"লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী "বইটির ১ম ফ্লাপের কিছু কথা: হাজার বছর আগে আমাদের প্রথম প্রধান কবি, কাহ্নপাদ, বলেছিলেন :নগর বাহিরে ডােম্বি তােহােরি কুড়িআ । তাঁর মতাে কবিতা লিখেছিলেন আরাে অনেক কবি। তাঁদের নামগুলাে আজ রহস্যের মতাে লাগে : লুইপা, কুক্কুরীপা, বিরুআপা, ভুসুকুপা, শবরপার মতাে সুদূর রহস্যময় ওই কবিদের নাম। তারপর কেটে গেছে। হাজার বছর, দেখা দিয়েছেন অজস্র কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, গল্পকার। তাঁরা সবাই মিলে সৃষ্টি করেছেন আমাদের অসাধারণ বাঙলা সাহিত্য। বাঙলা সাহিত্য চিরকাল একরকম থাকে নি, কালে কালে বদল ঘটেছে তার রূপের, তার হৃদয়ের। সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন সৌন্দর্য। মধ্যযুগে কবিরা লিখেছেন পদাবলি, লিখেছেন মঙ্গলকাব্য। উনিশশতকে বাঙলা সাহিত্য হয়ে ওঠে অপরূপ অভিনব। তখন কবিতায় ভরপুর বাঙলা সাহিত্যে দেখা দেয় গদ্য, বাঙলা সাহিত্য হয়ে ওঠে। ব্যাপক ও বিশ্বসাহিত্য। বিশশতকের বাঙলা সাহিত্যের শােভার কোনাে শেষ নেই। বাঙলা সাহিত্যের অনেক। ইতিহাস লেখা হয়েছে, আর কবি হুমায়ুন আজাদ বাঙলা সাহিত্য নিয়ে লিখেছেন লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী, যা শুধু বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাস নয়, এটি নিজেই এক সাহিত্য সৃষ্টি। কবি হুমায়ুন আজাদ হাজার বছরের বাঙলা সাহিত্যকে তুলে ধরেছেন কবিতার মতাে, জ্বেলে দিয়েছেন বাঙলা সাহিত্যের । নানান রঙের দীপাবলি। এ-বই কিশােরকিশােরীদের তরুণতরুণীদের জন্যে লেখা, তারা সুখ পেয়ে আসছে এ-বই পড়ে, জানতে পারছে তাদের সাহিত্যের । ইতিহাস; এবং এ-বই সুখ দিয়ে আসছে বড়ােদেরও। লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী এমন বই, যার সঙ্গী হতে পারে ছােটোরা, বড়ােরা, যারা । ভালােবাসে বাঙলা সাহিত্যকে। বাঙলার প্রতিটি ঘরে আলাে দিতে পারে এ-বই।
Title
লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী - হার্ডকভার
প্রচলিত ধ্যানধারণার বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত অভীষ্ট এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার মাধ্যমে ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারের বিরুদ্ধে কলম তুলে নিয়ে বিশেষভাবে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ। প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক এই লেখক একাধারে ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, সমালোচক, গবেষক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার, ভাষাবিজ্ঞানী এবং অধ্যাপক। বাবা-মায়ের বড় সন্তান হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব ও কৈশোর কাটে রাঢ়িখাল গ্রামে, যার কথা পরবর্তীতে তাঁর বিভিন্ন সাহিত্যকর্মে উঠে এসেছে। ম্যাট্রিকুলেশন ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। এখান থেকেই তিনি বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। হুমায়ুন আজাদ এর বই সমূহ নারীবাদকে তুলে ধরেছে ও ধর্মীয় মৌলবাদের প্রবল বিরোধিতা করেছে, যার ফলে তিনি একশ্রেণীর মানুষের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিলেন। হুমায়ুন আজাদ এর বই এর মধ্যে 'পাক সার জমিন সাদ বাদ', 'সব কিছু ভেঙে পড়ে', 'ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল' ইত্যাদি উপন্যাস ও 'অলৌকিক স্টিমার', 'জ্বলো চিতাবাঘ', 'কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু' ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ উল্লেখযোগ্য। হুমায়ুন আজাদ এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'নারী' প্রবন্ধটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যা একসময় নিষিদ্ধ হয়েছিল এই দেশে। প্রতিভাবান এই সাহিত্যিক ২০০৪ সালের ১১ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে 'বাংলা একাডেমি পুরস্কার', 'একুশে পদক' সহ আরো অনেক পুরস্কারে ভূষিত হন হুমায়ুন আজাদ।