজি বেশি। এঁরও প্রেসক্রিপশন দেখলাম হল পুষ্পিতারই ঢংয়ে। খাওয়া-দাওয়ার নিয়ম, মর্নিংওয়াক, ওষুধ। ৬ মাসে ১৫ কেজি কমাতেই হবে। না হলে আবার হার্টঅ্যাটাক হতে পারে। দেখেশুনে মনে হল রক্তচাপ কমাতে, হার্টঅ্যাটাক ঠেকাতে ওজন কমানোই বুঝি একমাত্র রাস্তা। সঠিক তথ্য জানতে গেলাম ডাঃ অবনী রায়চৌধুরী-র কাছে।