উইলিয়াম শেক্সপিয়রের 'দি টেম্পেস্ট'-এর আশ্রয়ে ড. মুকিদ চৌধুরীর নাট্যোপন্যাস 'অচীন দ্বীপের উপাখ্যান'। এর প্রেক্ষাপটে রয়েছে ৪৮৮ খ্রিস্টপূর্ব। সেই অগ্নিগর্ভ সময়প্রবাহ, যা হতে চেয়েছিল বাঙালির দেশজয়ের সময়। কিন্তু এরই মধ্যে এল ষড়যন্ত্র। প্রাচ্য-গঙ্গার অঙ্গরাজ্য রাঢ়ের জমিদার বিজয় সিংহের বিরুদ্ধে শুরু হল রাজনৈতিক তাণ্ডবময় পরিবেশ। প্রাচ্য-গঙ্গার মহারাজাধিরাজ উগ্রসৈন্য, যুবরাজ সুখময়সৈন্য, রাজভ্রাতা দয়ালসৈন্য, রাঢ় অঙ্গরাজ্য প্রধান সুমিত্র সিংহ চলে গেলেন তার বিরুদ্ধে। তিনি তার কন্যাকে নিয়ে নির্বাসিত হতে বাধ্য হলেন সিংহলে। এই আকস্মিক ঘটনা কীভাবে তার চোখ খুলে দেয়, ক্রমশ তাকে টেনে নিয়ে যায় বাঙলাত্মার অন্তঃমূল অবধি- তাই নিয়েই 'অচীন দ্বীপের উপাখ্যান'। এতে স্থান করে নেয় রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নমুখিতা ও অন্তর্দ্বন্দ্ব, প্রাচ্য-গঙ্গার রাজকুমার ও রাঢ়ের জমিদার কন্যার প্রেমের রহস্য ও জটিলতা- এরই মধ্য-দিয়ে উন্মেচিত হয় বিশাল বিশ্ব-সমাজের আর্দশ ভ্রাতৃবোধ, সময় গ্রন্থি এবং সমাজের অন্তস্তলের ইতিবৃত্তি। শুধু বিপ্লব-ভাবনা ও প্রেমেরই নয়, আত্মত্রাগেরও নতুন এক অর্থ এই অসামান্য উপাখ্যানে, যেখানে আত্মত্যাগ আত্মজনকেও ত্যাগ।